সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩

নতুন বছরে গোপালগঞ্জে গোলাপী রঙের গোলাপ ফুটুক।

চাইতেই পারতাম, আমার বউ যেন নতুন বছরে আমার প্রাক্তন বান্ধবীদের সাথে রাগ-ঝগড়া-খিটিমিটি মিটিয়ে ফেলে তাদের চা-ডালপুরি খাওয়ার দাওয়াত দেয়।  

চাইতেই পারতাম, নতুন বছরে আমার ভুলোমনা-দুষ্টু ক্লায়েন্টরা যেন মেঘ না চাইতেই জল দেয়ার মতো করে প্রায় ভুলে যেতে বসা পেমেন্টগুলা ইন্টারেস্ট-সমেত দিয়ে দেয়।  

চাইতেই পারতাম, হাজার বার্গার, কোক, আইসক্রিম, কাচ্চি খাওয়ার পরও যেন নতুন বছরে আমার ওজন ২০/২৫ কেজি কমে যায়।  

একদা এক মুরুব্বী বলেছিলেন "যাতে শুধু নিজের লাভ হয়, তা চাইবি না। যাতে সব মানুষের উপকার হয়, তা চাইবি। ঈশ্বর ত্যাগ পছন্দ করেন।"

নেন মুরুব্বী, আপনার কথা শুনলাম। অনেক বড় ত্যাগ করলাম। বউ'এর সাথে বান্ধবীদের ডালপুরি মিটিং চাইলাম না। চাইলাম না ওজন কমা। চাইলাম না ইন্টারেস্ট (শুধু আসলটা দিলেই হবে)। 

বরং, অন্তরের অন্তস্থল থেকে চাইলাম, আমাদের দুই নেত্রী যেন নতুন বছরে রাগ-ঝগড়া-খিটিমিটি মিটিয়ে ফেলে যেকোনো  উসিলায় একসাথে বসেন, সামনা-সামনি হাসিমুখে কথা বলেন, চা-ডালপুরি খান।  

নতুন বছরে গোপালগঞ্জে গোলাপী রঙের গোলাপ ফুটুক। 

হ্যাপি নিউ ইয়ার।

[এবার একটু আগেভাগেই উইশ করে ফেললাম। বলা তো যায় না, হঠাত যদি সামনে বালুর ট্রাক নষ্ট হয়ে যায়, তখন তো স্টেটাসটাও আটকে যাবে।]

শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

টি-২০ বিশ্বকাপ

২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হবে - এই খবর জানার পর থেকে ব্রাজিলের সরকার থেকে শুরু করে প্রতিটা মানুষের ধ্যানে-জ্ঞানে একটা জিনিষই কাজ করেছে - যেভাবেই হোক, বিশ্বকাপের আয়োজনটাকে সেইরকম সাকসেসফুল করতে হবে।  এটা তারা সবাই জানে যে এমন একটা ইভেন্ট একটা দেশকে তার সব ভালো-ভালো দিকগুলি পুরা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সাহায্য করে।  ভালো মত আয়োজন করতে পারলে এমন একটা ইভেন্ট একটা দেশের অর্থনৈতিক সিনারিও'ই পাল্টে দিতে পারে। 

আর মাত্র ৩ মাস পর বাংলাদেশে টি-২০ বিশ্বকাপ। স্বাধীনতার পর এত বড় কোনো আন্তর্জাতিক ইভেন্টের একক হোস্ট বাংলাদেশ আগে কখনো হয়নি। আইসিসিই বলুন আর অংশগ্রহণকারী দেশগুলির ক্রিকেট বোর্ডগুলির কথাই বলুন - সবার নজর কিন্তু এখন আমাদের দেশের দিকে থাকাটাই স্বাভাবিক। 

আর কি সুন্দর ভাবেই না আমরা আমাদের চরিত্রটা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরছি, তাই না? এই অবস্থার ফলাফল হিসেবে ক্রিকেটের এত বড় একটা আসর যদি আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দেশে চলে যায় - কত্ত ভালো হবে, তাই না? 

জানি, এজন্য কেউ দোষ দিবেন সরকারী দলকে, কেউ দিবেন বিরোধী দলকে; আবার অনেক জ্ঞানী-গুনিজনরা দোষ চাপাবেন ভারত-শাসিত-আইসিসির উপর।  

লাভ কি ভাই দোষ চাপিয়ে। কার দোষে ন্যাংটা হলেন, সেটা ভেবে কি লাভ? দুনিয়া যে আপনার নাঙ্গা পাছু'টা দেখে ফেললো, সেটা কি ভালো হলো? 

কাল আমাদের আনুগত্য প্রকাশের দিন।

আমার ঢাকার বাইরে থাকা বন্ধুদের মুখে শুনলাম, কাল নাকি তাদের "এসপারে" অথবা "ওসপারে" হাজিরা দিতে হবে। কাল যারা ঢাকায় আসার আহবানে সাড়া না দিয়ে নিজ নিজ কাজের বা পড়াশোনার জায়গায় হাজিরা দিবে, তারা চিরতরে আওয়ামীলীগের পতাকাতলে আশ্রয় পাবে। আর যারা কাল ঢাকায় এসে হাজিরা দিতে পারবে তারা আজীবন বিএনপি'র ছত্রছায়ায় চলে আসবে।

নো ঘরে বসে মা-বউ-এর আঁচলে মুখ লুকিয়ে থাকা। নো মাঝামাঝি অবস্থান। হয় এসপার, নয় ওসপার।

ন্যাংটা না হয়ে যাবি কোই এইবার? 

কাল প্রভুদের ক্ষমতা প্রদর্শনের দিন।

কাল আমাদের আনুগত্য প্রকাশের দিন।  

ইনশাল্লাহ, কাল আমরা আম-জনতা, হয় এইদলের গুন্ডা নাহয় নাহয় ঐদলের পান্ডার সামনে দাঁড়িয়ে, পাছুর কাপড় তুলে, উপুত হয়ে বলবো - "জাহাপনা, তুসি গ্রেট হো, তোফা কবুল করো।"  

আলো ফুটবেই

আমি যাচ্ছি মিছিলে 
তুমি কিসের অপেক্ষায়? 
সব দেখেও না দেখে
তুমি নিশ্চুপ কেন হায়!

আমি শুনছি নতুন গান 
তুমি কিসের বাহানায় 
সব বুঝেও না বোঝার 
এ কেমন অভিনয়? 

যতই তুমি চোখ ফিরিয়ে থাকো  
যতই তুমি মুখ লুকিয়ে রাখো 

জেনে রেখো তুমি 
আঁধার কাটবেই 
সকাল হাসবেই 

দেখে নিও তুমি 
সূর্য উঠবেই 
আলো ফুটবেই 

বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

তায়া কি পায়া ভাং গ্যায়া?

সকাল বেলা কমোডে বসে আছি আর ঘরের টিভি থেকে ভেসে আসা হিন্দি গান শুনছি; ধুম মাচালে। হঠাত বৌএর আর্ত চিত্কার, "হায় হায়, সর্বনাশ, মিল্টনের স্টেটাস দেখসো???!!!!"

আমি সিরিয়াস ভাব দিয়ে আওয়াজ দিলাম, "কিউ? ক্যায়া হুয়া?"

ইশ-ইশ-চুক-চুক শব্দ করতে করতে বউ গম্ভীর ভাবে বলল, "মিল্টন লিখসে, হি ইজ উইথ তায়া ইন এপোলো হসপিটাল, ওর ankle sprain হইসে।" (এখানে উল্লেক্ষ্য যে তায়া হলো আমার বন্ধু মিল্টনের বউ)

কি হলো বুঝলাম না।  আমার মুখ দিয়ে অটোমেটিক বের হয়ে গেল ---  "ক্যায়া? তায়া কি পায়া ভাং গ্যায়া?"

--------------------

বাথরুমের ভিতর থেকেই বৌএর রক্তচক্ষুর গরম আমি ঠিকই টের পাইলাম। 

---------------------

তায়া, তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো ভায়া। আজকে তোমার পায়া ভাঙ্গার কারণে তোমার বেহায়া জামাই আড্ডায় আসতে পারছে না বলে আমার সত্যিই বড় মায়া হচ্ছে। (ইশ-ইশ-চুক-চুক শব্দ)

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

তবে কি এক জীবনে এই আমাকে এত্ত ভালোবাসতি?

যদি না সেই বিকালে মনের ভুলে  
আমার কাছে আসতি,
যদি না আমার আজব 
আজব কথায় হাসতি, 
যদি না বোকার মত 
বিয়ের জালে ফাঁসতি, 
তবে কি এক জীবনে
এই আমাকে এত্ত ভালোবাসতি? 

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

১২ বছর

"রাজীব, তুই শিওর তো?"
"মানে কি? এই টাইমে এইটা কেমন কোয়েশ্চেন?"
"তুই বুঝতে পারছিস না। আমার মনে হচ্ছে আমি ভুল করতে যাচ্ছি। আমি মোটামুটি শিওর যে তোরে বিয়ে করে আমি বিগটাইম ধরা খাবো।"
"আজব রে ভাই, এই কথা তোর আজকে মাথায় আসলো? আজকে তোর হলুদ রে ভাই। পরশু তোর-আমার বিয়া!"
"হারামজাদা, তুই বিয়া মানে বুঝোস?"
"আমি ক্যামনে বুঝবো? আমার বিয়ার বয়স হইসে নাকি?"
"তাইলে বিয়ে করতেসোস ক্যান?"
"আরে, আজব তো! তোর তো বিয়ের বয়স হইসে। আমি না করলে তো অন্য কেউ তোরে বিয়ে করে ফেলবে। তখন তো কানতে কানতে মরবি।"
"ফর হেভেনস সেক রাজীব, প্লিজ সিরিয়াস হ। এখনো টাইম আছে। চল বাদ দেই। বিয়ে করে পস্তানোর চেয়ে বিয়ের আগে সীন ক্রিয়েট করে সব ক্যানসেল করা ভালো।"
"জোশ তো! বাসায় যা, গিয়া তোর বাপ-মা'রে বল, তোর ভুল হইসে। তুই আমারে বিয়া করবি না। আবার যেন তোর জন্য বুইড়া পাত্র দেখা শুরু করে।"
"অসহ্য। তুই আসলেই ইম্পসিবল। আমি লিখে দিতে পারি, তোর সাথে কোনো মেয়ে এক সপ্তাহও টিকতে পারবে না। "

.........................

এই মিটিংটা হয় পূনমের গায়ে হলুদের দিন সকালে; হাতিরপুল বাজারের উল্টাদিকে হার্টথ্রব নামক একটা ফাস্টফুডের দোকানে। 

ঐদিন বিকালে পূনমের হলুদ অনুষ্ঠিত হয়।  
তার দুইদিন পর মহাসমারহে আমাদের বিয়ে হয়।  

বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার সময়ও গাড়িতে ঢেশকি তুলে কাঁদতে কাঁদতে পূনম বলছিল, "৭ দিনের বেশি তোর সাথে টিকতে পারলে ফকির খাওয়াবো।"

.................................................

শুভ যুগপূর্তি পূনম। ফকির কিন্তু এখনো খাওয়াস নাই, অথচ ১২ বছর ঠিকই কাটিয়ে দিলি আমার সাথে!

তোর জাজমেন্ট যে কতটা ফাউল, এখন বুজ্ছোস?



বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

পরকিয়ার কারণ

ব্রেকিং নিউজ - পরকিয়ার কারণ হিসেবে লা-লিগা এবং প্রিমিয়ার লিগ'কে পেছনে ফেলল মধ্যরাতের টকশো: 
-----------------------------------------------------------------------------------------------


রাত দেড়টা, মধ্য-বাড্ডা: 

ফয়সাল সাহেবের চোখ টিভি স্ক্রিনের পর্দায় সুপার গ্লু দিয়ে আটকানো। কোলের উপর রাখা বালিশে মহাউত্সাহে থাবড়া মারছেন আর ক্ষণে ক্ষণে বিড়বিড় করছেন - "সাব্বাশ ব্যাটা, জটিল কইসোস" বা "চান্দু, এইবার কি বলবা? গেসে এইবার থোতা মুখ ভোতা হয়ে..."

তিনি টক-শো দেখছেন। 

ফয়সাল সাহেবের স্ত্রী ফারিয়া মাঝে মাঝে বিরক্ত মুখে হাসব্যান্ড'এর দিকে তাকাচ্ছেন। এবং ফেইসবুক গুতাগুতি করেছেন। 

রাত দেড়টা, মোহাম্মদপুর। তাজমহল রোড: 

আরাফাত সাহেবের মেজাজ চরম খারাপ। ম্যান-ইউ ভার্সাস চেলসির খেলা দেখতে পারছেন না স্ত্রী সোনিয়ার কারণে। তিনি গোলাম মাওলা রনি এবং আন্দালিব পার্থর টক শো দেখছেন। এবং কিছুক্ষণ পরপর মুখ চোক্ষা করে "অঅঅঅ, কি কিউট না লোকটা !!!" টাইপ মন্তব্য করছেন। তার নিরবিচ্ছিন্ন মনোযোগে বিন্ধুমাত্র চিড় ধরাতে পারছে না আরাফাত সাহেবের খেলা দেখতে না পারার অব্যক্ত বেদনা :(  

অসহায় আরাফাত আর কি করবেন? ফেইসবুক গুতাগুতি করতে শুরু করলেন। 

ফলাফল: 

এভাবে প্রতি রাতে অসংখ্য ফারিয়া'র সাথে অসংখ্য আরাফাতের অনলাইনে যোগাযোগ হচ্ছে। দুই পক্ষের হতাশা আর না পাওয়ার কষ্ট যেহেতু এক, তাই তাদের মধ্যে দ্রুত জন্ম নিচ্ছে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে প্রণয়, তথাপি পরকিয়ার সূত্রপাত হতেও সময় বেশি লাগছে না।  

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিএনপি বা আওয়ামীলীগের পোস্ট-মর্টেম সম্বলিত এসব টক-শো'র কারনে পরকিয়া প্রেম যে হারে বাড়ছে, তা পূর্বের রেকর্ড "লা-লিগা বা প্রিমিয়ার লীগ'এর কারণে পরকিয়া প্রেম"এর চেয়ে শতগুন বেশি। 


বিশেষজ্ঞদের মতামত: 

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ব্যাপারটাকে পজিটিভলি দেখছেন। তাদের দৃষ্টিতে, দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে টক-শো'গুলির এই নিঃস্বার্থ ভূমিকার জন্যে তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা উচিত। 

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

মেরা আপনা খুন থা।"

বাঘের ধাওয়া খেয়ে কুকুরের দল লেজ গুটিয়ে পালালো। 

কুকুর-রাজ জরুরি সভা তলব করলো: "উস বাঘ মুল্লুক'কো এক জবরদস্ত শিক্ষা দেনা হোগা। কুছ প্ল্যান বাতাও।"
কুকুরদের ক্রিয়েটিভ হেড মাথা চুলকে বললো: "হুজুর, বাঘ মুল্লুক মে হামারা বেস্ট কুত্তে'কো ভেজ দেতে হ্যায়। টাইম আনে পার হামারা কুত্তা বাঘ'কো মার দে গা। "
কুকুর-রাজ: "ওয়াহ! কেয়া প্ল্যান হ্যায়। মারহাবা। লেকিন, হামারা বেস্ট কুত্তা কউন হ্যায়?"
ক্রিয়েটিভ হেড: "হুজুর, আপ তো জানতে হ্যায়, হামারা বেস্ট কুত্তা আপকা বেটা হি হ্যায়। হি ইজ দা বেস্ট। হি ইজ আওয়ার সুপার-ডগ।"
কুকুর-রাজ: "নেহিইইইই, ইয়ে কেয়া বোলতা হ্যায়। উও তো মেরা বেটা হ্যায়। উসকো ম্যায় নেহি ভেজুঙ্গা। আগার উসে কুছ হো গেয়া তো মেরা কেয়া হোগা?" 
ক্রিয়েটিভ হেড: "নেহি হোগা হুজুর। বাঘ মুল্লুক মে হামারা কুছ কুত্তালোগ ভি হ্যায়। উও হামারা প্রিন্স'কো দেখভাল করেঙ্গে।"

কুকুর-রাজ রাজি হয়।  কুকুর-রাজপুত্র নেড়ি-কুকুরের ছদ্মবেশে বাঘ-মুল্লুকে প্রবেশ করে এবং ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে থাকে, কবে সে বাঘদের মওকা মত পাবে।

কিন্তু বিধি বাম।  কুকুরের স্বভাব কি বদলানো এত সোজা? পাকনামি করতে গিয়ে একদিন ঠিকই ধরা পরে যায় বাঘবাহিনীর হাতে। বিচার হয়, ঝুলিয়ে দেয়া হয় ফাঁসিতে। বাঘ-সমাজ মনে করে, যাক... একটা ছিচ্কে কুকুর তো সাজা পেল ... 

কিন্তু... ঘটনা তো এখানেই শেষ না।  কুকুর-মুল্লুকে তো তখন মাতম উঠেছে। হায় হায় রব, হাম তো লুট গ্যায়ে, বরবাদ হো গ্যায়ে...

বাঘ'রা তো কিছু বুঝতে পারছে না! সবার মনে একই প্রশ্ন, সামান্য একটা নেড়ি-কুকুরের জন্য কুকুর-মুল্লুক এমন আবেগে কাইন্দালাইতেসে ক্যান? 
.
.
.
.
এই প্রশ্নের জবাব কুকুর-রাজ ক্যামনে দিবে বলেন?
বেচারা তো আর চিক্কুর পাইরা কইতে পারে না - "মোল্লা কোয়ী মামুলি কুত্তা নেহি থা রে, উও মেরা বেটা থা।  মেরা আপনা খুন থা।"  

সাময়িক বিচ্ছেদ

আরিফ সাহেবের সাথে একটা সাময়িক বিচ্ছেদ অবস্বম্ভাবী হয়ে উঠেছে।

কিছুদিন আগ পর্যন্ত কোথাও গেলে মানুষ জিজ্ঞেস করতো, "ভাবী আসেনাই ভাইয়া?", "আপু কেমন আছে?" ইত্যাদি ইত্যাদি।

এখন যেখানেই যাই, শুনি "আরিফ ভাই আসবে না ভাইয়া?", "আরিফ ভাই কেমন আছে?" ... 

লক্ষণ তো ভালো ঠেকছে না।  সময় খারাপ।

তফাৎ মেইনটেইন করা অতিব জরুরি। 

সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

জয়তু বিডিসাইক্লিস্ট, জয়তু বাংলাদেশ !

প্রধানমন্ত্রীর অফিস। সকাল ৯:৩০... 

প্রধানমন্ত্রীর হেড অফ সিকিউরিটির কপাল বেয়ে চিকন ঘাম বেয়ে পড়ছে। এ কি আজব টেনশন রে বাবা! .... 

প্রধানমন্ত্রী: চলো, বের হই আমরা। মিটিং ধরতে হবে না? 

হেড অফ সিকিউরিটি: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের একটু ওয়েইট করতে হবে।
  
প্রধানমন্ত্রী (একটু বিরক্ত): কেন? কি হলো আবার? রাস্তায় গ্যান্জাম নাকি?

হেড অফ সিকিউরিটি (একটু বিব্রত): না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাস্তায় সাইকেল! 

প্রধানমন্ত্রী (আরেকটু বিরক্ত): মানে কি? ১০ মিনিট আগে রাস্তা খালি করা হয়নি? আর... সাইকেল মানে কি? 

হেড অফ সিকিউরিটি (ঘাম মুছতে মুছতে): মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। হাজার হাজার সাইকেল। ১৫ মিনিট ধরে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। আরো কতক্ষণ ধরে যায়, বুঝতে পারছিনা। এত বড় মিছিল, এখন তো মাথাও দেখি না, লেজ'ও দেখিনা।  

প্রধানমন্ত্রী: বলো কী !!! এরা আবার কারা? ইসি'কে ফোন লাগাও, বিরোধীদল কি "সাইকেল" মার্কা নিয়ে ইলেকশন করতেসে নাকি? 

হেড অফ সিকিউরিটি: না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এরা কোনো পার্টি না।  সবার গায়ে লাল-সবুজ পতাকা। সবাই গান গাইতে গাইতে আর "বাংলাদেশ বাংলাদেশ" স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা কাঁপিয়ে যাচ্ছে। কি করবো? RAB-কে বলবো অ্যাকশনে নামতে? 

প্রধানমন্ত্রী (মুচকি হেসে): নাহ থাক, সবদিন তো আমার জন্য ওদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রাস্তায়; আজকে নাহয় ওদের জন্য আমি একটু দাঁড়ালাম। দেশটা তো ওদেরই, তাই না? ওরাই তো বাংলাদেশ। 



[প্রধানমন্ত্রী এবং তার হেড অফ সিকিউরিটির মধ্যেকার কথপকথনটি কাল্পনিক হলেও (যদিও অনেক সুইট), প্রধানমন্ত্রী অফিসের সামনে সাইকেলের শো-ডাউনটি ১০০% সত্যি। আজকে সকালে যারা ঢাকার রাজপথে "বিজয় রাইড"-এ ছিলেন তারা অভূতপূর্ব এই দৃশ্যের সাক্ষী। যারা দেখেননি, তারা বিশাল একটা জিনিস মিস করেই ফেলেছেন। তাদের জন্য প্রথম কমেন্টে একটা ছবি দিয়ে দিচ্ছি। মুরগি তো পাইলেন না, ঝোল'ই খান। ]

পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীতের বিশ্বরেকর্ডের চিপায় এই রাইড কিছুটা ঢাকা পড়ে গেলেও, সাইকেল-রেভলিউশনটা কিন্তু আসলেই সেইরকম-লেভেলে পৌঁছে গেছে। লিখে দিতে পারি, নেক্সট রাইডে এর ডাবল মানুষ আসবে। আর এই বিষয়ক সকল রেকর্ড ভাঙ্গা তো আমার কাছে শুধুই সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।  

জয়তু বিডিসাইক্লিস্ট, জয়তু বাংলাদেশ ! 

#BDCyclists #BijoyRide #16D

Photo Credit - Sanjay Sagor

রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

নানু

সেটাও একটা শীতের রাত ছিল। ঘন কুয়াশায় অল্প দূরের কোনকিছুও ঠিকমত দেখা যাচ্ছিল না। কুয়াশার মধ্যে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে সারি সারি গাছগুলোকে অন্য জগতের কিছু মনে হচ্ছিল। খালি পা ভিজে যাচ্ছিল ঠান্ডা শিশিরে। 

সেদিনের আগে কোনদিন আমি সূর্যাস্তের পর কবরস্থানে যাইনি। 

সেই রাতে আমি সুন্দর একটা মাটির ঘরে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছিলাম আমার সবচাইতে প্রিয় মানুষটাকে। 



প্রায় একটা বছর কেটে গেল নানুকে ছাড়া। আবার শীত এসেছে; সন্ধার পর কবরস্থান আবার ঢেকে যায় কুয়াশায়। আমার ভীষণ ভালো লাগে সেই সময়টা। ধোয়া-ধোয়া আঁধার আমাকে আবার নানুর কাছাকাছি নিয়ে যায়।  আমি আবার নানুকে ছুঁতে পারি, নানুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে পারি। আমি প্রানভরে নানুর পান-চুন-জর্দার গন্ধ নিতে পারি, নিভিয়া ক্রিম মাখা নানুর ঠান্ডা হাত আমার দুই হাতের তালুর মধ্যে চেপে ধরে বসে থাকতে পারি। 

নানুর কবরের উপরের ঘাসের বেডটা এখন অনেক সুন্দর হয়েছে। শিশিরগুলো আবছা আলোতেও চিক্চিক করে।  

যেখানে নানুর পা, সেখানকার শিশিরে হাত বুলালে। ... হাত ভিজে যায়।  

.... সাথে আমার দুই চোখও ভিজে যায়।  

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিঙ্গেল-ক্যান্ডিডেট-ওয়ালা কন্সটিটিউয়েনসি দেখে ইলেকশনে

ভাবছি, একটা সিঙ্গেল-ক্যান্ডিডেট-ওয়ালা কন্সটিটিউয়েনসি দেখে ইলেকশনে নেমে যাব কিনা। 

বুড়া বয়সে নাতি-নাতনিকে বড়াই করে বলতে পারব - "বুঝলি রে, আরেকটু হলেই এমপি হয়ে গেসিলাম। কপাল খারাপ, ইট্টুর জন্য হেরে গিয়ে সেকেন্ড হতে হইলো :("

....
....
....

অন এ ডিফারেন্ট নোট, রিস্ক নিয়ে লাভ নাই। বাই চান্স যদি জিতে যাই ! তখন এমপিগিরি করবে কে?

নির্বাচনের কোনোওওও ভরসা নাই !

[দয়া করে কেউ আবার ভাববেন না যে আমি বিষয়টা নিয়ে "ব্যঙ্গ" করছি। "ব্যঙ্গ" তো করছেন বড় বড় বস্'রা, আমি শুধু তাল দিচ্ছি]

শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

নো যাবজ্জীবন, নো উস্তাভাজি।

গোলাম মাওলা রনি'র আলোচিত "উস্তাভাজি" বিষয়ক লেখাটি নিয়ে কিছু বলতে চাই।

কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের এক লোক নাকি ভিন্ন লোক, এ নিয়ে ত্যানা অনেক প্যাচানো হয়েছে। আমি একদমই ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে একটা ব্যাপারে আমার মতামত ব্যক্ত করতে চাই। 

কাহিনী হলো - রনি সাহেবের লেখাটা পড়ে আমি ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা মৃত্যুদন্ডের বিশাল সাপোর্টার হয়ে গেছি। 



জেলখানার জীবন নিয়ে যেমন ভয়ংকর ধারণা আমার ছিল (প্রিজন ব্রেক, কন-এয়ার ইত্যাদি মুভির কল্যানে), এই লেখা পড়ে সব পাল্টে গেছে। এখন তো জেলখানা আর টিএসসি'র মধ্যে খুব একটা পার্থক্য দেখছি না।  আড্ডাবাজি হয়, রবীন্দ্রসংগীতের আসর বসে, গরুর মাংসের লাল ঝোল দিয়ে ধুয়াওঠা ভাত খাওয়া হয় - বাহ্, সিমস লাইক এ বেটার প্লেস দ্যান টিএসসি। জানতে পারলাম সেখানে নাকি ফ্রিজ'ও আছে। আরেকটু ইনভেস্টিগেট করলে শিওর মোবাইল ফোন, আইপ্যাড, এলসিডি টিভি, পিইসথ্রি ইত্যাদির খোঁজও পাওয়া যাবে। সেলেব্রিটি বন্দিরা মাঝে মাঝে সপরিবারে হাতির ঝিল বা ব্যাংককে হলিডে কাটাতে চলে যান কিনা সেটা নিয়েও একটু খোঁজ করে দেখা যেতে পারে :) 

৯০% মুক্তিযোদ্ধার পরিবারও আমি শিওর এত আরামের জীবন কাটায় না রে ভাই। বাজি লাগবেন? 

আমাদের মত গরিব দেশে, যেখানে বেশির ভাগ মানুষই ঠিকমত খেতে পায় না, সেখানে এসব জানোয়ারদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে মৌজমাস্তি করতে দেয়ার কোনো কারণ আমি সত্যিই খুঁজে পাইনা। 

রাজাকার হোক, নষ্ট পলিটিশিয়ান হোক বা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা পিকেটার --- অপরাধ প্রমানিত হলে সোজা ঝুলিয়ে দেয়া উচিত। 

নো যাবজ্জীবন, নো উস্তাভাজি। 

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩

রাজাকারেরও মানবাধিকার থাকা উচিত!

রাজাকারেরও মানবাধিকার থাকা উচিত!



একটা মানুষকে ফাঁসি দেয়ার জন্য রেডি করানো হলো। আত্মীয়-স্বজন'দের সাথে দেখা করানো হলো। শেষ বিদায় নেয়া হলো। যতদুর শুনেছি গোসল করিয়ে তওবা করানোও হলো ...

তারপর ফাঁসি পিছিয়ে দেয়া হলো!!!

মগের মুল্লুক নাকি এইটা? লোকটার মনের অবস্থাটা একবার চিন্তা করেছেন আপনারা? কোথাও যাওয়ার জন্য রেডি হওয়ার পর যদি শোনেন প্ল্যান ক্যানসেল, কেমন লাগে তখন? 

আর এইটা তো চিরবিদায়!!! মহাপ্রয়ান!!!

এই ক্ষেত্রে এমন ফাইজলামির কোনো মানে হয়? 

আকুল আবেদন, লোকটাকে আর কষ্ট না দিয়ে এখনি ঝুলিয়ে দেয়া হোক। রাজাকারটাকে আর কষ্ট না দেই আমরা। 

আর ... কাদের মোল্লার পক্ষের আইনজীবি'দের বিরুদ্ধে "মানবাধিকার লঙ্ঘন"এর মামলা দেয়া হোক। এই ব্যাপারে জাতিসংঘের মানবাধিকার উইং নিশ্চয়ই সাহায্য করবে। 

ঠিক না? 

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩

কুফাত্ব

বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার সময় আমি মাঠে যাই না, কারণ আমি মাঠে গেলে আমরা হারি। খেলার আগে বা চলাকালীন সময়ে আমি ফেইসবুকে খেলা নিয়ে কোনো স্টেটাস দেই না - অনেকবার এমন হইসে, আমরা জিতে যাচ্ছি ভেবে একটা কিছু লিখলাম, সাথে সাথে ধ্বস নামা শুরু হলো। 

চুপ করে ঘাপটি মেরে থাকি। আমরা জিতি। তারপর গলা ফাটাই - এটাই আমার ক্রিকেটপ্রেমের বহির্প্রকাশ। 

কাদের মোল্লার ফাঁসী যখন মাত্র এক ঘন্টা দূরে, তখন আমি তার ফাঁসী নিয়ে কভার পিকচার দেই। না দিলেই পারতাম - আমি যে এত বড় কুফা, বুঝতে পারিনি। আমার অতি-উত্সাহের কারণেই কি রাজাকারটার ফাঁসী আটকে গেল? 

ফাঁসী নিয়ে আর কোনো স্টেটাস দিব না; ব্যাটারে ঝুলানো না পর্যন্ত। কভার পিকচার হাইড করলাম। ব্যাটা ঝুললে তারপর ফীলিংস প্রকাশ করব। 

নিজের কুফাত্ব নিয়ে আর কোনো রিস্ক নিতে চাইনা। 

পাছু'র যেমন বিষফোঁড়া

পাছু'র যেমন বিষফোঁড়া 
আওয়ামীলীগ'এর তেমন রনি 

আমি কিন্তু আমি না

কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের এক লোক না। 
এরশাদ, জনি ডেপ আর সালমান খান আসলে এক লোক। 
বঙ্গবন্ধু আর শেখ মুজিবুর রহমান এক লোক না। 
শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়া আসলে জমজ বোন, শুধু দেখতে দুই রকম। 
গোলাম আজম ছিলেন ওসমানীর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অ্যাডভাইজার। 
অনন্ত জলিল আর সাকিব খান আসলে এক লোক। 
আমি আর রাজীব হাসান চৌধুরী এক লোক না।

আমি কিন্তু আমি না। আমার আসল নাম হইলো ...... (এটাও নাহয় আপনারাই বলেন... সব তো আপনারাই জানেন ... ) 

হইসে?
খুশি?
নাচি এইবার?  

রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

সে পাছু আবার পাছু নাকি, যে পাছু ব্যথা সইতে না পারে!

মোটামুটি ৩ সপ্তাহ সাইকেল চালানোর ব্যালেন্স শীট: 
----------------------------------------------------

উপকারিতা:

১। ফিজিক্যালি আগের থেকে অনেক ফিট লাগে। প্রথম দিকে ৫/৬ কিলোমিটার চালাতে হালুয়া টাইট হলেও এখন ২৫/৩০ কিলোমিটার কুনো ব্যাপারই না :) [রেফারেন্স: এন্ডোমোন্ডো]
২। মোটাত্ব মনে হয় কিছুটা কমেছে। প্যান্ট একটু ঢিলা হয়। আট লিস্ট আমার তাই মনে হয়। 
৩। অবরোধের কারণে যেহেতু গাড়ি বের করতে পারতাম না এবং সিএনজিতেই যাতায়াত করতে হতো, সুতরাং সিএনজি ভাড়া হিসাব করলে মিনিমাম  হাজার পাঁচেক টাকা তো অবশ্যই সেইভ করেছি।
৪। অনেকগুলি নতুন গলি চিনেছি। অনেকগুলি পুরানো গলিতে নতুন করে ঢুকে নস্টালজিক ফীলিংস পেয়েছি। 
৫। রাতে এখন সলিড ঘুম হয়। আমি এখন মরার মত ঘুমাই, অথচ আগে আমার ঘুম প্রচন্ড পাতলা ছিল। 
৬। অ্যাবসলিউট স্বাধীনতা (বিবাহিতরা বুঝবেন ইহার মর্ম)। ঘন্টাখানেকের জন্য আমি শুধুই আমার। আহা। মোবাইল ফোন না ধরলেও অব্যর্থ এক্সকিউজ: "সাইকেল চালাচ্ছিলাম বেইবি, ইউ নো - টকিং অন সেলফোন হোয়াইল সাইক্লিং ইজ ভেরি ডেঞ্জারাস।"

প্রবলেম: 

১। একা একা সাইকেল চালাতে ভাল্লাগে না। ২/১ জন বন্ধু সাথে থাকলে অবশ্য হেভি জোশ লাগে। এখনও সুন্দরী বাইকার'দের সাথে রাইড দেয়া হয়নাই। অপেক্ষায় আছি। 
২। এইটা একটা ইউনিক প্রবলেম। যারা আমার মত সুস্বাস্থের অধিকারী, তারা এটা ভালো বুঝবেন। ইন না করে ছোট ঝুলের টিশার্ট বা শার্ট পরলে পিছন থেকে কাপড় উঠে পাছুর সিঁথি দেখা যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। 
৩। সাইকেলের সীটটা বড়ই রসকষহীন; অনেক শক্ত। বেশিক্ষণ চালালে পাছুতে ব্যথা লাগে। গদি লাগানো সীট পাওয়া গেলে কিনে ফেলবো ভাবছি। 

অভিজ্ঞতালব্ধ উপদেশ:

পাছু-বিষয়ক ব্যাপারগুলিকে বেশি ইম্পর্টেন্স না দিয়ে, আমার মতে মোটা-চিকন-ব্যাঁকা-সোজা-লম্বা-খাটো সবারই সাইক্লিং শুরু করে দেয়া উচিত। 

সে পাছু আবার পাছু নাকি, যে পাছু ব্যথা সইতে না পারে!

বব মার্লে - তুমি গুরু ব্যাপক বুদ্ধিমান

বব মার্লে - তুমি গুরু ব্যাপক বুদ্ধিমান 
---------------------------------------


মাথা চাপড়াই 
গাল থাপড়াই 
দু'কলম লিখতে 
কত করি ট্রাই! 

লাভ হয় নাই; 
ম্যাডাম আর আপা নিয়ে 
কোনো কবিতাই 
যুতসই হয়নাই 

(অথচ)...

চাক্ষুষ না দেখেই, 
যন্ত্রণা না মেখেই,  
সোজা বুল্স আই !!! 
ইন পেত্থম ট্রাই !!! 

আমাগো মনের কথা 
ক্যামনে বুঝলা তুমি 
ক্যামনে লিখলা "নো
ওম্যান নো ক্রাই"

ওহে বব মার্লে
কি করে পারলে গো
কি করে পারলে???

শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

এক ফোটা কমেডি

জঘন্যরকম বাজে, নোংরা, অশ্লীল, রক্তারক্তিতে ভরপুর মারদাঙ্গাপূর্ণ এফডিসি মুভির মধ্যে এরশাদ হলো জাস্ট এক ফোটা দিলদার-টাইপ কমেডি। আর আমরা হলাম সেই সহজ-সরল কাজের বুয়া-টাইপ দর্শক যারা টিভি সেটের সামনে বসে ওই এক ফোটা কমেডি দেখেই হেসে কুটিকুটি হচ্ছি।

বাকি মুভির পঁচা গন্ধ যেন আমাদের নাকেই পৌছাচ্ছে না!!! 

[বাই দা ওয়ে, আমিও কিন্তু এই অশিক্ষিত দর্শক-কুলেরই একজন। 

মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

জীবন যেখানে পোলটিময়, নামে কি বা আসে যায়!

ছোটবেলায় ... 
"এই ছেলে, কি নাম তোর?" 
"এর-শাদ"

কিছুক্ষণ পর ...
"এই, তোর নাম যেন কি বলসিলি?"
"ওর-শাদ" 

আরো কিছুক্ষণ পর ... 
"ধুরো, তোর নামটা আবার ভুলে গেসি, কি যেন বল্সিলি?"
"তার-শাদ"
"এহ্হ, একটু আগে না অন্য নাম কইসিলি?" 
"জ্বি স্যার, একটু আগে আমি 'এর" ছিলাম, তারপর 'ওর' হইসিলাম, এখন 'তার' হইসি। 
"মাইর চিনোস? নাম আবার পাল্টায় ক্যামনে?"
"স্যার ... জীবন যেখানে পোলটিময়, নামে কি বা আসে যায়!!!"

"ফাতরামি করোস ব্যাটা। ঠিকমত নাম ক।"
"কার-শাদ লেখেন স্যার। এই মোমেন্টে যে আমি কার, সেইটা নিয়া একটু কনফিউজড আছি।" 

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৩

জয়তু টকশো

"পাইসে রেএএএ, বদমাইশটারে আজকে মাইনকাচিপায় পাইসে। আজকে শালা'রে কোপায়া ভাঁজ করে ফেল। দে দে, আরো দে, কোপা শালারে।" 
---- জ্বি না, এটি রেসলিং দেখতে থাকা কোনো উত্তেজিত দর্শকের হুঙ্কার না। 

"শিট ... এইটা তো এক্সপেক্ট করি নাই। পুরাই তো ঘটনা উল্টায়া দিল। খেলা জইমা গেসে রেএএ ... পুরাই টেনশন হয়ে গেল ... "
---- জ্বি না, এটি ক্রাইম থ্রিলার দেখে নখ কামরাতে থাকা কোনো মনোযোগী দর্শকের কমেন্ট না। 

"ওরে বাবারে, এই মহিলা তো মহা ডেঞ্জারাস। কুটনামির উপর নোবেল পুরস্কার থাকলে, এই মহিলা কনফার্ম নোবেল পাইতো। কি নাদান চেহারা, কিন্তু পেটে পেটে কি শয়তানি বুদ্ধি রে ... "
---- জ্বি না, এটি "কাহানি ঘর ঘর কি" বা "রাশি" দেখতে থাকা কোনো খালাম্মার অবাক-আত্মোপলব্ধি নয়। 

"ওহ গড ... বন্ধ কর রে ভাই, আর নিতে পারতেসি না। এত রাতে এইসব দেখলে ঘুম হবে? স্বপ্নের মধ্যেও তো এদের প্রেতাত্মারা এসে গলা চেপে ধরবে!!!"
---- জ্বি না, এটি মাঝরাতে হরর মুভি দেখতে থাকা কোনো দুর্বলচিত্ত দর্শকের আকুতি নয়। 

"হা হা হা, হো হো হো, ওরে কেউ আমারে ধর ... আমারে মাইরালা .. আমারে এক্কেরেজিন্দাপুইত্তালা ... ওরে সাগোল, থাম তুই, হাসাইতে হাসাইতে পেট ফাটায়া ফেলবি নাকি? ওহ ওহ .. হা হা হা .. হো হো হো ... "
---- জ্বি না, এটি "মিস্টার বিন" দেখতে থাকা কোনো মোটাসোটা কিউট ভদ্রলোকের ভুড়ি-কাঁপানো আবদার নয়। 
.
.
.
.
.
.
.
বিলিভ ইট অর নট, প্রতি রাতে বিভিন্ন চ্যানেলের টকশো'গুলো সিঙ্গেলহ্যান্ডেডলি আমাদের এত্তোগুলা ইমোশন উপহার দিয়ে যাচ্ছে। 

হ্যাট্স অফ। জয়তু টকশো। 

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

টুয়েন্টিনাইন

"ফার্স্ট কল এইবার তোর। স্টার্ট কর।"
"১৬?"
"আছি"
"১৭?"
"আছি"
"১৮?"
"ধুর ব্যাটা, কি ডাকোস এগুলা মুরগির মত? ১৬-১৭'র দিন আছে নাকি এখনো?"
"আচ্ছা যা, ২০"
"২২ পর্যন্ত আছি"
"ওকে ... ২৩"
"২৩??? যাহ, ডাবল দিলাম। ২৩ পাবি না। শিওর"
"রিডাবল। ২৩ ক্যান? ২৯ কল দিলেও ব্যাপার ছিল না। বাসে পেট্রল বোম মারার প্ল্যানই তো হইসে অ্যাটলিস্ট ১৫টা। এর মধ্যে ২৩টা লাশ পরবো না? কি কস তুই? হুদাই ব্যাটা ডাবল দিলি। সামলা এইবার রিডাবলের ঠ্যালা।"
.
.
.
.
.
কেন জানি এখন মনে হয় ব্যাপারটা আসলে এমনই সিম্পল। কোন অবরোধে কোন পদ্ধতিতে কয়টা লাশ পড়বে, সেটা বোধহয় এভাবেই কোনো টুয়েন্টিনাইন'এর টেবিলে সিদ্ধান্ত হয়। 

হতেই পারে। লাশ নিয়ে টুয়েন্টিনাইন খেলাও নিশ্চয়ই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার! 

অভিশাপ


"...তরা বাইচ্চা থাকবি, আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়া ভিক্ষা চাই যেন তরা আরো অনেক দিন বাইচ্চা থাকোস। 

তদের ছেলেমেয়েরা তদের চোক্ষের সামনে পুইড়া মরুক।

আল্লাহ তগোরে এই দিন দেখার আগে যেন মরণ না দেয়।

অভিশাপ দিলাম। আল্লাহর নামে কীরা কাইটটা তদের বংশনাশের অভিশাপ দিলাম।"

[ক্ষমতার লোভে মনুষ্যত্ব হারানো সকল হারামী রাজনীতিবিদের উদ্দেশ্যে নাহিদ-রবিন'এর মাএর অন্তর থেকে বের হওয়া এই চিত্কার - আমি শুনতে পাই, আপনি শুনতে পান। শুধু ওই শুওরের বাচ্চাগুলি শুনতে পায় না ক্যান?]  

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৩

হালের স্মার্টনেস:

হালের স্মার্টনেস:
-----------------

চলেন, আজকে আপনাদের স্মার্ট হওয়া শিখাই। 

রুল নং: ১

প্রথমেই যেটা করবেন, সেটা হলো, বাংলা বর্ণমালা থেকে "ব'এ শূন্য র'কে" শিফট-ডিলিট মেরে দিবেন। কখনই, ভুল কড়েও যেন "র" বলে ফেলবেন না; বলবেন "ড়অঅঅ"; বুঝেছেন? 

রুল নং: ২
মাঝে মাঝেই "আ"কার'কে জ-ফলা দিয়ে রিপ্লেস করবেন। লাইক, আগের লাইনটা পড়লেই বুঝবেন। ইট শুড বি "হ্যাসান", নট "হাসান"! ইট্স "ক্যাঠুড়ে", নট "কাঠুরে", ইট্স "ব্যাংলাডেশ", নট "বাংলাদেশ"; বুঝা গেসে?

রুল নং: ৩
আগের লাইনটা মনোযোগ দিয়ে পড়লেই ক্লু খুঁজে পাবেন। হুদাই-বেহুদাই "লাইক", "ইউ নো", "বেসিকালি" ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করতে হবে। আরো কিছু টার্ম মুখস্ত করতে হবে, লাইক ... "জি টি জি", "টি জি আই টি", "ডব্লিউ টি এফ" ইত্যাদি। বুঝে হোক, না বুঝে হোক, এগুলা যত্রতত্র মেরে দিবেন। নো টেনশন। 

রুল নং: ৪ 
ইদানিং আরেকটা সিম্পটম দেখছি। ইংলিশ ওয়ার্ড'এর মাঝখানে যদি "বি" বা "ব" থাকে, সেটাকে "ভি" দিয়ে রিপ্লেস করাটাও মনে হয় স্মার্টনেস বলে পরিগণিত হচ্ছে। ২/৩ জন মিডিয়া সেলেব্রিটি'কে বলতে শুনলাম "মোভাইল", "নোভডি", "অ্যাভসলিউটলি" ... সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এরা নিজেদের বলে "সেলিভ্রিটি" 

আপাতত এগুলো প্র্যাকটিস কোড়তে থ্যাকেন। ইউ নো, আই জিটিজি। 

ও, আরেকটা কথা। কথায় কথায় "লোল" ঝাড়তে ভুলবেন না কিন্তু ;) 

বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

ট্যাগ

অদ্ভূত ব্যাপার তো ভাই। হরতালের বিরুদ্ধে কথা বললেই দেখি আওয়ামীলীগের ট্যাগ ধরিয়ে দেয়!!!

ভাই থামেন। আওয়ামীলিগ যখন বিরোধী দলে ছিল, তখনও হরতালকে গালি দিতাম। হরতাল দিয়ে যে দেশের কোনো উন্নতি হয়না; সেই বোধ-বুদ্ধি অনেক আগে থেকেই হইসে আমার। হ্যা, বলতে পারেন, হরতাল দিয়ে ক্ষমতার বদল হয়। তাতে ভাই আমার কি? লাউ বদলে কদু হয়, কদু বদলে লাউ। আমি-আপনি হয় যদু, নাহলে মধু। 

গ্যাঞ্জামের মূল আসলে ফেইসবুক। ফেইসবুক না থাকায় তখন যখন আওয়ামীলিগ'কে গালি দিতাম, কেউ শুনত না, কেউ বিএনপির ট্যাগ'ও দিত না। এখন এই "এফ" নামক জিনিসটার কল্যানে যার যা মন চায় ট্যাগ লাগিয়ে সুখ খুঁজে নেয়। 

যত পারেন ট্যাগ লাগান। আমার অসুবিধা নাই। রাজনৈতিক ক্ষমতা হাসিলের জন্য যে-ই হরতাল দিবে, তারেই গালি দিব। ইনশা-আল্লাহ। 

তবে হ্যা, বাজে কথা বললে বা আজাইরা ত্যানা প্যাঁচালে নগদে ডিলিট; তারপর ব্লক। 

কারণ ... আমার ওয়ালে শুধুই আমার একনায়কতান্ত্রিক অধিকার চলে :) 

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৩

যতটা মেজাজ খারাপ হয় এখন...

জয়ীকে হিন্দিতে ডোরেমন দেখে পুটপাট হিন্দি বলে ফেলতে দেখলে মেজাজ খারাপ হতো; তবে এতটা নয় ...

আম্মাকে ফুল ভলিউমে জি বাংলার "রাশি" বা "অগ্নিপরীক্ষা" দেখে চোখের পানি ফেলতে দেখলে মেজাজ খারাপ হতো; তবে এতটা নয় ...

সারাদিন পর বাসায় ফিরে আগের রাতের খেলার হাইলাইট চলার সময় পূনম যখন নাইজেলা'র রান্না শিক্ষা দেখতে বসে, মেজাজ তখনও খারাপ হয়, তবে এতটা নয় ... .
.
.
.
.
.
.
যতটা মেজাজ খারাপ হয় এখন... 

যখন দেখি, আশেপাশের সব "অতি-সচেতন" নাগরিকগণ  টকশো'তে আসা মাননীয় স্পিকারদের অর্থহীন ত্যানা-প্যাচানো শুনে নিজ-নিজ ধারনাকে নিজের কাছেই আরো শক্ত-মজবুত প্রমান করে স্বস্তির হাসি নিয়ে ঘুমাতে যায়।  

আমরাই বাংলাদেশ কোনো "বিনোদনমূলক টিভি অনুষ্ঠান" না।

[এই পোস্টটা আমরাই বাংলাদেশ পেইজ থেকেও আপলোড করা হয়েছে। কেউ ডোনার হতে চাইলে ওই পেইজে প্রোসিডিওর বলা আছে। লেখাটা যত বেশি শেয়ার হবে, তত ডোনার পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বাকিটা আপনাদের উপর।]

যারা অনেকদিন ধরে রক্ত নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে ব্যাপারটা হয়ত এতদিনে নরমাল হয়ে গেছে। আমার তো জুম্মা-জুম্মা আট দিন, তাই ধাক্কাটা হজম করতে কষ্ট হচ্ছে।

৩ দিন আগে খুব কাছের এক বড় ভাই তার চাচীর জন্য রক্ত চাইল। বি নেগেটিভ। আমরাই বাংলাদেশকে যে কয়েকটা গ্রুপ দিনরাত সাহায্য করে যাচ্ছে রক্ত যোগার করে দিয়ে, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করলো রক্ত যোগার করতে। প্রথম কয়েক ব্যাগ ম্যানেজও হলো। গতকাল আমার ওই ভাই আবার জানালো যে আরো রক্ত লাগবে, আমি সবাইকে আবার জানালাম। ওরাও চেষ্টা করলো; কিন্তু এবার আর যোগার হলো না। একসময় মেসেজ পেলাম, "The Patient expired a few minutes back... Innalillahe wa Inna Ilaihe Rajeoon! Razeeb, thank you so much for your tremendous support during need... And thanks to Aamrai Bangladesh..."

আবারও বলছি, যারা অনেকদিন ধরে মানুষের বিপদের সময়ে রক্ত ম্যানেজ করে দিচ্ছে, এমন ঘটনা হয়ত তাদের নিয়মিত ফেইস করতে হয়। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা প্রথম বলেই হয়ত বেশি খারাপ লাগছে। আমারও হয়ত সময়ের সাথে সাথে সয়ে যাবে এসব।

কিন্তু, ব্যাপারটা এমন হলো কেন? চাহিদার তুলনায় ডোনারের সংখ্যা এখনো এত কম কেন? যে ছেলেমেয়েগুলো রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে, আমি তো ওদের চিনি। ওদের চেষ্টায় তো কোনো খাদ দেখিনি একবারের জন্যও। ৪৮ হাজার মেম্বার এখন আমরাই বাংলাদেশ পেইজে। ডোনার কয়জন এর মধ্যে? অর্ধেক ডোনার হলেও তো জরুরি সময়ে এত হা-হুতাশ করতে হয়না।

একটা কথা পরিষ্কার করে আবার বলি। আমরাই বাংলাদেশ কোনো "বিনোদনমূলক টিভি অনুষ্ঠান" না। প্রতি পর্বে আমি আপনাদের সামনে আনন্দ দিতে বা আপনাদের মনোরঞ্জন করতে হাজির হই না। ছোট করে হলেও কিছু একটা করব বলেই এই অনুষ্ঠান। আপনরাই যদি এগিয়ে না আসেন, তাহলে কোনকিছু কোনদিনই বদলাবে না। যে ছেলেমেয়েগুলো রাতদিন খেটে রক্ত যোগাড় করছিল তারাও একসময় হাল ছেড়ে দিবে। সেটাই কি চান আপনারা?

কোনো পোস্ট শেয়ার বা লাইক দিতে অনুরোধ করায় ঘোর আপত্তি আমাদের। কিন্তু ডোনারের সংখ্যা বাড়াতে সেটা ছাড়া আর গতি নাই মনে হচ্ছে। একটু এগিইয়ে আসুন প্লিজ, আজকে আপনি এগিয়ে আসলে একদিন আপনার প্রয়োজনে আরেকজনকে ঠিকই পাবেন। 

ত্যানা-প্যাঁচানো

আমার হিসেবে গত কয়েক বছরের মধ্যে বাংলা ভাষায় সর্বশ্রেষ্ঠ সংযোজন হলো "ত্যানা-প্যাঁচানো" বাগধারাটি।

এই শব্দযুগলটি এতটাই শ্রুতিমধুর, তাত্পর্যপূর্ণ, শালীন এবং সহজবোধ্য; আমি রীতিমত "ত্যানা-প্যাঁচানো"র প্রেমে পরে গেছি। সর্বপরি, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নেতানেত্রীদের বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য, টকশো'তে বিজ্ঞজনদের জ্ঞানগর্ভ পর্যালোচনা - এসবকিছুকেই কি আশ্চর্য সুন্দর ভাবে সিমপ্লিফাই করে এক "ত্যানা-প্যাঁচানো" বাগধারাটি দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া যায় ... সত্যিই প্রশংসনীয়। 

এই বাগধারার প্রবক্তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হোক - এই লক্ষ্যে একটা ইভেন্ট খুলে ফেলবো কিনা ভাবছি। 

পাদটিকা: একটি সামান্য বিষয় নিয়ে আজাইরা পকরপকর করাকে "ত্যানা-প্যাঁচানো" বলে। উদাহরণ - এই স্টেটাসটি। 

সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৩

অন্ধ বাবা-মা

আমার-আপনার আশেপাশেই কিছু বাবা-মা খুঁজে পাবেন যারা তাদের সন্তানের ব্যাপারে পুরাপুরি অন্ধ।

তাদের সন্তান যেনো খারাপ কিছু করতেই পারে না। পাশের বাড়ির ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে মারলেও এই বিশেষ প্রজাতির বাবা-মা'রা বলবে - "নো, নো, নেভার; ইম্পসিবল। এ হতেই পারে না। আমার মুন্না বিনা কারণে মশা পর্যন্ত মারে না। নিশ্চয়ই ওবাড়ির ছেলে নিজেই নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আমার মুন্নার নামে অপবাদ দিচ্ছে।"

আপনারা এটাও জানেন যে এই সন্তানগুলির বয়স ঠিকই বাড়ে; কিন্তু এরা কখনই "মানুষ" হয়ে ওঠে না।

ইদানিং আমাদের আশেপাশের বেশির ভাগ মানুষকেই দেখছি রাজনৈতিক ব্যাপারে এমন অন্ধ বাবা-মা'এর মত আচরণ করছে। আওয়ামিলীগ, বিএনপি বা জামাত যেন তাদের ফেরেশতাতুল্য সন্তান; যারা সকল ভুলের উর্ধে। বিশ্বজিতকে কুপিয়ে "তেমন কোনো বড় ভুল" হয় নাই, মনির'কে পুড়িয়ে মারাটাও নিতান্তই যেন একটা সাধারণ ঘটনা। 

যেখানে আমাদের উচিত নিজের এই কু-সন্তান কুলাঙ্গারগুলিকে টেনে-হিচড়ে সবার সামনে ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি তোলা, তা না, আমরা ব্যস্ত নির্লজ্জের মত "কুপিয়ে মারা" বড় অপরাধ নাকি "পুড়িয়ে মারা" বড় অন্যায় - এই চুলচেরা বিশ্লেষণে। ভালই তো। ভালো না? 

কি সুন্দর ভাবেই না আমরা আমাদের "সন্তান"দের বাহবা দিয়ে দিয়ে বড় করছি। দোষ ঢাকতে ঢাকতে প্রতিদিন নতুন নতুন জানোয়ার পয়দা করছি। ইনশাল্লাহ সেই দিন দূরে না, যেদিন পাড়ায়-পাড়ায়-মহল্লায়-মহল্লায় দেশের পতাকার বদলে দল'এর পতাকা উড়বে। এবং "এ" পাড়ার মুন্না "বি" পাড়ায় ঢুকলেই .... 

... কেউ পুড়ে মরবে, কেউ কোপ খেয়ে। 

ভাইরে, নিজের সন্তানের ভুলগুলি ধরিয়ে দিলেই তারা ঠিকভাবে বড় হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের ভুলগুলি ধরিয়ে দিয়ে ঠিক পথে আনার মূল দায়িত্ব কিন্তু সেই দলের সাপোর্টারদেরই। অন্যের সমালোচনা করার থেকে আত্ম-সমালোচনা করাটাই কিন্তু বেশি উপকারী। এটা আমার কথা না, মনিষীদের কথা। 

ছোটবেলার একটা গল্প বলি। আমি নানু-খালাদের কাছে বড় হওয়া ছেলে। ফাইভ/সিক্সে পড়ার সময় একবার পাশের বাসার ছেলে আমাকে "সামথিং'এর পুত" বলে একটা অশ্লীল গালি দেয়। জবাবে আমি পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে ব্যাটারে চরম মাইর দেই। 

রেসাল্ট: এক সপ্তাহ আমাকে বিকালে খেলতে যেতে দেয়া হয় নাই, থান্ডারক্যাটস দেখতে দেয়া হয় নাই, ম্যাকগাইভার দেখতে দেয়া হয় নাই। 

মানুষ হয়েছি কি হই নাই, আমার আশেপাশের সবাই  বলতে পারবে। তবে অমানুষ যে হই নাই, সেটার প্রমান আমি রেগুলার পাচ্ছি। 

বিশ্বজিতকে কুপিয়ে মারলেও আমার বুক ফেটে কান্না আসে। মুনিরকে পুড়িয়ে মারলেও।

[এই লেখাটা অর্ধেক লিখেছিলাম পরশু রাতে। লেখাটা শেষ করতে করতে পুড়ে মরলো নাহিদ আর রবিন। সত্যি সত্যি এখন মনে হয় চিন্তা শুরু করে দেয়া উচিত, অপশন হিসেবে কোনটা বেছে নিব - পুড়ে মরা? নাকি কোপ খেয়ে মরা?]

আমার "গণতান্ত্রিক" অধিকার।।

নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে আজকে। আম্লিগ বেশরমের মত আনন্দ-মিছিল বের করেছে। করতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

বিম্পি-জামাত-চাল্লি-পাল্লি নিয়ে অবরোধ ডেকেছে। নিশ্চয়ই বাস-গাড়ি-সিএনজি পোড়ানোর পুরা প্ল্যান নিয়েই মাঠে নামবে তারা। নামতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

কাল থেকে (ইনফ্যাক্ট আজ থেকেই) আমার মেয়ের পরীক্ষা শুরু। স্কুল ডিসাইড করেছে তারা অবরোধের মধ্যেও স্কুল খোলা রাখবে। রাখতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

আমি সকাল বেলা আমার মেয়েকে স্কুলে দিতে যাব। গাড়ি নিয়ে। যদি আমার গাড়ির সামনে কোনো পিকেটার পরে, খোদার কসম, চোখ বন্ধ করে গা'এর উপর গাড়ি উঠায়ে দিব। 

উঠাতেই পারি। এটাও আমার "গণতান্ত্রিক" অধিকার।। 



রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৩

রিভিউ - দুলাভাই

রিভিউ - দুলাভাই 

কোনকিছুর মধ্যে অ্যাকশন না থাকলে আমার ভাল্লাগেনা। মারামারি-সাসপেন্স-ওয়ালা মুভি আমার পছন্দ, ফুটবল খেলায় ফাউল-লাল কার্ড না দেখলে পাইনসা লাগে। হার্ড রক-মেটাল ছাড়া গান শুনলেও ঠিক গরম লাগেনা। 


টিভি প্রোগ্রাম করব বলে যখন ঠিক করলাম, তখনও এটাই মাথাতে ছিল। শুধু একটা প্রোগ্রাম করব, কিছু গেস্ট আসবে, খাজুরে প্যাচাল পারব - ব্যাস; প্রোগ্রাম শেষ!!! নোপ্, অ্যাকশন ছাড়া নট পসিবল। তাই "আমরাই বাংলাদেশ"এর প্ল্যান যখন করলাম, এমনভাবেই করলাম যেন প্রতি এপিসোডেই কিছু না কিছু করার মত থাকে; সেটা রক্ত দেয়ায় হোক বা বোতল বাতি নিয়ে ব্রেইনস্টর্মিংই হোক ---অ্যাকশন আমার চাই, নইলে জিন্দাপুইত্তালাইমু!

এই পর্যন্ত ঠিকঠাক ছিল। গত পরশু থেকে তো দেখি আমার ফেইসবুক স্টেটাসের মধ্যেও অ্যাকশন। দুলাভাই ডাকের মাধুর্য নিয়ে একটা স্টেটাস দেয়ার পর থেকে যে হারে কমেন্ট এবং ইনবক্স'এ আগ্রহী শালা-শালী'দের মেসেজ পাচ্ছি, আমি তো পুরাই আবেগে কাইন্দালাইতেসি :'( 

শালা-সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। (ইউ নো, আই অলরেডি হ্যাভ থ্রি) ;) 

অতি শীঘ্রই আমি শালীদের ডাটাবেস বানানোর কাজে হাত দিব। তারপর ইন্শাল্লাহ, এলফাবেটিক অর্ডারে সবার মেসেজ রিপ্লাই করব। 

কথা দিলাম। 



বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৩

দুলাভাই

আমার মা তার বংশের সবচাইতে বড় মেয়ে। বাই ডিফল্ট আমার বাবা হলেন সবচেয়ে বড় দুলাভাই। 

আম্মারা ৬ বোন। সেই সুবাদে আমার বাবার আপন শালির সংখ্যা ৫; আর আম্মার বিশাল কাজিন-বাহিনী ক্যালকুলেট করলে শালির সংখ্যা "অগুন্তি"।

ছোটবেলা থেকে আর কিছু না বুঝলেও এইটা বুঝতাম যে আশেপাশে শালিদের কিচিরমিচির আমার পিতৃদেব বেশ উপভোগ করেন। তাদের খোঁচাখুচি, মস্করা ইত্যাদি আমার দৃশ্যতঃ গম্ভীর শিক্ষক বাবার মুখে একটা পরিতৃপ্তির হাসি নিয়ে আস্ত। 

তখনই ডিসিশন নিয়ে নেই, বিবাহ যখন করিবো, অবশ্যই শালির সংখ্যা গুনিয়াই করিবো। এবং তাহাদের বাধ্য করিব, যেন তাহারা আমাকে অবশ্যই "দুলাভাই" বলিয়া সম্বোধন করে। 

আমার বিবাহ হলো। যৌতুক হিসেবে পেলাম তিন-তিনটি হাট্টা-গোট্টা শালা। শালিসংখ্যা - শুন্য। 

বৌএর কাজিন-বাহিনী'তে কিছু প্রসপেক্ট থাকলেও নিষ্ঠুরের মত তারা সে আশার গুড়েও বালি ঢেলে দিল। সুরে-সুরে "ভাইয়া", "রাজীব ভাইয়া" ইত্যাদি সম্বোধনে আমাকে জর্জরিত করে ফেললো। ধর্মে থাকলে রাখিও পরিয়ে ফেলতে পারত। আমি তাদের এমনি এক "ভাইয়া" হয়ে গেলাম, পারলে আমার বউকেই (মানে তাদের বোনকেই) তারা "ভাবী" বলে ডাকে। ইনফ্যাক্ট আমার এক শালি আমার পুত্র হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছে - "জীয়ন কিন্তু আমাকে খালা ডাকতে পারবে না, আমার ফুপু ডাকতে হবে। আদর করে ফুপস।" 

মনের কষ্ট মনেই রয়ে গেল। চোখের পানি চোখেই যে শুকালো। 

উদ্ধার করতে আবির্ভূত হলেন আমার ডাক্তার ফুপুশাশুড়ি, তিনি তার দুই কন্যাকে শিখালেন আমাকে "দুলাভাই" বলে ডাকতে। আহা, কি মধুর সেই ডাক। একেকবার তারা "দুলাভাই" বলে ডাকে, আমি মনে মনে বলি - "ড্যাড, ইউ হ্যাভ শালী! আই হ্যাভ টু। ইউ আর দুলাভাই, মি দুলাভাই টু। হুহ!" 

পার্থক্য শুধু এক জায়গাতেই। আমার বাবা'র শালিগুলি ছিল কলেজ-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া। আর আমার একটার বয়স ৫, আরেকটার ৩। ইয়ে, মানে ... জ্বি, দু'জনই আমার মেয়ে জয়ীর চাইতেও ছোট। 

যাই হোক, লেটেস্ট আপডেট দেই।

আজকে খেয়াল করলাম আরো ৮/১০ জন ইদানিং আমাকে বেশ পেয়ার-মহব্বতের সাথে দেখা হলেই হাসিমুখে "দুলাভাই" ডাকা শুরু করেছে। আবেগে কাইন্দানালাইলেও ব্যাপারটা আমি বেশ এনজয় করছি। 

এই ৮/১০ জন হলো আমার শ্বশুরবাড়ির দারওয়ান, কেয়ারটেকার, শ্বশুরের এবং অন্যান্য ফ্ল্যাটের ড্রাইভারবৃন্দ। 

আমি কিন্তু ব্যাপারটাকে পসিটিভ ভাবেই দেখছি। 

ছোট করেই নাহয় হোক, তবু শুরুটা তো হোক ... 

প্রিন্সিপাল আপা

উত্তেজনার বশে আজকে সকালে একটা আকাম করে ফেলসি।

সাত-সকালে মেয়ের স্কুল থেকে এসএমএস আসল - "Dear Parents, school will remain open on Saturday, Nov 23, 2013. Wednesday's routine will be followed. Principal."

হরতাল নিয়ে আমার মাথা মেজাজ এমনিতেই চরম খিচড়ে থাকে। এর মধ্যে শনিবারও সকাল সাড়ে ৬টায় ঘুম থেকে ওঠার এই বেত্তমিস আবদার দেখে মাথায় রক্ত উঠে গেল। সাথে সাথে রিপ্লাই করলাম "আহা, কি আনন্দ। চলেন আমরা সবাই মিলে হরতালকে স্বাগত জানিয়ে শুক্রবার ভোরেও ধানমন্ডি লেকের ধারে নৃত্য করি। প্রিন্সিপাল আপা কোরিয়গ্রাফার, আমরা সবাই নৃত্যশিল্পী। ভালো তো! ভালো না?"

এখন চরম টেনশন লাগছে রে ভাই। এই এসএমএস যদি আসলেই প্রিন্সিপাল আপা পর্যন্ত পৌঁছায় !!! বাপের পাপে মেয়ে না আবার চাপে পড়ে যায়!!!

ধুর, এইসব আকাম যে ক্যান করতে যাই আমি??? 

সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৩

আমি যা করি, ১০০% ডেডিকেশনের সাথে করি।

আমি যা করি, ১০০% ডেডিকেশনের সাথে করি। বুজছেন?

এই নেন ব্রেকডাউন:  

-----------------------------------------------------
অ্যাডভার্টাইজিং ২৫%
বউ-বাচ্চা-ফ্যামিলি'র সাথে সময় কাটানো ১৫%
বন্ধুদের সাথে আড্ডা ১৫%
গানবাজনা ৫%
ক্রিকেট খেলা দেখা ৫%
ফটোগ্রাফি ১০%
সাইকেল চালানো (রিসেন্ট হুজুগ) ৫%
ফেইসবুকে স্টেটাসবাজি ৫%
টেলিভিশনে উপস্থাপনা ৫% 
ব্যাডমিন্টন (যেহেতু শীত চলে এসেছে) ৫% 
এদিক-ওদিক ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করা ৫%
-------------------------------------------------------
হইসে না সব মিলিয়ে ১০০%? হুমমমমমম? 

ফলাফল:

এজন্যই আমি সাকিব-আল-হাসানের ফ্যান। সাকিব-আল-হাসান আমার ফ্যান না। 


তানিয়ার মা

হে পরম করুনাময়, 

তুমি তানিয়ার মা'র দিকে একটু মুখ তুলে চাও। তোমার এই অসহায় বান্দি তোমার কাছে সোনা-রুপা-মনি-মুক্তা-হীরা-জহরতের জন্য হাত পাতেনি। বাড়ি-গাড়ি-ধন-সম্পত্তিও তার চাওয়া নয় খোদা।

হে পরওয়ারদেগার,

তানিয়ার মা তোমার দরবারে হাত তুলেছে শুধু একজন মনের মত, সুইটেবল, অ্যাজ-পার-রিকোয়ারমেন্ট কাজের বুয়া প্রাপ্তির আশায়, যে কিনা তোমার আরেক বেবাস-নাচার বান্দি, জয়িতা-জীয়নের মা'র জীবনে সুখ-শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে। 

তুমি তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না আল্লাহ, পিলিজ লাগে ... 

[উল্লেখ্য, তানিয়ার মা একজন কাজের বুয়া ম্যানেজ করার এজেন্ট। সুদীর্ঘ ১ মাস ধরে আমার স্ত্রী ৩-বেলা নিয়ম করে এই ভদ্রমহিলাকে ফোন করে যাচ্ছে একটি কাজের বুয়া পাওয়ার আশায়। প্রতিবার ফোন করার আগে সে আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে মোনাজাত করে। খোদার কসম, আমি সাক্ষী।

আল্লাহতা'আলা অতি শীঘ্র তানিয়ার মা'কে একটা ভালো বুয়ার সন্ধান দিক, আমাদের জীবনে আবার সুখ-শান্তি ফিরে আসুক।

আমিন।]

শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৩

সত্যিকারের দেশপ্রেম

এই ব্যাপারটা নিয়ে ঠিক এভাবে আর কেউ ভেবেছে কিনা আমি জানি না। সেদিন আরিফ ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ব্যপারটা মাথায় আসে। দেখেন তো এভাবে ভাবতে পারলে "দেশপ্রেম" ব্যাপারটা আরেকটু ক্লিয়ারলি বোঝা যায় কিনা। 

মনে করে দেখুন তো বছর ১৫ আগে, সারা বছরে শরীরে লাল-সবুজ পতাকা জড়িয়ে রাস্তায় ছুটে বের হয়ে গলা ফাটিয়ে "বাংলাদেশ, বাংলাদেশ" বলে চিত্কার করার মত অকেশন আমরা কয়বার পেতাম? ২৬সে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বরে বাড়ির ছাদে পতাকা উড়াতাম। সাফ ফুটবলে একবার চ্যাম্পিয়ন হলাম, মনে আছে বড়দের পিছে পিছে সেবার পতাকা নিয়ে মেইন রোড পর্যন্ত গিয়েছিলাম। টেনেটুনে আরো কিছু বাড়ালেও বছরে ৪/৫ বারের বেশি আমাদের সাথে পতাকার দেখা হত না। 

বাকি ৩৬০ দিন পতাকা থাকত ভাঁজ করা অবস্থায়। আলমারির ভেতর। 

আর এখন? দু'দিন পরপরই এখন আমাদের পতাকা জড়াতে হয়। দু'দিন পরপরই "বাংলাদেশ, বাংলাদেশ" বলে চিত্কার করে আমাদের গলা ভাঙ্গে। চোখের পানি, নাকের পানি এক করে আমরা "দেশপ্রেম"এর জোয়ারে ভাসি। 

১৬ কোটি মানুষের জীবনে যারা বারবার লাল-সবুজ পতাকা ফিরিয়ে এনেছে, "দেশপ্রেম" যদি শিখতে হয়, চলুন তাদের কাছ থেকেই শিখি। পিচ্চি-পিচ্চি এই ছেলেগুলি ক্যামনে পারে বারবার, আমাদের এভাবে হাসাতে? এভাবে কাঁদাতে? 

আজকে রাতে আমরাই বাংলাদেশে আমার সাথে থাকছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর নাসির হোসেন।

কথা হবে ওদের সাথে, "সত্যিকারের দেশপ্রেম" নিয়ে। রাত ১১টায়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে। 

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৩

ব্যাখ্যাহীন গল্প

এই স্টেটাসটি হয়ত আমি লিখে শেষ করতে পারব। কিন্তু কেউ যদি এই স্টেটাসের সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আমার কাছে জানতে চান, আমি সেটা দিতে পারব না। 

কিছুদিন আগের কথা। বাসায় শুধু আমর বউ পূনম আর আমার দেড় বছরের ছেলে জীয়ন। জীয়ন সারাক্ষনই ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে, সেদিনও করছিল। হঠাত করেই এক দৌড়ে সে আমাদের বেডরুমে ঢুকে যায়। এবং পূনম দৌড়ে আসতে আসতেই জীয়ন এক ধাক্কায় ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়। দরজার লকটা বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা করছিল; মাঝে মাঝেই অটো-লক হয়ে যাচ্ছিল। এবং ... তখনও তাই হলো। ভয়ংকর ব্যাপারটা হলো, বেডরুমের একটা চাবি তখন বেডরুমের ভিতরে, আরেকটা আমার কাছে। আমি অফিসে, তখন খবর দিলেও আসতে মিনিমাম ১ ঘন্টা লাগবে!

বেডরুমের ভিতরে ছেলে একা, মা বাইরে। ছেলে এতই ছোট যে তার হাত দরজার নব পর্যন্ত পৌছবে না, প্লাস ওকে নব ঘুরিয়ে দরজা খোলা ব্যাপারটা বোঝানোও তো পসিবল না। বুঝতেই পারছেন আমার বউ'এর তখনকার অবস্থা। ছোট একটা মানুষ, রুমের মধ্যে টিভি, শোকেস - ভারী ভারী সব জিনিস, যে কোনটা ধরে টান দিলেই তো ভর্তা হয়ে যাবে।

আমাদের বাসার অন্যান্য সব ঘরের দরজার চাবি (শুধুমাত্র বেডরুমেরটা বাদে) আরেকটা জায়গায় রাখা থাকে, সেসব চাবি বের করা হলো। বাকিটা বউ'এর কথাতেই বলি ...

"আমি জানি যে এসব চাবি দিয়ে বেডরুমের দরজা খোলা যাবে না। তারপরও মনে হচ্ছিল একবার ট্রাই করে দেখি। প্রথম ৬/৭টা চাবি লাগলো না। শেষ চাবিটা হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ আল্লাহকে ডাকলাম। তারপর চাবিটা ঢুকলাম। আর ... চাবিটা দিয়ে দরজা খুলে গেল! আমি এক দৌড়ে ভিতরে ঢুকলাম, দেখি জীয়ন বিছানার পাশে বসে বসে একা একা খেলছে। এত স্বস্তি মনে হয় আমি জীবনে কোনদিন ফিল করি নাই। দরজাটা আজকে আল্লাহ খুলে দিসে রাজীব, নাহলে এই চাবি দিয়ে বেডরুমের দরজা খোলার কথা না।"

যে জিনিষটার কোনো সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আমি দিতে পারব না, এবার সেটা বলি।

ওই চাবির গোছার প্রত্যেকটা চাবি দিয়ে আমি আর পূনম মিলে মিনিমাম ৫০০ বার আমাদের বেডরুমের দরজা খোলার চেষ্টা করেছি।

একবারও খোলেনি!!!

বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৩

টেন্ডুলকার

সাংবাদিকতা সম্পর্কে আমার জ্ঞান মোটামুটি শুন্যের কোঠায়। তাই এই ব্যাপারে কোনো জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় যেতে আমি নারাজ। সকাল সকাল একটি বিখাউজ আর্টিকেল আমার মেজাজটা খিচড়ে দিয়েছে বলেই মনের ঝালটা এখানে ঝারছি। দয়া করে এই স্টেটাসটিকে সমগ্র সাংবাদিক মহলের প্রতি কটাক্ষ হিসেবে দেখবেন না। 

প্রথম আলোর খেলার পাতার লীড আর্টিকেলটা কেউ পড়েছেন? গোটা ক্রিকেট-বিশ্ব আজ যেখানে মহানায়কের বিদায় নিয়ে ব্যথিত, শুধু ক্রিকেট-টেন্ডুলকার নয়, বরং সবাই যেখানে মানুষ-টেন্ডুলকারের স্তুতিতেও ব্যস্ত; সেখানে "টেন্ডুলকার অবসর নিতে এত দেরী কেন করলেন?", "আরো ৩ বছর আগেই তার রিটায়ার কথা উচিত ছিল", "স্টিভ ওয়াহ ক্যামনে রিটায়ার করসিলো, লারা ক্যামনে করসিলো?" - ইত্যাদি ত্যানা-প্যাঁচানি টাইপ পকপকানিটা কি না করলেই হত না?

যে টেন্ডুলকারকে নিয়ে তার ঘোর শত্রুও কোনদিন একটা বাজে কথা বলতে পারে নাই (ইন ফ্যাক্ট তার কোনো শত্রু ছিল বলেও কোনদিন শুনি নাই, ওয়াসিম আকরাম বা শেন ওয়ার্ন পর্যন্ত তার প্রশংসায় মুখে ফ্যানা তুলে ফেলছে), সেখানে তার এই বিদায়লগ্নে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার কাছ থেকে আরো সেন্সিবল এবং রেসপেক্টফুল আর্টিকল আশা করেছিলাম!

পিপড়ার কামড়ে সিংহের কিছু হয় না। আমি নিশ্চিত, অর্বাচিনের মুর্খতাও ক্রিকেট ঈশ্বরকে স্পর্শ করবে না।
টেন্ডুলকার ভাই, আমি সামান্য একজন ক্রিকেট ভক্ত। আপনার দলের প্রতি আমার চরম এলার্জি থাকলেও, জানবেন, তার কারণ আপনি নন। আপনাকে আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই শ্রদ্ধা করি। ভালো থাকবেন।

মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

সাইকেল চালানোর সুফল

ভুড়ি কমেছে কি কমে নাই, সেটা এখনো মাপি নাই। 
মানিব্যাগের কয় টাকা বাঁচলো, সেটা এখনো হিসাব করি নাই। 
গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের না হয়ে ট্রাফিক জ্যাম কমাতে কতটুকু হেল্প করলাম, সেসব নিয়ে এখনো ভাবতে বসি নাই। (হরতালে আবার ট্রাফিক জ্যাম কি?) 

তবে ... 
৭/৮ দিনের সাইকেল চালানোর একটা সুফল নিয়ে আমি চরম আনন্দিত এবং বিমোহিত। 

রাতে যে একটা সলিড ঘুম হয় রে ভাই, বলার মত না। কানের পাশে ককটেল ফাটলেও এখন আমার ঘুম ভাঙ্গে না।  যাদের ঘুম আমার মত পাতলা এবং যারা আমার মত মোটামুটি লেভেলের ইনসমনিক, সাইকেল চালানো শুরু করেন ভাই।

আল্লাহর কসম কেটে বলছি, এমন শান্তির ঘুম আমি বহুদিন ঘুমাই নাই। স্বপ্ন পর্যন্ত দরজা নক করে করে টায়ার্ড হয়ে ফিরে যাচ্ছে; ঘুমের মধ্যে ঢুকতে পারছে না। 

আহা, কি যে সুখ! 

"আপনার কাছে দেশপ্রেম মানে কি?"

স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবসে শরীরে লাল-সবুজ পতাকা জড়িয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর নাম'ই কি দেশপ্রেম?

চিত্কার করে দেশাত্মবোধক গান গাওয়া, ক্রিকেট দল কে সাপোর্ট দিতে "বাংলাদেশ বাংলাদেশ" বলে গলা ফাটানোর নাম'ই কি দেশপ্রেম?

...এটুকুতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলে তো দেশ এগুবে না সামনের দিকে।

লিখে জানাবেন কি আমাদের - "আপনার কাছে দেশপ্রেম মানে কি?"

একটা এপিসোড করতে চাই যেখানে শুধুই দেশপ্রেম আর দেশের প্রতি আমাদের তরুণ সমাজের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে কথা বলব।

আপনাদের প্রতিটি মতামত আমাদের জন্য খুব জরুরি।

কতকিছুই তো লেখেন প্রতিদিন ফেইসবুকে। দেশটাকে নিয়ে এবার একটু লিখে দেখুন না।

দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা?

আমরাই তো বাংলাদেশ

তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ

ম্যাথমেটিক্যাল উপায়ে একটু দেশপ্রেমের কথা বলি। 

মনে করি, কোনো একটা ভালো উদ্যোগকে সাকসেসফুল করার জন্য ১০এর মধ্যে মিনিমাম ৬ পয়েন্ট পেতে হবে। যদি সেইরকম সাকসেসফুল হতে হয়, তাহলে লাগবে ৮; আর যদি এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালাআআ টাইপ কিছু চাই তাহলে ১০'এ ১০'এর বিকল্প নাই। 

এবার মনে করি, কেউ একটা বুদ্ধি করলো - আর সেই বুদ্ধিটা যদি কাজে লেগে যায় তাহলে দেশের একটা সমস্যার সমাধান হয়ত হয়েও যেতে পারে। ধরে নেই, সেই বুদ্ধির মেরিট হলো ১০'এর মধ্যে ৩। 

এই অবস্থায় আমাদের সামনে খোলা থাকে দুইটা পথ।

১। (যেটাকে আমরা অনেকেই তাচ্ছিল্যভরে "বাংলাদেশী পথ" বলে থাকি): "এইটা কোনো বুদ্ধি হইলো?", "এইসব করে কোনো লাভ আছে?", "সব দুই নাম্বারী বুদ্ধি, নিজের মার্কেটিং'এর ধান্দা" ইত্যাদি বলে ১০'এ ৩ প্রাপ্ত বুদ্ধিটাকে ক্রিটিসাইজ করা। এতে করে অনেক সময় রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে বুদ্ধিকারী ডিসাইড করে "ভালো কাজের খ্যাতা-পুরি, করলাম না কাজ।" অথবা ঠিক করে "কাউরে লাগবো না আমার, আমি একাই কাজ কৈরালামু। যদি তর ডাক শুনে কেউ নাআসে , তবে একলা চল রে।"

দুই ক্ষেত্রেই লসটা আমাদের। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে "৩" মেরিট ওয়ালা কাজটা "৩"এই থেকে যায়, আলটিমেট রেসাল্ট পাওয়া যায় না। আর প্রথম ক্ষেত্রে তো উদ্দ্যোগটা ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই তাকে ধ্বংস করা হয়। 

২। এটা হলো সেই পথ যেটা বেছে নিলে আমাদের দেশটা শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। "৩" পাওয়া বুদ্ধিটা যদি আপনার মনে ধরে, তাহলে একটু ভেবে দেখুন, ওটাতে আপনি কোনভাবে কনট্রিবিউট করতে পারেন কিনা। ধরুন, আপনার পার্টিসিপেসনে যদি ১ পয়েন্টও যোগ হয়, বুদ্ধির মেরিট কিন্তু ৩ থেকে ৪'এ পৌছে যাবে। এভাবে করে মাত্র ৪/৫ জন একসাথে হলেই কিন্তু ওই "৩" পাওয়া বুদ্ধিটা দিয়েই দেশের একটা ঝামেলাকে এক্কেরে  জিন্দাপুইত্তালানো সম্ভব। 

রক্তসৈনিক'এর নজরুল আর কল ফর ব্লাড'এর রুবাইয়াত একটা সুপার প্ল্যান করেছে। রক্তদাতাদের উত্সাহিত করতে এবং সেচ্ছায় রক্তদানের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ওরা দু'জন তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ যাবে সাইকেল চালিয়ে। মাঝে মাঝে থামবে আর মানুষকে রক্ত দেয়ার গল্প বলবে। আমাদের কাছে বুদ্ধিটা খুব ভালো লেগেছে। তাই আমরাই বাংলাদেশ ওদের সাথে আছে। আমরা আমার সীমিত ক্ষমতা আর বুদ্ধি দিয়ে ওদের বুদ্ধি'তে কিছুটা হলেও কনট্রিবিউট করতে চাই। "আধা পয়েন্ট" বা "এক পয়েন্ট"ই হোক, কিছু তো যোগ হবে। বাই দা ওয়ে, এই বুদ্ধি কিন্তু "৩" পাওয়া বুদ্ধি না, উইথ অর উইথআউট আমাদের বুদ্ধি, এই উদ্যোগ কিন্তু সফল হবেই। (ক্রেডিট কিন্তু ওদের'ই, এটা আবারও ক্লিয়ার করে নিলাম:) 

নজরুল-রুবাইয়াত যা করছে, সেটা দেশপ্রেম'এর একটা আদর্শ উদাহরণ। আপনি যদি বুদ্ধি দিয়ে বা সাহস দিয়ে ওদের সাথে থাকেন, সেটাও কিন্তু দেশপ্রেম'ই। 

এখন, গালি দিবেন না তালি দিবেন, নাকি বুদ্ধি দিবেন - তা আপনার ডিসিশন। 

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

এই দুইজন মহিলা

"কি করিয়া তুমি রহিলা??? 
চুপচাপ সবই সহিলা!!!"

সজল নয়নে কহিলা -
"ভাই রে ...
জান কালা-কালা করে দিল শালা  
এই দুইজন মহিলা"
.
.
.
.
.
.
[আমার এক বন্ধুর দুই বউ। এই কবিতা শুধুই তাকে নিয়ে লেখা।]

"ভ্যাম্পায়ার্স মিট"

আমরাই বাংলাদেশের প্রথম এপিসোডটি ছিল অনলাইন বা সোশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কিভাবে জরুরি সময়ে রক্তের যোগান দেয়া যায়। এপিসোডটি করতে গিয়ে আমাদের সাথে পরিচিত একঝাঁক টগবগে তরুণ-তরুনীর যারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে রক্তদানে মানুষকে উত্সাহিত করতে। আমরা ওদের ডাকি "ভ্যাম্পায়ার" বলে  

আমরা এখন ফিল করতে পারছি যে রক্ত নিয়ে আবার একটা এপিসোড করা উচিত। তার আগে যেটা আমাদের প্রয়োজন, তা হলো আপনাদের সবার কাছ থেকে নানা ধরনের আইডিয়া। আমরা একটা "ভ্যাম্পায়ার্স মিট" করতে চাইছি, যেখানে আপনাদের পাঠানো আইডিয়াগুলো নিয়ে ভ্যাম্পায়ারদের সাথে আলাপ-আলোচনা হবে। এবং যেসব আইডিয়াকে প্রাকটিক্যাল মনে হবে, সেগুলো সবাইকে জানাতে আমরা একটা এপিসোড করব।

ভ্যাম্পায়ার'রা একটা কথা রেগুলার বলে "রক্তের অভাবে একটা মানুষকেও মরতে দিব না, ইনশাআল্লাহ"! আমরা ওদের সাথে আছি। ভালো ভালো আইডিয়া পাঠাতে থাকুন। দেখি না কতটুকু কি করতে পারি।

দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা?

আমরাই তো বাংলাদেশ।