শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩

গোলকিপার


একজন গোলকিপারকে গালাগালি দিয়ে দল থেকে বের করে দেয়া হলো। তার অপরাধ, "ব্যাটা, ফুটবল হলো গোলের খেলা। তুই ব্যাটা দিনের পর দিন ধরে ফুটবল খেলোস, একটাও গোল দিতে পারস না। যা ভাগ, আমার টিমে তোর কোনো  জায়গা নাই।" গোলকিপার বেচারা কাকুতি-মিনতি করে বলল, "বস, আমাকে আরেকটা সুযোগ দেন, আমি গোল দিয়েই দেখাবো।" 

সুযোগ দেয়া হলো। ফলাফল: গোলকিপার স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে একটা গোলও দিতে  পারল না। এবং তার জায়গায় আরেকজন অনভিজ্ঞ প্লেয়ার  গোলকিপিং করায় তার দল ডজন-খানেক গোল খেল। 

ভাই রে, 
১। সবাই ভালো স্ট্রাইকার হতে পারে না; চাইলেও পারে না। ঠিক তেমনি, সবাই ভালো গোলকিপারও হতে পারে না। 
২। গোলকিপার তার দায়িত্ব ঠিকমত পালন না করলে, বাকিরা হালি-হালি গোল করলেও কোনো লাভ হবে না। দলের বাকিদের রোল সম্পর্কেও কিন্তু একই কথাই খাটে।
৩। গোলকিপারের কিন্তু তার দলের বাকিদের প্রতি অগাধ আস্থা - তার বাড়িয়ে দেয়া বল থেকেই, কাটিয়ে-কুটিয়ে তার স্ট্রাইকার বন্ধু ঠিকই গোল করবে। 
৪। স্ট্রাইকার বন্ধুও কিন্তু পুরাপুরি কনফিডেন্ট; নিজেদের গোলপোস্ট নিয়ে অন্তত তাকে চিন্তা করতে হবে না। গোলকিপার বন্ধু তো আছেই। 
৫। আর, কিছু দর্শকের কাজ হলো মজা নেয়া। গোলকিপারকে গোল দিতে না পারা নিয়ে খোঁচাবে, স্ট্রাইকারকে গোল খাওয়া নিয়ে খোঁচাবে - পিছন থেকে টেনে ধরার মধ্যে যে কি বিজাতীয় একটা সুখ তারা খুঁজে পায়, তা শুধু তারাই জানে। যাই হোক, ও নিয়ে প্লেয়ারদের চিন্তা করলে চলবে? 

যে যার কাজটা ঠিকমত করতে পারলেই কিন্তু দল জিতবে। কিছু লোক কটু কথা বলবেই। কিন্তু তা শুনে যদি গোলকিপার গোল দিতে দৌড় দেয়; তাহলে তো সর্বনাশ।

আশেপাশে ভালো কিছু ঘটার সুবাতাস পাচ্ছি। আমি সেই কতিপয় বোকা-দর্শকের মত গাবর নই যে উল্টাপাল্টা সমালোচনা করে সবার মনবল ভেঙ্গে দিব। 

শুরুটা তো হোক রে ভাই, দেখি না কি হয়। দেশটা তো আমাদেরই, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন