বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ও এম জি!!!

৮৯.৬ জানি কোনটা? রেডিও টুডে না? 

যাই হোক, ঐটাতে দুপুর বেলা একটা প্রোগ্রাম হয়। গত পরশু আমার মেয়ে জয়ীকে স্কুল থেকে আনার সময় শুনছিলাম। প্রোগ্রামটার নাম হলো "ও এম জি"; উপস্থাপনা করে দু'জন মেয়ে আরজে। একজনের নাম ক্ষানিইজ (আসল নাম মনে হয় কানিজ), আরেকজনের এইঞ্জেলিইন (মনে হয় অ্যাঞ্জেলিন) ।  

তাদের কথোপকথনের কিছুটা পার্ট তুলে ধরছি। এক বিন্দুও মিথ্যা না।  উপরে আল্লাহ, নিচে জয়ী সাক্ষী। কথোপকথনটা ব্যাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে, হাত নেড়ে নেড়ে, দুলে দুলে পড়লে বেশি ফিল পাবেন। 

-------------------

এইঞ্জেলিইন: ও এম জি ক্ষানিইজ, তুমি এখনো একবাড়ও তোমাড় বান্ধবী দীপিকা, ক্যাটড়িনা আড় কাড়িনা কে নিয়ে কিছু বললা না? হাউজ দ্যাট পসিবল? 

ক্ষানিইজ: ও এম জি!!!!! ড়িয়ালি!!!! আমি কিভ্যাবে এঠা ভুলে গেলাম এইঞ্জেলিইন !!! শিট। শোনো না কি হইসে। আজকে সকালেই তো আমাকে কাড়িনা ফোন কড়লো। শি ওয়াজ সোওওও টেন্সড, ইউ নো। 

এইঞ্জেলিইন: টেন্সড? হোয়াই? হোয়াস্সাপ উইথ হার?

ক্ষানিইজ:  তুমি ঝানো না? ও এম জি!!! ওড় তো আড় জিড়ো ফিগাড় নাই, বুঝলা। ওর ফিগাড়ের সাথে অ্যাড হইসে আড়ও কতগুলা জিড়ো। হা হা হা, এখন তো সাইফ আড় ওকে পাত্তাই দেয় না।  কি অফুল অবস্থা, তাই না?

এইঞ্জেলিইন: ও এম জি!!! সিরিয়াসলি কাড়িনা তোমাকে এগুলা বলসে? আআআই ডোন্ট বিলিভ দিস!"  .........

------------------

বোন কানিজ, বোন অ্যাঞ্জেলিন, তোমাদের উপর আমার কোনো অভিযোগ নাই।  তোমাদের এই বয়সে তোমরা তো একটু-আধটু পাগলামি করতেই পারো।

কিন্তু যদি এই লেখাটা তোমাদের  কারো চোখে পরে, আমার একটা উপকার কোরো। তোমাদের প্রোগ্রামের যে হেড, তাকে আমার হয়ে একটু বলে দিও, রাস্তাঘাটে সাবধানে বের হতে।

যদি কখনো সামনে পাই, পার্মানেন্টলি ব্যাঁকা বানিয়ে দিব।  তখন হাত নেড়ে নেড়ে, দুলে দুলে কথা বলা ছাড়া তার আর কোনো উপায় থাকবে না।  

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আমার হরেন নষ্ট রে ভাই

একটা ছোটখাটো পুলসেরাত পার হয়ে আসলাম রে ভাই। স্কুল ছুটির সময় গ্রিন রোড, ধানমন্ডি এসব এলাকায় ঘুরেছেন কখনো? জ্যামটা কেমন বলেন তো? 

মেয়েকে স্কুল থেকে তুলতে যাব, গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। একটু দূর গিয়ে দেখি গাড়ির হর্ন নষ্ট। পুরা বোবা, নো সাউন্ড!

এইবার বোঝেন ঠ্যালা। রাস্তাভর্তি রিকশার জ্যাম। চান্স পেলেই সবাই পুৎ করে বেলাইনে রিকশার মাথা ঢুকিয়ে দেয়। তার মাঝে আমার বোবা গাড়ি! গাড়ি যে আসলেই চলে না, চলে না, চলে না রে, গাড়ি চলে না :( 

তারপর কি হলো জানেন? সবাই দেখলো, লাল একটা গাড়ি থেকে নীল পাঞ্জাবি পরা মোটাতাজা একটা ড্রাইভার তরকারীওয়ালাদের মত গলা করে থেকে থেকেই আওয়াজ দিচ্ছে ....

"হরেন ভাই হরেন। আমার হরেন নষ্ট রে ভাই। একটু হরেন না রে ভাই, এমন করেন ক্যান ...."

(*এই স্টেটাসটার আরেকটা মাজেজা আছে। সেটা পরে বলব। )

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি।

গভ্ট ইনফো থেকে আজ সকালে এই মেসেজটা কে কে পেয়েছেন?

"আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০০৯ সালের এই দিনে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম হত্যাযজ্ঞে আমরা হারিয়েছিলাম ৫৭ জন সেনা সদস্যসহ মোট ৭৪ জন বাংলাদেশীকে। সেসময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার হিসেবে এই ব্যর্থতার সকল দ্বায়ভার স্বীকার করে নিয়ে সকলের কাছে অনুরোধ করছি নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোআ করতে। মানুষ হিসেবে, বাংলাদেশী হিসেবে আমরা লজ্জিত। - গভ্ট অফ পিপল্স রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ।"

........

কি বলেন? আপনি পান নাই এই এসএমএস? সিরিয়াসলি? 
.........

আমিও পাই নাই। ইন ফ্যাক্ট, কেউই পায় নাই। 

কারণ, এমন কোনো মেসেজ আসলে গভ্ট ইনফো থেকে পাঠানোই হয় নাই।  কিন্তু পাঠালে ভালো হতো না?  

কিছু কিছু ঘটনা বারবার মনে করিয়ে দেয়া উচিত। কিছু কিছু দুঃস্বপ্ন মনে করে বারবার আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। 

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

"গু"-চর্চা

কালকে খুব পছন্দের এক সেলেব্রিটিকে ন্যাশনাল মিডিয়াতে "গু"-চর্চা করতে দেখার পর থেকে খুব কনফিউজড লাগছে। 

সাকিব ক্যামেরার সামনে অশোভন ভঙ্গি করলো। তার শাস্তি হলো। আমরাও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালাম। অবশ্যই সাকিবের মত আইকনের এমন করা উচিত হয় নাই। সাকিব'ও ভুল বুঝতে পেরেছে, অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাও চেয়েছে।

কিছুদিন আগে এক স্কুলে কি এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এক এমপি (নাকি মন্ত্রী?) সিগারেট খেয়েছেন। সেই ছবি নিয়ে ছি ছি রব উঠেছে। আমরাও সোচ্চার হয়েছি যে তার এই কাজটি খারাপ হয়েছে। তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এমন ভুল আর হবে না বলে প্রমিস করেছেন। 

গতকাল রাতে ৭১ টিভিতে একটা টকশো দেখছিলাম। কাছের এবং পছন্দের মানুষরা এসেছে কথা বলতে, তাই আগ্রহ নিয়েই দেখছিলাম। টপিক হলো - সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, চ্যানেল বানিজ্য, আমাদের অনুষ্ঠানের কোয়ালিটি ইত্যাদি। বেশ স্বতস্ফুর্ত আলোচনা হচ্ছে, আমি মনোযোগ দিয়ে শুনছি। 

এ সময়ের একজন প্রতিভাবান নাটক নির্মাতাও আছেন প্যানেলে, যার বানানো নাটকের আমি বিশাল ফ্যান। তাকে একটা প্রশ্ন করা হলো - "আপনি যে নাটকগুলো বানান, সেগুলোর প্যাকেজিং নিয়ে কি আপনি খুশি?" উনি জবাব দেয়া শুরু করলেন এভাবে, "দেখেন, আমরা বেসিকালি গু নাটক বানাই।  আমাদের বেশির ভাগ নাটকই হয় গু'এর মত. ..." (এক্স্যাক্ট শব্দগুলো হয়ত মনে নাই, কিন্তু গু শব্দটা বড়ই বোল্ডলি উচ্চারণ করছিলেন তিনি)

বাকি অতিথিরা দেখলাম হালকা মুচকি হাসি দিয়ে ব্যাপারটাকে হালকা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু, আমি ওই গু'তেই আটকে গেলাম। একটা ন্যাশনাল মিডিয়াতে এতগুলো জ্ঞানী-গুনি মানুষের মধ্যে বসে এই শব্দটা কি ব্যবহার না করলেই চলত না? ওনার কাজের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, উনি বোধহয় কোনটা ক্যাজুয়াল স্মার্টনেস আর কোনটা রুচিহীন নোংরামি - সেই পার্থক্যটা ধরতে পারেন নি।  

ভাই রে, গ্রেট পাওয়ার কামস উইথ গ্রেট রেসপনসিবিলিটি। সাকিবের তুলনায় এই নাট্যনির্মাতা হয়ত খুবই ক্ষুদ্র তারকা, তাই হয়ত তার দ্বায়ভার কিছুটা কম।  কিন্তু আমি শিওর, অন্তত তরুণ মহলে ওই বিড়িখেকো এমপির চেয়ে এই নাট্যনির্মাতার গ্রহণযোগ্যতা বেশি। ইউথের উপর তার ইনফ্লুয়েন্সও ডেফিনিটলি বেশি। 

তর্কে যাচ্ছিনা। সাকিবের বা এমপি সাহেবের আচরণ যেমন কুরুচিসম্পন্ন এবং লজ্জাজনক, আমার কাছে এই নাত্যনির্মাতার শব্দচয়নও নিতান্তই সস্তা নোংরামি। 

প্রথমেই কনফিউজড বলেছিলাম কেন জানেন? কেন জানি মনে হচ্ছে, এই ইস্যুতে বেশির ভাগ মানুষকেই আমি আমার বিপক্ষে পাব। এই সেলেব্রিটি কখনই ক্ষমা চাইবে না। উল্টা তার পক্ষের লোকজন আমাকে উপদেশ দিবে, "কুল ডাউন ম্যান, কথায় কথায় শিট যদি বলতে পারি, গু বললে দোষ কোথায়? আপনে মিয়া হুদাই ত্যানা প্যাচান। ইন ফ্যাক্ট ইট্স ফেব্রুয়ারি মান্থ, উই অল শুড ইউজ বাংলা ওয়ার্ডস। " আরো খারাপ কথাও বলবে ওস্তাদ যদি টিভি মিডিয়াতেই গু বলতে পারে, মুরিদরা তো সোশাল মিডিয়াতে যা খুশি বলতেই পারে। 

যাই হোক, আমি দুঃখিত। ত্যানা প্যাচানোর জন্য না।  এই স্টেটাস'এ বাধ্য হয়ে "গু" শব্দটা ব্যবহার করেছি বলে।   

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বাঙালি জাতির ল.সা.গু.

জীয়নের মত একটা ত্যান্দর পোলা যে বাসায় থাকে, সেখানে এন্টারটেইনমেন্টের কোনো অভাব নাই।  বর্তমান এন্টারটেইনমেন্টের নাম "ক্রমাগত প্রশ্নোত্তর পর্ব"।

প্রশ্ন: বলতো বাবা, আপুনি সকালে কোথায় যায়?
উত্তর: আপুনি ইত্তুলে দায়।  
প্রশ্ন: মা কোথায় যায়?
উত্তর: মা অপিতে দায়। 
প্রশ্ন: বাপ্পু কোথায় যায়? (বাপ্পু আমার খালা, সিটি কলেজের টিচার) 
উত্তর: বাপ্পু তলেদে দায়।  
প্রশ্ন: বেনি চাচী কোথায় যায়? (বেনি আমার খালাতো ভাইয়ের বউ।  ডাক্তার।)
উত্তর: বেনি তাতি হাপ্পাতালে দায়।  

এভাবে একের পর এক কঠিন কঠিন প্রশ্নের ইউনিক সব জবাব ঠিকঠাক ভাবে দিয়ে জীয়ন সবাইকে মুগ্ধ করতে থাকে। 

কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ড প্রশ্ন শুরু হলেই বিপদ। কোনো এক রহস্যময় কারণে সব প্রশ্নের একই জবাব আসতে শুরু করে।  

প্রশ্ন: বলতো বাবা, আপুনি স্কুলে গিয়ে কি করে? 
উত্তর: আপুনি ইত্তুলে গিয়ে ধুমায়।  
প্রশ্ন: মা অফিসে গিয়ে কি করে?
উত্তর: মা অপিতে গিয়ে ধুমায়। .... বাপ্পু তলেদে গিয়ে ধুমায়। .....  বেনি তাতি হাপ্পাতালে গিয়ে ধুমায়। .... সবাইইইইই ধুমায়। .....

কি বেইজ্জতি ব্যাপার রে ভাই।  বাঙালি জাতির ল.সা.গু. যদি কেউ ২০ মাস বয়সেই শিখে ফেলে, টেনশন না? 


আপনাদের এইবার ঘটনাটা বুঝাই।

এমন হয় রে ভাই।  এমন হতেই পারে। আপনাদের একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। 

ধরেন, আপনি একজন মোটামুটি লেভেলের ছাত্র। এইবার ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষার জন্য আপনার প্রস্তুতি ভালো। প্রথম পরীক্ষা দিতে গেলেন। কিসুই কমন পড়ল না, রাম-ছ্যাকা যাকে বলে। আপনি প্রথম ধাক্কা খেলেন। মন খারাপ করলেন। কিন্তু মনোবল হারালেন না।   ........ এইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার প্রথম টেস্ট।  

মন-টন ঠিকঠাক করে পরের পরীক্ষা দিতে গেলেন। মাশাল্লাহ পরীক্ষা ভালই হলো।  কনফিডেন্স আবার ফিরে আসল।  আপনি ভাবা শুরু করলেন, জাশ্শালা, এইবার আব্বারে দেখায়ে দিব আরো ভালো রেসাল্ট করে।  ..... এইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার দ্বিতীয় টেস্ট।  

মহা মুডে তৃতীয় পরীক্ষা দিতে গেলেন। হাফ ইউনিট পরীক্ষা, ভ্যাজাল কম, কোশ্চেন কমন, নরম-শরম স্যার ডিউটিতে - কনফার্ম এই পরীক্ষায় আপনি ফাটিয়ে ফেলবেন। কিন্তু কি জানি কি হলো, মাঝ পরীক্ষায় আপনার পেটে চিপ দিল, শুরু হলো বাত্তুম। উপুর্যুপুরি, বারবার। অর্ধেক খাতা খালি রেখে অশ্রুসজল চোখে হল ত্যাগ করলেন। ..... এইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার প্রথম টি-টুয়েন্টি।  

ইমোটিল খেয়ে ছিপি এঁটে পরের পরীক্ষা দিতে গেলেন, এটাও ছোট পরীক্ষা। কোশ্চেনও কমন পড়ল। ভালই চলছিল সব।  কিন্তু পরিনতি সেইম, ডায়রিয়া ইজ দা নেইম অফ দা গেইম। অর্ধেক খাতা খালি রেখে ভগ্নমনোরথ হয়ে বাড়ি ফিরে আসলেন। ..... এইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি।  

আপনি গান শোনা শুরু করলেন - "ভাঙ্গা মন নিয়ে তুমি আর কেঁদো না ... " 

কান্না থামিয়ে আবার রেডি হলেন। শেষ ৩টা পরীক্ষা। এই সাবজেক্টগুলা আপনার ফেভারিট। প্রতিবছর এগুলাতে আপনি ভালো করেন। সুতরাং, ভাবলেন শেষ চেষ্টাটা করে দেখি। 

গেলেন পরীক্ষার হলে। কোশ্চেন দেখে আনন্দে চোখে পানি। পানির মত সোজা। খেয়ে-না-খেয়ে লিখতে শুরু করলেন। যখন সবে ভাবতে শুরু করেছেন যে এইবার এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালাইবেন, ঠিক তখনি শোনেন পেট থেকে গুরগুর আওয়াজ। ওহ শিট, ডায়পার তো পরা হয়নি। উফ, আবারও বাত্তুম। উপুর্যুপুরি, বারবার। অর্ধেক খাতা খালি রেখে আবারও হল ত্যাগ করলেন। .....এইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার প্রথম ওয়ানডে।  

তারপর কি আর মনোবল কিছু অবশিষ্ট থাকে, বলেন? চিন্তা এখন একটাই, মরার পরীক্ষা শেষ হয় না ক্যান? 

যাই হোক।  ভাঙ্গা মন নিয়ে, ইয়া নফসি ইয়া নফসি করতে করতে শেষ দুইটা পরীক্ষাও দিলেন। বেগ তখন কন্ট্রোলে, কিন্তু শরীর-মন দুর্বল। দুর্বলতার কাছে হার মানলো আবেগ। শেষ দু'টি পরীক্ষার ফলাফলও সেইম। ডায়রিয়া ইজ দা নেইম অফ দা গেইম। .....এই দুইটা ছিল বাংলাদেশ-শ্রীলংকার দ্বিতীয় আর তৃতীয় ওয়ানডে।  

শেষ কথা: 
-----------

পরীক্ষা শেষ। কিন্তু .....

এইটা ছিল ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষা। সামনে আসছে সেকেন্ড টার্ম আর ফাইনাল। 

ইমোটিল এখন থেকেই খাওয়া শুরু করেন। মন শক্ত করেন। ভালমত প্রস্তুতি নেন। 

ইনশাআল্লাহ, পরেরবারও ডায়রিয়া হবে। তবে আপনার না। অন্যদের। 

শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সাকিব

উই আর এ ড্যাম প্রাউড পোলারাইজড নেশন। 

না, আমি পুরা দেশের কথা বলছি না।  কিন্তু ইহা প্রমানিত যে, এই ফেইসবুক দুনিয়ার বাসিন্দাদের যেকোনো ইস্যুতে দুই ভাগ হয়ে যেতে এক মুহূর্তও লাগে না।  নাস্তিক-আস্তিক'এর দলাদলি  তো সেই কবে থেকে। ভাষা নিয়েও মাশাল্লাহ ভালই ভাগাভাগি দেখছি - ভাষাকে কি বহতা নদীর মত বয়ে যেতে দেয়া উচিত নাকি ভাষাকে যক্ষের ধনের মত আগলে রাখা উচিত, সে নিয়েও দেখলাম জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা। রিসেন্ট ক্রেজ "গুন্ডে"র গুন্ডামির প্রতিবাদ করাটা কি কাজের কাজ হলো, নাকি ভ্যারেন্ডা ভাজা হলো সে নিয়েও ফেইসবুক দুইভাগ। 

এইবার শুরু হলো সাকিব-সাকিব খেলা। কানামাছি মিথ্যা, নাকি কানামাছি সত্য? কানামাছি তুমি আমি যে যার মত থাকার তুই কে রে শালা? 

পারিও ভাই আমরা! ব্রাভো।  

দুইটা জিনিস শিখলাম: 

১. ইন্টারনেটে যেকোনো ইস্যু নিয়ে চিল্লাফাল্লা করতে আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। একদিনের মধ্যে একটা মুভিকে ৬.১ রেটিং থেকে কুপিয়ে ১.২তে নামিয়ে আনা পসিবল হয়েছে হয়ত কোপাকুপিটা তর্জনীনির্ভর ছিল বলেই। পজিটিভলি নিতে চাই ব্যাপারটাকে। একটা কমিটি তৈরী করে লেট্স ফাইন্ড আউট কি কি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড আছে যেগুলা ইন্টারনেট এবং জনসংখ্যা নির্ভর। সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে।  ইনশাল্লাহ। (* এত বেশি বেকার ইন্টারনেট ইউজার আর কোনো দেশে আছে বলে মনে হয়না। ইয়ে... মানে... আমিও কিন্তু এদেরই একজন। এবং এক্ষেত্রে একমাত্র কম্পিটিশন শুধুমাত্র বড়ভাই ইন্ডিয়াই হতে পারে) 

২. বাংলাদেশ আওয়ামীলিগ কিন্তু জোশ দেশ চালাচ্ছে। । বলুন তো, শেষ কবে আমরা, মানে ফেইসবুক-ভিত্তিক পাকনা-জনগোষ্ঠী সরকার বা সরকারী দলের কোনো এমপি-মন্ত্রীর পিন্ডি চট্কেছি? এক দুষ্টু এমপি বিড়ি খেয়ে সরি বলার পর আর কোনো দুষ্টামি তারা করেছে বলে তো মনে পড়ছে না। পাকনা গ্রুপ এত লক্ষী আগে কবে ছিল তা মনে হয় খোদ সরকারের ওপরওয়ালারাও মনে করতে পারবেন না। 

শেষকথা: 

ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, বসন্তকে যেমন আসতেই হয়; সাকিব থাকুক আর না থাকুক, লেট্স শো দা লঙ্কানস - বানর যখন বাঘের লেজ ধরে টান দেয়, বাঘ তখন সিংহকেও ছেড়ে কথা বলে না।

আমার এই কোথায় ফেইসবুকবাসী দুই ভাগ হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। 

এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি

এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি'তে আমি স্বার্থপরের মত নিজেকে নিয়ে থাকতে চাই।  

ভাষা কোথায় ভেসে গেল, অন্তত আজকে আমি সেটা নিয়ে বিচলিত না।  কোন হিন্দী ছবি বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করেছে, আর তা নিয়ে সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করছে, অন্তত আজকে আমি সেটা নিয়ে চিন্তিত না।  বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সাথে এখন কি করা উচিত, এই মুহুর্তে সেটা আমার মগজের ক্ষুদ্রতম জায়গা জুড়েও নাই।  

আমার কাছে এবারের একুশের ফেব্রুয়ারি মানে একুশে জানুয়ারির এক মাস পূর্তি। 

এক মাস আগের ঠিক এই দিনটার এই সময়টাতে নিচতলার গ্যারেজে মসজিদ থেকে নিয়ে আসা একটা খাটিয়াতে আম্মা শুয়ে ছিলেন। আর কিছুক্ষণ পর আমরা সবাই মিলে আম্মাকে বনানীতে রেখে আসতে গিয়েছিলাম। চিরতরে।

এই দিনটা আমি একান্তই স্বার্থপরের মত একা একা আম্মাকে নিয়ে থাকতে চাই।  

আমার এই আচরণ নরমাল নাকি অ্যাবনরমাল, সেটা নিয়েও আমি বিন্দুমাত্র বিব্রত নই।  

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

একটা মাস চলে গেল

"তুমি বড় ছেলে। তুমি ভেঙ্গে পড়লে কিভাবে চলবে? শক্ত থাকতে হবে তোমাকে, সবার জন্য।"

শক্ত থাকতে থাকতে একটা মাস চলে গেল আম্মা।

তোমার কথা ভেবে একটু মন খুলে কাঁদতেও পারি নাই।  

আমাকে একটু ভেঙ্গে পড়তে দেয়া যায়?

আমি একটু প্রাণভরে কাঁদতে চাই।  

বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

স্মার্টনেস ইস ইন লোল রে ডুউউউড ...

বিভিন্ন সময়ে ভাষার ব্যবহার: 

সিচুয়েশন: একের দোষ অন্যের উপর চাপানো বোঝাতে
------------------------------------------------------- 
বাপ-চাচাদের সময়: কাঁচ ভাঙ্গিলাম আমি, অথচ প্রহার গুনিতে হইলো ওয়াসিমকে! "উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে" ভালই চাপাইলাম।  কি বল হে আবুল বাতেন?

আমাদের সময়: হি হি, কাঁচ ভাঙলাম আমি, আর মাইর খাইল ওয়াসিম্মা। কিলিকবাজিটা কিন্তু সেইইরকম হইসে। কি কস রে বাতেইন্না? 

প্রায় চলে এসেছে যে সময়: লোল, লোল, লোল, মি রক্স, সিম শক্স, লোল লোল লোল।  হোয়াট সে এইবি ডুউউউড? 

সিচুয়েশন: কেউ ভন্ড সেটা বোঝাতে 
------------------------------------------------------- 
বাপ-চাচাদের সময়: আমাকে ভয় দেখাইতে আসিয়াছে ওয়াসিম? সে যে তুলসী বনের বাঘ ব্যতীত কিছুই নহে, তাহা কি আমি জানি না হে আবুল বাতেন? 

আমাদের সময়: কস কি মমিন? ওয়াসিম্মা আইসে আমারে থ্রেট দিতে? হা হা হা, ওয় যে একটা ধৈনচা, এইটা কি আমার জানতে বাকি আসে রে বাতেইন্না? 

প্রায় চলে এসেছে যে সময়: লোল, লোল, লোল, মি রক্স, সিম শক্স, লোল লোল লোল।  হোয়াট সে এইবি ডুউউউড? 

সিচুয়েশন: সত্য যে গোপন থাকে না - তা বোঝাতে 
------------------------------------------------------- 
বাপ-চাচাদের সময়: ধর্মের কল বাতাসে নড়ে হে আবুল বাতেন। ওয়াসিম যে এক দু'মুখ সর্প, আমার এক কথাতেই আজ তাহা সর্বজনে জানিয়া গিয়াছে। 

আমাদের সময়: বুঝলি রে বাতেইন্না, আকাশে থুতু দিলে নিজের শইল্লেই পরে। ওয়াসিম্মারে দিসি এইবার ভরা মজলিশে ন্যাংটা কইরা। মামা অখন পুরাই মাইনকা চিপায়। 

প্রায় চলে এসেছে যে সময়: লোল, লোল, লোল, মি রক্স, সিম শক্স, লোল লোল লোল। হোয়াট সে এইবি ডুউউউড? 

ভাষা কি তবে ভেসেই যাচ্ছে বানভাসি জলে? নাকি সমস্বরে আমাদের সবার বলা উচিত - 

স্মার্টনেস ইস ইন লোল রে ডুউউউড ... 

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

উত্তেজনা

ছোটবেলায় একবার গোলকিপার হওয়ার ইচ্ছা হলো। বাসার উঠানে ছোট ভাইকে নিয়ে শুরু করলাম প্র্যাকটিস। পিচ্চি ছোটভাই দুব্বল-দুব্বল শট মারে, আমি অনায়াসে ধরে ফেলি। ধুর, কোনো মজাই নাই। নতুন বুদ্ধি বের করলাম। আমি দাঁড়াব গোলপোস্টের একদম ডানদিকে, ছোটভাই শট নিবে একদম বামদিকে। তারপর আমি ডাইভ দিয়ে বল ধরব; হেভি উত্তেজনা হবে। 

উত্তেজনা আনার জন্য সহজ খেলাটাকে কঠিন করে কাজের কাজ একটাই হয়েছিল, পিচ্চি ভাই চামে-চিকনে আমার গোলপোস্টে বেশ কয়েকবার বল ঠিকই ঢুকাতে সাকসেসফুল হয়েছিল। 

বিশ্বাস করি, শুধুমাত্র উত্তেজনা বাড়ানোর জন্যই, মানে ... দর্শকদের মজা দেয়ার জন্যই বাঘের বাচ্চাগুলা আজকের সহজ খেলাটাকে কঠিন করে তুলেছে। 

দোআ করি, ফাঁক গলে যেন ওয়ান ডে'তেও গোল খেয়ে না যাই।

সামনে ভালো দিন আসছে।

কিছু মানুষের কমেন্ট পড়ে মেজাজ চরম গরম হয়ে আছে। কিছু জিনিস ক্লিয়ারলি বলি। 

১. আমি আগেও ক্রিকেটারদের পক্ষে ছিলাম। এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। তাই ওদের দোষ দেয়ার বদলে কপালকে দোষ দিতেই আমি বেশি ভালো ফিল করি। ভাই রে, ওরাও ম্যাচ হারতে চায় না। ম্যাচ হারার কষ্ট আমাদের থেকে ওদের কম লাগে না। ম্যাচ হারার পর আমরা চোখের পানি মুছি, দুইটা গালি দেই, তারপর যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পরি। কিন্তু ওদের পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হয়, মন শক্ত করতে হয়, প্রতিজ্ঞা করতে হয় যেন পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ওদের জন্য পুরা রেসপেক্ট আমার সবসময় থাকবে।

২. আবেগের বশবর্তী হয়ে আমরা অনেক কিছু করি। সমালোচনা করি, গালাগালি করি - ইনফ্যাক্ট যাচ্ছেতাই ভাষায় গালাগালি করি (সাকিবের ফেইসবুক পেইজের কিছু কমেন্ট পরে মনে হলো লজ্জায় মরে যাই) ... একটা কথা শুধু মাথায় রেখেন, আমাদের ক্রিকেটাররা আমাদের দেশের অন্যান্য বেশির ভাগ পেশার মানুষদের মত বেশরম-বেহায়া না। যদি কোনদিন আমাদের এইসব কথা শুনে অভিমান করে সাকিব-মুশফিক-নাসির রা খেলা ছেড়ে দেয়, হাডুডু খেলা দেখবেন তখন পপকর্ন খেতে খেতে? মাইন্ড ইট, ওরা টাকার জন্য খেলে না। দেশের জন্য খেলে। ওদের কাছে থেকে চিনি বলেই কথাটা এত জোর গলায় বলতে পারলাম।

৩. ওদের হাতেই দেশ, ১৬ কোটি মানুষের আবেগ-হাসি-কষ্ট। আমরা কিন্তু 'কে কার ছেলে' বা 'কে কার মেয়ের জামাই' - এইসব দেখে এদের টিমে চান্স দেইনাই। এই স্টেজে ক্রিকেট খেলা গানের সিডি বের করা না যে জামাই চ্যানেলের মালিক হলেই গায়িকা হয়ে গেলাম। বা বই মেলায় বই বের করার মতও না যে আদর'এর সাথে চাদর মিলাতে পারি বলে একটা কবিতার বই বের করে ফেললাম। ওদের যোগ্যতা বলেই ওরা আজকে এই জায়গায়। ওদের উপর ভরসা রাখুন, নাহলে অন্য খেলা দেখেন।

৪. আবারও বলছি, সময়টা কেন জানি ভালো যাচ্ছে না। কিন্তু খুব শীঘ্রই ভালো সময় আসবে। আর যখন আসবে, শামসু কোপাবে, মুশফিক গ্যালারী মাতাবে, সাকিব মাঠ কাঁপাবে ... যে যে সামনে পরবে, কুকুরের মত জিব্বা বের করে হ্যা হ্যা করে হাঁপাবে।

সামনে ভালো দিন আসছে। বাজি লাগতে পারেন।

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আম্মাআআআ

হঠাত করে মনে হয় পাশের দেয়ালটা আসলে ছাদ। আর শরীরের নিচের বিছানাটা বরফের চাঁই।

ব্যথায় কুকড়ে ওঠে বুক, কপালের দু'পাশের রগগুলো দপদপ করে ওঠে অসহ্য যন্ত্রনায়।

জানালার ফাঁক গলে আসা সুর্যের আলো ছুরির মত বেঁধে চোখের মনিতে। পাক দিয়ে ওঠে মাথা, ছাদ-মেঝে-দেয়াল মাতালের মত ঘোরে।

গলার কাছে দলা পাকিয়ে থাকে টিউমার'এর মত কি একটা; ঢোক গিলতে গেলে ব্যথা পাই।

চোখ দিয়ে বেয়ে বেয়ে পরে মায়া, নোনতা স্বাদের মায়া।

শুনতে পাই না, শুধু অনুভব করতে পারি। বুকের কোনো এক গোপন কুঠুরি থেকে কে যেন "আম্মাআআআ" বলে চিত্কার করে ওঠে।  

আর চোখ দিয়ে শুধু বেয়ে বেয়ে পরে মায়া, নোনতা স্বাদের মায়া ...

............................

আজকে আম্মার চলে যাওয়ার ৪০ দিন।  কে কে জানি বলেছিল, ৪০ দিনের পর থেকে নাকি সবকিছু ঠিক হয়ে যেতে শুরু করে। 

আমি জানি, এটা শুধুই স্বান্তনা দেয়ার জন্য বলা।  

জানি, আসলে কিছুই ঠিক হবেনা। কোনোকিছু ঠিক হতেই পারে না।  

ভালো থেকো আম্মা। 

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ফুড পয়জনিং

আমাদের বাসার অবস্থা বেশ খারাপ। 

গত দুইদিন ধরে আব্বা আর জয়ী'র ফুড পয়জনিং, দু'জনই প্রচন্ড উইক। জীয়ন যা খাচ্ছে, তাই বমি করে দিচ্ছে। আজকে থেকে হাসিবের শরীরও খারাপ - সেইম ফুড পয়জনিং। অবস্থা আসলেই বেশ খারাপ আমাদের সবার। 

তো ... আমরা ইনভেস্টিগেশন করতে বসলাম - কাহিনী কি? সবার কেন একই সময় এমন হলো।  নাহ, বাইরের খাবার তো খাওয়া হয়নাই, জার্মটা তাহলে আসল কোত্থেকে? 

দীর্ঘ আলোচনা, পর্যালোচনা, অনুসন্ধান শেষে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেল যে আমাদের নিউকামার বুয়া অনেক ফাঁকিবাজ; সে নিশ্চয়ই পানি ঠিকমত ফুটায় নাই।  মানে, বলেছে ফুটিয়েছে, কিন্তু সত্যি সত্যি ফুটায় নাই।  

যুক্তিতে জোর আছে, আমরা সবাই কনভিন্সড। 

তারপর শুরু হলো দোষটা আসলে কার সেই অ্যানালাইসিস। আমরা নতুন বুয়া'র গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলাম। কিন্তু আমার বউ সব দোষ নিজের কাঁধে নিয়ে নিল - "নাহ, আমারই উচিত হয় নাই মহিলার কথা বিশ্বাস করা।  ওর চোখে-মুখে ফাঁকিবাজি; ইশ্শ, ক্যান যে নিজে চেক করলাম না!" 

আমার খালা বৌএর সাথে একমত হলো - "আসলেই, পানি ফুটানোর ব্যাপারে কাউরে বিশ্বাস করবা না। বাসায় যেহেতু বাচ্চা আছে, এই কাজটা নিজের হাতে করবা।"

খালা যেহেতু টিচার মানুষ এবং আমার বউ'কে অনেক আদর করে, তার কথায় আমার বউ আরো কনভিন্সড হলো যে দোষটা আসলে ওরই।  

............

ওয়েইট ওয়েইট ওয়েইট ... 

কি সুন্দর করেই না আমরা নিজেরা নিজেরাই দোষ ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। যে পানির জন্যে আজকে বাসাশুদ্ধ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ল, সেজন্য আমরা কেউ ওয়াসা'কে দোষ দেয়ার কথা ভাবছি না!!!

অ্যাজ ইফ, ওয়াসা'র পানিতে তো জার্ম থাকতেই পারে। ওদের কি দোষ? বাসায় পানি যে পাচ্ছি, এই কি বেশি না? 

...........

কে বলে আমরা শুধু সরকারের সমালোচনা করি? জার্ম-ভর্তি ওয়াসা বা ননপ্রোডাক্টিভ স্পার্ম-ভর্তি বিটিভি'র মত সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে তো আমরাই আদরে-সোহাগে সকল সমালোচনা থেকে আড়াল করে রেখেছি। 

লেট্স বাই এ নিউ ওয়াটার ফিল্টার এন্ড ফায়ার দা বুয়া। প্রবলেম সলভড।  কেইস ডিসমিসড।  

বউ-মেলা

তাজ্জব ব্যাপার! 

আইফোনে যতবারই "বইমেলা" লিখতে যাই, অটো-কারেকশনে সেটা "বউ-মেলা" হয়ে যায়!

মোবাইল ফোনের অটো-কারেকশন সিস্টেম আমার সাবকনশাস মাইন্ড'এর গোপন ইচ্ছাটা ক্যামনে বুঝে ফেলতেসে, সেটাই বুঝতে পারছি না।  

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভ্যালেন্টাইন ডে

গভ্ট ইনফো আজকে একটা গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ পাঠিয়েছে।

"বি কেয়ারফুল!
অর্থ: খুব সাবধান! (আশ্চর্যবোধক চিহ্ন)

গার্লস অ্যান্ড বয়েজ ডোন্ট ম্যারি বিফোর ১৮ & ২১ ইয়ার্স রেস্পেক্টিভলি।
অর্থ: মেয়েরা এবং ছেলেরা পরস্পরকে যথাক্রমে ১৮ এবং ২১ বছর হওয়ার আগে বিয়ে করবে না। (মেয়েরা-মেয়েরা বা ছেলেরা-ছেলেরা কি করতে পারবে গভ্ট ইনফো ভাইয়া?)

ইট্স আন-ল'ফুল & হার্মফুল ফর ফিজিক্যাল & মেন্টাল ডেভেলপমেন্ট -
অর্থ: ইহা শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধির জন্য বেআইনি এবং ক্ষতিকর। (বুজছো তো, ভীষণ সাবধান কিন্তু)

-- এম/ও উইমেন & চিলড্রেন অ্যাফেয়ার্স
অর্থ: মাদার অফ মহিলা এবং শিশু সম্পর্ক

ভ্যালেন্টাইন ডে'র ঠিক আগের দিন এই মেসেজ পাঠানোর সঠিক মাজেজাটা যদিও ঠিক বুঝতে পারলাম না।

যাই হোক, গভ্ট ইনফো যেহেতু বলেছে, সেটা মেনে চলাই ভালো।

সুতরাং, মনের সুখে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন কর বন্ধুরা। শুধু ১৮ আর ২১ না হলে বিয়ে কইরো না।

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বতা আর তোতা

বাবা বতা দেয়, আর মা তোতা দেয় 
------------------------------------

আমি আর পূনম জীয়নকে দুইভাবে শাসন করি। শাসনটাকে আমি মোটামুটি বকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখি, কিন্তু পূনম মাঝেমধ্যে আঙ্গুল দিয়ে জীয়নের হাতের তালুতে টোকা মারে। 

এটার বর্ণনা জীয়ন এভাবে দেয়: 

"বাবা, আঙ্গুল মুখে দিলে বাবা কি করে?"
"বাবা বতা দেয়"
"আর মা কি করে?" 
"মা তোতা দেয়। বাবু ব্যাতা পায়"

----------------------------------

জরুরি বিজ্ঞপ্তি: কেউ আমাকে ফোন করলে দয়া করে একটু জোরে কথা বলবেন। কাল রাতে জীয়ন আমার ফোনটা সুজির মধ্যে ফেলে দিসে।

বতা দিয়েও কোনো লাভ হয় নাই।

আব্বার সাথে নতুন জীবন

আব্বার সাথে আমাদের একটা নতুন জীবন শুরু হয়েছে।  

প্রতিদিন আমরা আব্বা সম্পর্কে নতুন নতুন জিনিস জানছি। জগন্নাথ কলেজের ডাকসাইটে জিওগ্রাফির হেড অফ ডিপার্টমেন্ট যে অনেকদিন ধরেই একটা শিশুর জীবন যাপন করছিলেন, সেটা কিছুটা জানতাম। এখন পুরাপুরি জানতে পারছি। আব্বা এখন পুরোপুরি একজন ৭৯ বছরের শিশু। 

আম্মার উপর যে আব্বা ১০০% ডিপেন্ডেন্ট ছিলেন সেটা বললে কম করে বলা হবে।  আব্বা আসলেই জানেন না তার শার্ট কোথায় থাকে, ওষুধ কোথায় থাকে। এমনকি আব্বার পেনশনের বই কোথায় থাকে, তিনি সেটাও জানেন না।  আম্মা চলে যাওয়ার পর থেকে প্রতিদিন আমরা নতুন করে এসব খুঁজছি। কিছু খুঁজে পাচ্ছি, কিছু পাচ্ছি না।  

সবচেয়ে বেশি অসুবিধা যেটা হচ্ছে, সেটা হলো, প্রতি পদে পদে প্রমান পাচ্ছি যে আব্বা আমাদের দুই পয়সাও বিশ্বাস করেন না।  একটা ছোট উদাহরণ দিই।  

আব্বার ৩ বেলার ওষুধ আমরা আলাদা আলাদা করে গুছিয়ে রাখি, যেন যখন যে সাথে থাকে সে যেন খাইয়ে দিতে পারে। ধরেন, বুয়া রাতে খাওয়ার পর আব্বাকে তার ওষুধগুলো দিল।  আব্বা না খেয়ে বসে থাকবেন। আমি আসলে আমাকে দেখাবেন, "দ্যাখ তো, জোহরা ঠিক ওষুধগুলো দিল কিনা।" আমি দেখে বললাম, "ঠিকই আছে আব্বা, খেয়ে নাও।" একটু পর হাসিব আসল, খেয়াল করলাম হাসিব'কেও তিনি একই প্রশ্ন করছেন "দ্যাখ তো, এগুলাই রাতের ওষুধ কি না।" ৩/৪ জনের ভেরিফিকেশন ছাড়া উনি কিছুতেই ঠিক ভরসা পান না।  

অথচ আম্মা অসুধ্গুলোর দিকে না তাকিয়ে বলে দিলেও আব্বা অন্ধের মত বিশ্বাস করে সেগুলো খেয়ে নিতেন। 

ওনাকে আমি এজন্য কোনো দোষ দেইনা। এই "অবিশ্বাসের" আমি দুইটা মূল কারণ বের করেছি। 

১. আব্বার চোখে আমরা দু'ভাই এখনো ছোটই আছি। অথবা, 

২. বছরের পর বছর আব্বা আমাদের শুধুই নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখেছেন। আম্মাও তার সেবা করার খুব একটা সুযোগ আমাদের দেন নাই।  তাই হঠাত করেই তার দুই ছেলে "বাপের" প্রতি এত দায়িত্ববান হয়ে গেল, এটা তার কাছে কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। 

..............................

আত্মীয়স্বজন, মুরুব্বি, বন্ধুমহল - সবার কাছ থেকে জীবনে অনেক উপদেশ পেয়েছি। "সিগারেট ছেড়ে দাও", "নামাজ-কালাম, আল্লাহ-বিল্লাহ শুরু করো", "বাচ্চাদের আরো বেশি সময় দাও" ইত্যাদি ইত্যাদি। কেন যেন কেউ সেভাবে কখনো বলেনি - "বাবা-মা'কে আরো বেশি সময় দেয়া উচিত।" 

আরেকটু সময় দিলে আব্বা হয়ত আমাদের আরেকটু বিশ্বাস করতেন। আমাদের বলা কথাগুলো ভেরিফাই না করেই মেনে নিতেন। 

আমার আব্বার সাথে হয়ত আপনার আব্বার চেহারা মিলবে না। আপনার আম্মা হয়ত আমার আম্মার মত ওপারে চলে যাননি। কিন্তু এই বয়সে এসে সব বাবা-মা'র চাওয়া বোধহয় একটাই। সন্তানের কাছ থেকে আরেকটু বেশি সময়।

খুব কাছে থেকে দেখে এখন বুঝতে পারছি, এর থেকে বেশি ওনারা আসলেই আর কিছু চান না।  
  
আমাকে একথাগুলো কেউ বলে নাই।  অবশ্য, বললেও তখন শুনতাম কিনা জানি না।

আমি বলে আমার দায়িত্বটা পালন করলাম মাত্র। 

রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

এমন ফ্যানের আমি খ্যাতাপুরি।

জাভেদ ভাইয়ের স্টেটাস'এর সম্পূরক স্টেটাস:

আজকে প্রিয় জাভেদ কায়সার ভাই ফেইসবুক-লেখক হিসেবে তার প্রথম ভক্ত-দর্শনের আবেগী গল্প বলেছেন।

এইবার শোনেন আমার কাহিনী। 

-----------------

কিছুদিন আগের কথা। আব্বার রিপোর্ট দেখাতে ডাক্তারের কাছে যাব। গলি দিয়ে হাঁটছি আর রিকশা খুঁজছি। সামনে থেকে হেঁটে আসা একটা ছেলে হঠাত আমাকে থেকে থমকে দাঁড়ায়। চোখে-মুখে কেমন যেন ড্যাব-ড্যাবে মুগ্ধতা; অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। আমি এগিয়ে যেতে চাইলে সামনে এসে কথা বলা শুরু করে; 

"ভাইয়া, আমি আপনাকে চিনি।" 

"ও আচ্ছা।" আমি একটা ভদ্রতার হাসি দিই।  

"আমি আপনাকে ফেইসবুকে ফলো করি। আপনার লেখা আমার খুব ভালো লাগে।"

জীবনে এই প্রথম অচেনা কেউ সামনাসামনি আমার লেখার প্রশংসা করলো। মন খারাপ, টেনশন - সব ফুশ্ করে উড়ে গেল। চোখেমুখে ড্যাব-ড্যাবে হাসি ফুটিয়ে বলি - "ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। শুনে খুব ভালো লাগলো।" 

"ভাইয়া, এখানে কি কাজে এসেছেন? নাকি বেড়াতে?" 

"নারে ভাই। আমি এখানেই থাকি। জন্ম থেকে এইটাই আমার পাড়া।" আমি হাসিমুখে বলি।  

"ওহ মাই গড! ইয়া আল্লাহ! বলেন কি? আমিও তো ক্রিসেন্ট রোডেই থাকি। কত নম্বর বাসা আপনার ভাইয়া? আল্লাহ, কেমন একটা ব্যাপার হলো বলেন তো এইটা? আমি আপনার এতবড় ফ্যান আর আমি এটাই জানতামই না যে দা গ্রেট আরিফ আর হোসেন ক্রিসেন্ট রোডে থাকে!!!" 

-------------------

মনডায় চাইসিলো ক্যাৎ করে দেই একটা জায়গামত লাত্থি। শালার পুরা টাইমটাই লস। ব্যাটা এতক্ষণ আমাকে আরিফ আর হোসেন ভেবে দাঁত কেলিয়ে কথা বলে গেছে। 

আরিফ আর হোসেনের আমি খ্যাতাপুরি।  

শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

মা

মা'গো তোমার শূন্য পানের বাটা, 
আধেক বোতল নিদ্রাকুসুম তেল, 
সুগার মাপার মেশিন আর ইনসুলিনের সুঁই 
ডুকরে কেঁদে বলছে শুধুই - কোথায় গেলি তুই? 

তোমার বাজার সদাইপাতির
মেরুন বাকির খাতা, 
সাদার উপর লাল বুননের
নরম নকশী কাঁথা, 
আলমারিটার তাক-ভর্তি শাড়ি, 
পাতিল-চামচ-কড়াই-খুন্তি-হাড়ি,
মা'গো, তোমায় ছাড়া
আমার একলা লাগে ভারি। 

বারান্দা আর ছাদ-ভর্তি গাছ, 
শখের অ্যাকুরিয়াম, রঙিন মাছ, 
ভ্যাসলিন আর গ্লিসারিনের শিশি 
তোমায় খুঁজে ফিরছে অহর্নিশি। 

সারি সারি বয়াম আচার ভরা, 
খাটের পাশে দড়ি-বেতের মোড়া, 
মা'গো তোমায় ছাড়া
ক্যামনে থাকবে ওরা? 

তোমার চেনা ঘরটায় একলা যখন যাই 
অচেনা এক কষ্টে চোখ ভিজাই।  

বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বাবুউউউউউউ

যুদ্ধজয়ের ইতিকথা 
--------------------

আমার দেড় বছরের পুত্র জীয়ন মোটামুটি প্রায় সবকিছুই বলতে পারে। সে "চিটাগাং" বলতে পারে, "চানাচুর" বলতে পারে। "আমরাই বাংলাদেশ", "সূচী চাচী", "লন্ডন"-এর মত ভেজাইল্লা শব্দও বলতে পারে। বাপের নাম "রাজীব", মা'এর নাম "পূনম", বোনের নাম "জয়িতা" - এগুলা তার কাছে ডালভাত। 

শুধু এক জায়গাতেই স্যারের বিটলামি। যদি তাকে জিজ্ঞেস করা হয় - "বলতো তোমার নাম কি?" 

সে নকশা করে জবাব দিবে - "বাবু" 

তাকে সুর করে বলা হয় - "না বাবা, বাবু না; বলো জীয়অঅঅঅন"

সে সুর করেই জবাব দেয় - "বাবুউউউউউ" 

এভাবেই দিনের পর দিন পিতৃপ্রদত্ত নামকে কাচকলা দেখিয়ে জীয়ন চৌধুরী নিজেকে "বাবুউউউ" বলে পরিচয় দিতে থাকলো। 

---------------------

আজকে রাতে বাইরে থেকে ফেরার সময় গাড়িতে হঠাত জেদ চাপলো। ব্যাটাকে আজকে বাপের দেয়া নাম বলিয়েই ছাড়ব। 

মাই ডিয়ার পুত্র, তুমি চলো ডালে ডালে, তোমার বাপ চলে পাতায় পাতায়। 

শুরু হলো পিতা-পুত্রের গেরিলা যুদ্ধ। 

--------------------

(আমাদের কথোপকথনটা প্লিজ সুরে সুরে পড়বেন)

আমি (ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে) - "বাবা, বলো তো তোমার নাম কি?" 

পুত্র (মহা মুডে) - "বাবুউউউ"

আমি (মোহনীয় হাসি দিয়ে) - "নাহ, বলো জীয়অঅঅন" 

পুত্র (গাড়ির রেডিওর বাটন টিপতে টিপতে) - "বাবুউউউ"

আমি (প্রশ্রয়ের হাসি হেসে, সুরে সুরে) - "দুষ্টু ছেলেএএএ ... পাজী ছেলেএএএ"

পুত্র (মোহনীয় হাসি দিয়ে) - "হি হি হি"

আমি (দুষ্টু দুষ্টু গলা করে) - "বলো তো বাবা, পাআআআজিইই"

পুত্র (রেডিওর বাটন নাড়তে নাড়তে) - "পাআআআজিইই"

আমি (ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছি) - "এবার বলো বাবাজিইইই"

পুত্র (সকল মনোযোগ রেডিওর দিকে)  - "বাবাজিইইই"

আমি (পুত্র ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে, সেই খুশিতে গদগদ) - "বাহ বাহ, এবার বলো জিজিইইই"

পুত্র (সুরে সুরে) - "জিজিইইই ... জিজিইইই"

আমি (বিজয়ের সুবাতাস পাচ্ছি) - "সাব্বাস। এবার বলো তো জিজীয়অঅঅন" 

পুত্র (মহানন্দে রেডিওর বাটন নাড়ছে আর সুরে সুরে বলছে) - "জিজীয়অঅঅন ... জিজীয়অঅঅন" 

আমি (পাশে বসা বউ আর পিছনে বসা মেয়ের উত্তেজনা টের পাচ্ছি। সব উত্তেজনা চেপে রেখে, স্বাভাবিক কন্ঠে সুরে সুরে বললাম) - "এবার বলো তো বাবা জীয়অঅঅঅন" 
.
.
.
.
.
.

পিনড্রপ সাইলেন্স। নিঃশ্বাসের শব্দকেও কক্সবাজারের ঢেউএর গর্জন মনে হচ্ছে। মা আর মেয়ে প্রথমবারের মত জীয়নের মুখ থেকে তার নাম শোনার মহেন্দ্রক্ষণটা সেলেব্রেট করতে উন্মুখ; আমি ... যুদ্ধজয়ের অগ্রিম অভিনন্দনে নিজেকে প্রায় ভিজিয়ে ফেলেছি। 

.
.
.
.

পুত্র রেডিওর বাটন থেকে হাতটা সরালো।

আমার দিকে তাকিয়ে একটা ভুবন-ভোলানো হাসি দিয়ে বললো - "বাবুউউউউউউ"   

---------------------

এই ছিল আমার পুত্রের যুদ্ধজয়ের ইতিকথা। 

বাই দা ওয়ে, তার ভুবন ভোলানো হাসির অন্তর্নিহিত অর্থ হলো -  

"মাই ডিয়ার ড্যাড, তুমি চলো পাতায় পাতায়, আর আমি চলি শিরায়-উপশিরায়।"  

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

লুকব্যাক

ব্রেকিং নিউজ !!! ব্রেকিং নিউজ !!! ব্রেকিং নিউজ !!!
----------------------------------------------------

"লুকব্যাক"এর বিপুল গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা দেখে উত্ফুল্ল ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ সবাইকে আবার একটা সারপ্রাইজ দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এবার আর ছবি নয়, এবার ইনবক্স থেকে randomly মেসেজ সিলেক্ট করে সেগুলো দিয়ে তৈরী হবে প্রেজেন্টেশন। এক্ষেত্রে নানান সময়ে ডিলিট করে দেয়া মেসেজও বাদ পড়বে না। 

শেয়ার করা ব্যাপারটাকে আরো সহজ করতে এবার প্রেজেন্টেশনটি অটো-শেয়ার হয়ে যাবে ফ্রেন্ডস'দের মধ্যে। 

---------------------------------------------------

বুকে হাত রেখে বলেন তো ভাই, নিউজটা সত্যি হলে কে কে ডরাইতেন? 




সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সাঙ্গাকারার ব্যাটিং

যে কোনো পজিশনে 
যে কোনো জায়গায়
যে কোনো সিচুয়েশনে 

ঘন্টার পর ঘন্টা
করতেই থাকবে, করতেই থাকবে, করতেই থাকবে ...
কিন্তু "আউট" হবে না 
.
.
.
.
কুমার সাঙ্গাকারার ব্যাটিং'এর কথা বলছিলাম আর কি।  মেজাজ খারাপ লাগে না বলেন? 

এক চামচ টুম্পা ঘোষ

এক চামচ টুম্পা ঘোষ
----------------------

"নাটকের কোনো দৃশ্যের প্রয়োজনে নয়, ক্যামেরার কারসাজি নয়, নয় স্রেফ অভিনয়। সত্যি সত্যিই টুম্পা ঘোষের পায়ের ওপর দিয়ে একটি অটোরিকশার চাকা চলে গেছে! দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার। টালিগঞ্জে। ডাবিং'জন্যে বেরিয়েছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় বিপজ্জনক গতিতে এগিয়ে আসা একটি অটোরিকশা তার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়।  টুম্পাকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখেও চালক অটোরিকশাটি থামাননি। চিকিত্সকরা কয়েকদিন বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন তাকে।" 

কি ভাবছেন? আনন্দবাজার পত্রিকা পড়ছেন? দাঁড়ান, আরো দু'একটা হেডলাইন পড়ে শোনাই। 

"জীবনের ডাকে সাড়া দিলেন প্রসেনজিত"

"অরিজিতের বিয়ে"

"ফারহান আখতার ও বিদ্যা বালান। সৌরভ গাঙ্গুলির 'দাদাগিরি আনলিমিটেড' প্রতিযোগিতার চতুর্থ আয়োজনে কাল বুধবার রাতে অংশ নেবেন তারা। অনুষ্ঠানটি ভারতের জি বাংলায় প্রচারিত হবে কাল রাত ১০টায়।" 

......................

বিলিভ ইট অর নট -  আনন্দবাজার না, এগুলো সবই আজকের প্রথম আলোর বিনোদন পৃষ্ঠার কন্টেন্ট! 

জানি, আপনারা যুক্তি দেখাবেন "ত্যানা প্যাঁচায়েন না তো রাজীব ভাই, পাবলিক এখন এইসবই খায়।"

টুম্পা ঘোষ!!! অরিজিত!!! আর ইউ কিডিং??? সিরিয়াসলি আমাদের এই অবস্থা হয়ে গেছে যে আমরা এখন টুম্পা ঘোষের পা নিয়ে চিন্তিত!!! আল্লাহর কসম লাগে, আমি আজকের আগে জানতামও না টুম্পা ঘোষ নামে কোনো অভিনেত্রী আছে।  

এর থেকে "সেইন্ট মার্টিন্স আইল্যান্ডে গিয়ে বেইজবাবা সুমনের দুইবার বমি হয়েছে" ইজ এ বেটার নিউজ ফর মি।  

অনেস্টলি। 

.....................

প্রিয় প্রথম আলো 

আপনাদের আমার ভালই লাগে। আজকের পত্রিকাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনাদের সোজাসাপ্টা রিপোর্টিং বেশ ভালো হয়েছে। মুশফিকুর রহিম উইকেট কীপিং ছেড়ে দিলে তার পারফরমেন্স আরো ভালো হবে কিনা এই রিপোর্ট'টাও নতুন চিন্তার খোরাক দিয়েছে। ২০০০ সাল থেকে আমাদের বাসায় প্রথম আলো রাখা হয়, আপনারা ভালো বলেই এখনও আপনাদের বদলে ফেলার প্রয়োজন হয়নি। 

যেগুলা পঁচা, তারা আরো বেশি পঁচে গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু আপনারা তো ভালো, তাই আপনারা এমন করলে আসলেই কষ্ট লাগে।  

বাংলাদেশে কি টিভি চ্যানেল নাই? সেখানে কি ভালো কোনো অনুষ্ঠান হয় না? আপনারা সেগুলা নিয়ে না লিখলে মানুষ দেখবে ক্যামনে সেগুলা? ৮টা খবরের মধ্যে ৪টাই ইন্ডিয়ান। তার মধ্যে ২টা জি বাংলা! এইটা কিসু হইলো?

ওয়ার্ল্ড মিডিয়া, গ্লোবালাইজেশন, কালচারাল ডাইভারসিটি'র কথা কথা বলবেন? হায়, হায়! তাইলে হলিউড গেল কই? 

জানেন? প্রতিদিন আমিও পিত্জা-বার্গার-বিরিয়ানি-আইসক্রিম খেতে চাইতাম; আম্মা দিত না। বলত - স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাবে। সুন্দর-সুন্দর ইয়াংমেয়েগুলার সাথে আড্ডা দিতেও বড্ড মন চায়; কিন্তু বউ দেয় না।  বলে - চরিত্র খারাপ হয়ে যাবে।  

"মানুষ এগুলাই চায় বা খায়" বলে তাই খোড়া যুক্তি দিয়েন না। যা খেলে শরীরের (পড়ুন দেশের/সংস্কৃতির/রুচির) ক্ষতি হয়, চাইলেও সেগুলা খেতে দেয়া উচিত না। সত্যি কথা কি জানেন, মানুষ'কে আসলে যা খাওয়াবেন, মানুষ তা'ই খাবে। 

প্রমান চান? দাদা'দের দেখুন। নিজেরা তো খাচ্ছেই, তার সাথে কত সুন্দর করেই না আমাদেরও খাওয়াচ্ছে।

কষ্টটা আরো বেশি লাগে যখন দেখি যে, ওরা বানাচ্ছে, আর আপনারা চামচে তুলে আমাদের টুম্পা ঘোষ খাওয়াচ্ছেন। 

জেনুইন মাল

জীবনে প্রথম বারের মত আজকে নিজ চোখে একটা জেনুইন মাল দেখলাম। 
.
.
.
.
.
.
.
.
কালো গাড়িতে বসা ছিল মন্ত্রী আবুল মাল। ১০০% জেনুইন। 

রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বিলাই

আমার একটা গানের খাতা আছে। গিটারের কর্ডসহ গানের লিরিক লেখা। 

মাঝেমাঝেই আমার মেয়ে খাতাটা উল্টেপাল্টে দেখে। 

সেদিন হঠাত জানতে চাইল - "বাবা, বিড়াল শুদ্ধ শব্দ? নাকি বিলাই?" 

আমি বললাম - "এইটা কেমন কথা? এটার আনসার তুই জানোস না? বিলাই ক্যামনে শুদ্ধ হয়? বিড়াল ইজ দা রাইট ওয়ার্ড।"

মেয়ে বলল - "আমিও তো তাই জানতাম। কিন্তু তোমার গানের খাতায় এলআরবি'র একটা গানে বিলাই ওয়ার্ডটা দেখে কনফিউজড হয়ে গেলাম।"

আমি তো আরো কনফিউজড! এলআরবি'র আবার "বিলাই" নিয়ে কবে গান বানাইলো?

মেয়েরে বললাম খাতা নিয়ে আসতে। মেয়ে খাতা খুলে "বিলাই" দেখালো - 

.....

~~~ নিজেকে ঢেলে আমি কতো সুখ "বিলাই"

বোঝে না কেউ তো চিনলো না ....
......

হাসতে দেখো গাইতে দেখো.....~~~
.......


বাচ্চু ভাই, ভালো আছেন? 

স্বার্থপর সন্তান

১.

"বাবা, আজকে অফিসে না গেলে হয় না?" 

জয়ীর বয়স যখন দুই, তখন থেকে এই প্রশ্নটা আমি  প্রতিদিন শুনে আসছি। ওর এখন সাড়ে ৮, এখনো শুনছি। 

জীয়ন'এর দেড়।  অফিস যাওয়ার সময় অলরেডি শুরু হয়ে গেছে "বাবা, অপিত দাবু, অপিত দাবুউউউ..." বলে ঘ্যানরঘ্যানর। 

কখনোই ওদের আব্দারকে প্রাধান্য দিয়ে অফিস মিস দেয়ার কথা কল্পনাতেও আনি নাই।

এবং এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? 

২. 

বাবা-মা'র "সু-সন্তান" যাকে বলে, আমি মনে হয় কখনই সেটা ছিলাম না।  

ক্লাস সিক্স/সেভেন থেকেই বাসার কারো জন্যে খুব বেশি সময় আমার ছিলনা। পালাক্রমে বাবা-মা'র জন্যে বরাদ্দকৃত সময়টাতে ভাগ বসিয়েছে বন্ধু, ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যান্ড, আড্ডাবাজি, প্রেম, চাকরি, ক্যারিয়ার। 

আব্বা-আম্মা কোনদিন মুখ ফুটে বলেন নাই-

"বাবা, আজকে অফিসে না গেলে হয় না?" 

এবং, এটাই তো স্বাভাবিক তাই না? 

৩. 

আম্মা চলে যাওয়ার ১০ দিন পার হলো।  

এই ক'দিন আব্বার সাথে কেউ না কেউ সবসময়ই ছিল। রাজশাহী থেকে ছোটচাচা এসে সর্বক্ষণ ছিলেন আব্বার পাশেপাশে। কাল চাচাও রাজশাহী চলে গেলেন। আম্মাহীন বাসাটাতে এখন শুধুই আমরা। 

রাতে আব্বার ঠিকমত ঘুম হয়না। সকালে তাই খুব ঘুম পায় তার।  

আজ সকালে কাছে গিয়ে দাঁড়াতে হাত ধরে খুব দুর্বল গলায় বলল - 

"তোদের দুইভাই'এর যে কোনো একজনের কি আজকে অফিসে না গেলে খুব প্রবলেম হয়ে যাবে? আজকের দিনটাতে শুধু কেউ একজন থাক; কাল থেকে নাহয় দু'জনই অফিসে গেলি।"

কথাটা শুনে কেন জানি কলিজাটা ছিড়ে গেল।  

আমার মত স্বার্থপর সন্তানের এমন কষ্ট লাগাটা তো অস্বাভাবিক, তাই না? 

৪. 

অনেকক্ষণ ধরে ভেবেও এমন আরেকটা মুহূর্ত খুঁজে পেলাম না যখন আব্বা বা আম্মা আমাদের দুই  ভাই'এর কাছে এভাবে কোনকিছু চেয়েছেন।