সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৩

আরিফ আর হোসেন

আরিফ আর হোসাইন - একটি (মতান্তরে দু'টি) সমস্যার নাম: 

বেশ কড়াকড়ি সিকিউরিটি-ওয়ালা এক জায়গায় মিটিঙে গেছি আমি আর আরিফ ভাই। কথা ছিল মেইন গেটের বাইরে আমাদের নামে সিকিউরিটি পাস ইস্যু করা থাকবে, আমাদের শুধু কালেক্ট করে নিতে হবে। আরিফ ভাই গাড়ি ড্রাইভ করছিল, তাই তাকে গাড়িতে বসিয়ে আমি গেছি পাস কালেক্ট করতে। 

৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলাম লাইনে। তারপর আরো ৫ মিনিট বিভিন্ন খাতা/রেজিস্টার খুঁজে বিরক্ত অফিসার জানালো যে আমাদের নামে কোনো পাস ইস্যু করা নাই, আমরা যেন ভিতরে যোগাযোগ করি। যার সাথে মিটিং, তাকে ফোন দিলাম। বেশ বিব্রত হয়ে তিনি বললেন - "একটু ওয়েইট করেন রাজীব ভাই, আমি এখনি ইন্টারকমে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিচ্ছি।"

আমার সামনেই ইন্টারকমে ফোন আসল। ব্যাটা ফোন রাখতেই আমি বেশ কনফিডেন্টলি এগিয়ে গিয়ে বললাম "ভাই, ফোনটা মনে হয় আমাদের জন্যে এসেছে তাই না?" চোক্ষা মুখ করে ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন - "ভাই, আপনার নাম বলেন।" বললাম "রাজীব হাসান চৌধুরী"। ফিচেল একটা হাসি হেসে ব্যাটা বললো "জ্বি না ভাই, আপনার নামে কোনো ফোন আসে নাই।" 

"কি বলেন? এইমাত্র আপনাকে মানিক সাহেব ফোন দেই নাই?"
"জ্বি, মানিক সাহেবই ফোন দিসেন। কিন্তু আপনার নাম বলে নাই।"
"আপনি ঠিক শুনেছেন ভাই? দুইজনের কথা বলেন নাই মানিক সাহেব?"
"জ্বি বলসেন, কিন্তু তাদের মধ্যে আপনার নাম নাই।"

আমার বিরক্তি তখন চরমে। 

"দুইজনের নাম কি কি বলেছেন একটু কষ্ট করে বলবেন?"
"জ্বি। আরিফ আর হোসেন।"
"ঠিক আছে, বুঝলাম। আরেকজনের নাম কি বলেছে?"
"আরে ভাই, কথা বুঝেন না নাকি? বললামই তো মানিক সাহেব 'আরিফ' আর 'হোসেন' নামে দুইটা পাস ইস্যু করতে বলসে।" 

কেউ আমারে পুইত্তালা রে, এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালা। 

আমার ডেসপারেট চেষ্টা - "ভাই আমার আরিফ আর হোসেন দুই'জন মানুষ না রে ভাই, ওনারা একজন মানুষ। ওনার নামই হইলো আরিফ আর হোসেন। আমি আরেকজন। দয়া করে কি আমার নামে একটা পাস ইস্যু করা যায়?"

ব্ল্যাঙ্ক লুক দিয়ে উনি প্রশ্ন করলেন, 
"তাহলে আপনে কে?" 

আমারে কেউ পুইত্তালা রে, এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালা। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন