শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

টুয়েন্টিনাইন

"ফার্স্ট কল এইবার তোর। স্টার্ট কর।"
"১৬?"
"আছি"
"১৭?"
"আছি"
"১৮?"
"ধুর ব্যাটা, কি ডাকোস এগুলা মুরগির মত? ১৬-১৭'র দিন আছে নাকি এখনো?"
"আচ্ছা যা, ২০"
"২২ পর্যন্ত আছি"
"ওকে ... ২৩"
"২৩??? যাহ, ডাবল দিলাম। ২৩ পাবি না। শিওর"
"রিডাবল। ২৩ ক্যান? ২৯ কল দিলেও ব্যাপার ছিল না। বাসে পেট্রল বোম মারার প্ল্যানই তো হইসে অ্যাটলিস্ট ১৫টা। এর মধ্যে ২৩টা লাশ পরবো না? কি কস তুই? হুদাই ব্যাটা ডাবল দিলি। সামলা এইবার রিডাবলের ঠ্যালা।"
.
.
.
.
.
কেন জানি এখন মনে হয় ব্যাপারটা আসলে এমনই সিম্পল। কোন অবরোধে কোন পদ্ধতিতে কয়টা লাশ পড়বে, সেটা বোধহয় এভাবেই কোনো টুয়েন্টিনাইন'এর টেবিলে সিদ্ধান্ত হয়। 

হতেই পারে। লাশ নিয়ে টুয়েন্টিনাইন খেলাও নিশ্চয়ই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার! 

অভিশাপ


"...তরা বাইচ্চা থাকবি, আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়া ভিক্ষা চাই যেন তরা আরো অনেক দিন বাইচ্চা থাকোস। 

তদের ছেলেমেয়েরা তদের চোক্ষের সামনে পুইড়া মরুক।

আল্লাহ তগোরে এই দিন দেখার আগে যেন মরণ না দেয়।

অভিশাপ দিলাম। আল্লাহর নামে কীরা কাইটটা তদের বংশনাশের অভিশাপ দিলাম।"

[ক্ষমতার লোভে মনুষ্যত্ব হারানো সকল হারামী রাজনীতিবিদের উদ্দেশ্যে নাহিদ-রবিন'এর মাএর অন্তর থেকে বের হওয়া এই চিত্কার - আমি শুনতে পাই, আপনি শুনতে পান। শুধু ওই শুওরের বাচ্চাগুলি শুনতে পায় না ক্যান?]  

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৩

হালের স্মার্টনেস:

হালের স্মার্টনেস:
-----------------

চলেন, আজকে আপনাদের স্মার্ট হওয়া শিখাই। 

রুল নং: ১

প্রথমেই যেটা করবেন, সেটা হলো, বাংলা বর্ণমালা থেকে "ব'এ শূন্য র'কে" শিফট-ডিলিট মেরে দিবেন। কখনই, ভুল কড়েও যেন "র" বলে ফেলবেন না; বলবেন "ড়অঅঅ"; বুঝেছেন? 

রুল নং: ২
মাঝে মাঝেই "আ"কার'কে জ-ফলা দিয়ে রিপ্লেস করবেন। লাইক, আগের লাইনটা পড়লেই বুঝবেন। ইট শুড বি "হ্যাসান", নট "হাসান"! ইট্স "ক্যাঠুড়ে", নট "কাঠুরে", ইট্স "ব্যাংলাডেশ", নট "বাংলাদেশ"; বুঝা গেসে?

রুল নং: ৩
আগের লাইনটা মনোযোগ দিয়ে পড়লেই ক্লু খুঁজে পাবেন। হুদাই-বেহুদাই "লাইক", "ইউ নো", "বেসিকালি" ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করতে হবে। আরো কিছু টার্ম মুখস্ত করতে হবে, লাইক ... "জি টি জি", "টি জি আই টি", "ডব্লিউ টি এফ" ইত্যাদি। বুঝে হোক, না বুঝে হোক, এগুলা যত্রতত্র মেরে দিবেন। নো টেনশন। 

রুল নং: ৪ 
ইদানিং আরেকটা সিম্পটম দেখছি। ইংলিশ ওয়ার্ড'এর মাঝখানে যদি "বি" বা "ব" থাকে, সেটাকে "ভি" দিয়ে রিপ্লেস করাটাও মনে হয় স্মার্টনেস বলে পরিগণিত হচ্ছে। ২/৩ জন মিডিয়া সেলেব্রিটি'কে বলতে শুনলাম "মোভাইল", "নোভডি", "অ্যাভসলিউটলি" ... সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এরা নিজেদের বলে "সেলিভ্রিটি" 

আপাতত এগুলো প্র্যাকটিস কোড়তে থ্যাকেন। ইউ নো, আই জিটিজি। 

ও, আরেকটা কথা। কথায় কথায় "লোল" ঝাড়তে ভুলবেন না কিন্তু ;) 

বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

ট্যাগ

অদ্ভূত ব্যাপার তো ভাই। হরতালের বিরুদ্ধে কথা বললেই দেখি আওয়ামীলীগের ট্যাগ ধরিয়ে দেয়!!!

ভাই থামেন। আওয়ামীলিগ যখন বিরোধী দলে ছিল, তখনও হরতালকে গালি দিতাম। হরতাল দিয়ে যে দেশের কোনো উন্নতি হয়না; সেই বোধ-বুদ্ধি অনেক আগে থেকেই হইসে আমার। হ্যা, বলতে পারেন, হরতাল দিয়ে ক্ষমতার বদল হয়। তাতে ভাই আমার কি? লাউ বদলে কদু হয়, কদু বদলে লাউ। আমি-আপনি হয় যদু, নাহলে মধু। 

গ্যাঞ্জামের মূল আসলে ফেইসবুক। ফেইসবুক না থাকায় তখন যখন আওয়ামীলিগ'কে গালি দিতাম, কেউ শুনত না, কেউ বিএনপির ট্যাগ'ও দিত না। এখন এই "এফ" নামক জিনিসটার কল্যানে যার যা মন চায় ট্যাগ লাগিয়ে সুখ খুঁজে নেয়। 

যত পারেন ট্যাগ লাগান। আমার অসুবিধা নাই। রাজনৈতিক ক্ষমতা হাসিলের জন্য যে-ই হরতাল দিবে, তারেই গালি দিব। ইনশা-আল্লাহ। 

তবে হ্যা, বাজে কথা বললে বা আজাইরা ত্যানা প্যাঁচালে নগদে ডিলিট; তারপর ব্লক। 

কারণ ... আমার ওয়ালে শুধুই আমার একনায়কতান্ত্রিক অধিকার চলে :) 

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৩

যতটা মেজাজ খারাপ হয় এখন...

জয়ীকে হিন্দিতে ডোরেমন দেখে পুটপাট হিন্দি বলে ফেলতে দেখলে মেজাজ খারাপ হতো; তবে এতটা নয় ...

আম্মাকে ফুল ভলিউমে জি বাংলার "রাশি" বা "অগ্নিপরীক্ষা" দেখে চোখের পানি ফেলতে দেখলে মেজাজ খারাপ হতো; তবে এতটা নয় ...

সারাদিন পর বাসায় ফিরে আগের রাতের খেলার হাইলাইট চলার সময় পূনম যখন নাইজেলা'র রান্না শিক্ষা দেখতে বসে, মেজাজ তখনও খারাপ হয়, তবে এতটা নয় ... .
.
.
.
.
.
.
যতটা মেজাজ খারাপ হয় এখন... 

যখন দেখি, আশেপাশের সব "অতি-সচেতন" নাগরিকগণ  টকশো'তে আসা মাননীয় স্পিকারদের অর্থহীন ত্যানা-প্যাচানো শুনে নিজ-নিজ ধারনাকে নিজের কাছেই আরো শক্ত-মজবুত প্রমান করে স্বস্তির হাসি নিয়ে ঘুমাতে যায়।  

আমরাই বাংলাদেশ কোনো "বিনোদনমূলক টিভি অনুষ্ঠান" না।

[এই পোস্টটা আমরাই বাংলাদেশ পেইজ থেকেও আপলোড করা হয়েছে। কেউ ডোনার হতে চাইলে ওই পেইজে প্রোসিডিওর বলা আছে। লেখাটা যত বেশি শেয়ার হবে, তত ডোনার পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বাকিটা আপনাদের উপর।]

যারা অনেকদিন ধরে রক্ত নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে ব্যাপারটা হয়ত এতদিনে নরমাল হয়ে গেছে। আমার তো জুম্মা-জুম্মা আট দিন, তাই ধাক্কাটা হজম করতে কষ্ট হচ্ছে।

৩ দিন আগে খুব কাছের এক বড় ভাই তার চাচীর জন্য রক্ত চাইল। বি নেগেটিভ। আমরাই বাংলাদেশকে যে কয়েকটা গ্রুপ দিনরাত সাহায্য করে যাচ্ছে রক্ত যোগার করে দিয়ে, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করলো রক্ত যোগার করতে। প্রথম কয়েক ব্যাগ ম্যানেজও হলো। গতকাল আমার ওই ভাই আবার জানালো যে আরো রক্ত লাগবে, আমি সবাইকে আবার জানালাম। ওরাও চেষ্টা করলো; কিন্তু এবার আর যোগার হলো না। একসময় মেসেজ পেলাম, "The Patient expired a few minutes back... Innalillahe wa Inna Ilaihe Rajeoon! Razeeb, thank you so much for your tremendous support during need... And thanks to Aamrai Bangladesh..."

আবারও বলছি, যারা অনেকদিন ধরে মানুষের বিপদের সময়ে রক্ত ম্যানেজ করে দিচ্ছে, এমন ঘটনা হয়ত তাদের নিয়মিত ফেইস করতে হয়। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা প্রথম বলেই হয়ত বেশি খারাপ লাগছে। আমারও হয়ত সময়ের সাথে সাথে সয়ে যাবে এসব।

কিন্তু, ব্যাপারটা এমন হলো কেন? চাহিদার তুলনায় ডোনারের সংখ্যা এখনো এত কম কেন? যে ছেলেমেয়েগুলো রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে, আমি তো ওদের চিনি। ওদের চেষ্টায় তো কোনো খাদ দেখিনি একবারের জন্যও। ৪৮ হাজার মেম্বার এখন আমরাই বাংলাদেশ পেইজে। ডোনার কয়জন এর মধ্যে? অর্ধেক ডোনার হলেও তো জরুরি সময়ে এত হা-হুতাশ করতে হয়না।

একটা কথা পরিষ্কার করে আবার বলি। আমরাই বাংলাদেশ কোনো "বিনোদনমূলক টিভি অনুষ্ঠান" না। প্রতি পর্বে আমি আপনাদের সামনে আনন্দ দিতে বা আপনাদের মনোরঞ্জন করতে হাজির হই না। ছোট করে হলেও কিছু একটা করব বলেই এই অনুষ্ঠান। আপনরাই যদি এগিয়ে না আসেন, তাহলে কোনকিছু কোনদিনই বদলাবে না। যে ছেলেমেয়েগুলো রাতদিন খেটে রক্ত যোগাড় করছিল তারাও একসময় হাল ছেড়ে দিবে। সেটাই কি চান আপনারা?

কোনো পোস্ট শেয়ার বা লাইক দিতে অনুরোধ করায় ঘোর আপত্তি আমাদের। কিন্তু ডোনারের সংখ্যা বাড়াতে সেটা ছাড়া আর গতি নাই মনে হচ্ছে। একটু এগিইয়ে আসুন প্লিজ, আজকে আপনি এগিয়ে আসলে একদিন আপনার প্রয়োজনে আরেকজনকে ঠিকই পাবেন। 

ত্যানা-প্যাঁচানো

আমার হিসেবে গত কয়েক বছরের মধ্যে বাংলা ভাষায় সর্বশ্রেষ্ঠ সংযোজন হলো "ত্যানা-প্যাঁচানো" বাগধারাটি।

এই শব্দযুগলটি এতটাই শ্রুতিমধুর, তাত্পর্যপূর্ণ, শালীন এবং সহজবোধ্য; আমি রীতিমত "ত্যানা-প্যাঁচানো"র প্রেমে পরে গেছি। সর্বপরি, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, নেতানেত্রীদের বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য, টকশো'তে বিজ্ঞজনদের জ্ঞানগর্ভ পর্যালোচনা - এসবকিছুকেই কি আশ্চর্য সুন্দর ভাবে সিমপ্লিফাই করে এক "ত্যানা-প্যাঁচানো" বাগধারাটি দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া যায় ... সত্যিই প্রশংসনীয়। 

এই বাগধারার প্রবক্তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হোক - এই লক্ষ্যে একটা ইভেন্ট খুলে ফেলবো কিনা ভাবছি। 

পাদটিকা: একটি সামান্য বিষয় নিয়ে আজাইরা পকরপকর করাকে "ত্যানা-প্যাঁচানো" বলে। উদাহরণ - এই স্টেটাসটি। 

সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৩

অন্ধ বাবা-মা

আমার-আপনার আশেপাশেই কিছু বাবা-মা খুঁজে পাবেন যারা তাদের সন্তানের ব্যাপারে পুরাপুরি অন্ধ।

তাদের সন্তান যেনো খারাপ কিছু করতেই পারে না। পাশের বাড়ির ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে মারলেও এই বিশেষ প্রজাতির বাবা-মা'রা বলবে - "নো, নো, নেভার; ইম্পসিবল। এ হতেই পারে না। আমার মুন্না বিনা কারণে মশা পর্যন্ত মারে না। নিশ্চয়ই ওবাড়ির ছেলে নিজেই নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আমার মুন্নার নামে অপবাদ দিচ্ছে।"

আপনারা এটাও জানেন যে এই সন্তানগুলির বয়স ঠিকই বাড়ে; কিন্তু এরা কখনই "মানুষ" হয়ে ওঠে না।

ইদানিং আমাদের আশেপাশের বেশির ভাগ মানুষকেই দেখছি রাজনৈতিক ব্যাপারে এমন অন্ধ বাবা-মা'এর মত আচরণ করছে। আওয়ামিলীগ, বিএনপি বা জামাত যেন তাদের ফেরেশতাতুল্য সন্তান; যারা সকল ভুলের উর্ধে। বিশ্বজিতকে কুপিয়ে "তেমন কোনো বড় ভুল" হয় নাই, মনির'কে পুড়িয়ে মারাটাও নিতান্তই যেন একটা সাধারণ ঘটনা। 

যেখানে আমাদের উচিত নিজের এই কু-সন্তান কুলাঙ্গারগুলিকে টেনে-হিচড়ে সবার সামনে ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি তোলা, তা না, আমরা ব্যস্ত নির্লজ্জের মত "কুপিয়ে মারা" বড় অপরাধ নাকি "পুড়িয়ে মারা" বড় অন্যায় - এই চুলচেরা বিশ্লেষণে। ভালই তো। ভালো না? 

কি সুন্দর ভাবেই না আমরা আমাদের "সন্তান"দের বাহবা দিয়ে দিয়ে বড় করছি। দোষ ঢাকতে ঢাকতে প্রতিদিন নতুন নতুন জানোয়ার পয়দা করছি। ইনশাল্লাহ সেই দিন দূরে না, যেদিন পাড়ায়-পাড়ায়-মহল্লায়-মহল্লায় দেশের পতাকার বদলে দল'এর পতাকা উড়বে। এবং "এ" পাড়ার মুন্না "বি" পাড়ায় ঢুকলেই .... 

... কেউ পুড়ে মরবে, কেউ কোপ খেয়ে। 

ভাইরে, নিজের সন্তানের ভুলগুলি ধরিয়ে দিলেই তারা ঠিকভাবে বড় হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের ভুলগুলি ধরিয়ে দিয়ে ঠিক পথে আনার মূল দায়িত্ব কিন্তু সেই দলের সাপোর্টারদেরই। অন্যের সমালোচনা করার থেকে আত্ম-সমালোচনা করাটাই কিন্তু বেশি উপকারী। এটা আমার কথা না, মনিষীদের কথা। 

ছোটবেলার একটা গল্প বলি। আমি নানু-খালাদের কাছে বড় হওয়া ছেলে। ফাইভ/সিক্সে পড়ার সময় একবার পাশের বাসার ছেলে আমাকে "সামথিং'এর পুত" বলে একটা অশ্লীল গালি দেয়। জবাবে আমি পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে ব্যাটারে চরম মাইর দেই। 

রেসাল্ট: এক সপ্তাহ আমাকে বিকালে খেলতে যেতে দেয়া হয় নাই, থান্ডারক্যাটস দেখতে দেয়া হয় নাই, ম্যাকগাইভার দেখতে দেয়া হয় নাই। 

মানুষ হয়েছি কি হই নাই, আমার আশেপাশের সবাই  বলতে পারবে। তবে অমানুষ যে হই নাই, সেটার প্রমান আমি রেগুলার পাচ্ছি। 

বিশ্বজিতকে কুপিয়ে মারলেও আমার বুক ফেটে কান্না আসে। মুনিরকে পুড়িয়ে মারলেও।

[এই লেখাটা অর্ধেক লিখেছিলাম পরশু রাতে। লেখাটা শেষ করতে করতে পুড়ে মরলো নাহিদ আর রবিন। সত্যি সত্যি এখন মনে হয় চিন্তা শুরু করে দেয়া উচিত, অপশন হিসেবে কোনটা বেছে নিব - পুড়ে মরা? নাকি কোপ খেয়ে মরা?]

আমার "গণতান্ত্রিক" অধিকার।।

নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে আজকে। আম্লিগ বেশরমের মত আনন্দ-মিছিল বের করেছে। করতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

বিম্পি-জামাত-চাল্লি-পাল্লি নিয়ে অবরোধ ডেকেছে। নিশ্চয়ই বাস-গাড়ি-সিএনজি পোড়ানোর পুরা প্ল্যান নিয়েই মাঠে নামবে তারা। নামতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

কাল থেকে (ইনফ্যাক্ট আজ থেকেই) আমার মেয়ের পরীক্ষা শুরু। স্কুল ডিসাইড করেছে তারা অবরোধের মধ্যেও স্কুল খোলা রাখবে। রাখতেই পারে। এটা তাদের "গণতান্ত্রিক" অধিকার। 

আমি সকাল বেলা আমার মেয়েকে স্কুলে দিতে যাব। গাড়ি নিয়ে। যদি আমার গাড়ির সামনে কোনো পিকেটার পরে, খোদার কসম, চোখ বন্ধ করে গা'এর উপর গাড়ি উঠায়ে দিব। 

উঠাতেই পারি। এটাও আমার "গণতান্ত্রিক" অধিকার।। 



রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৩

রিভিউ - দুলাভাই

রিভিউ - দুলাভাই 

কোনকিছুর মধ্যে অ্যাকশন না থাকলে আমার ভাল্লাগেনা। মারামারি-সাসপেন্স-ওয়ালা মুভি আমার পছন্দ, ফুটবল খেলায় ফাউল-লাল কার্ড না দেখলে পাইনসা লাগে। হার্ড রক-মেটাল ছাড়া গান শুনলেও ঠিক গরম লাগেনা। 


টিভি প্রোগ্রাম করব বলে যখন ঠিক করলাম, তখনও এটাই মাথাতে ছিল। শুধু একটা প্রোগ্রাম করব, কিছু গেস্ট আসবে, খাজুরে প্যাচাল পারব - ব্যাস; প্রোগ্রাম শেষ!!! নোপ্, অ্যাকশন ছাড়া নট পসিবল। তাই "আমরাই বাংলাদেশ"এর প্ল্যান যখন করলাম, এমনভাবেই করলাম যেন প্রতি এপিসোডেই কিছু না কিছু করার মত থাকে; সেটা রক্ত দেয়ায় হোক বা বোতল বাতি নিয়ে ব্রেইনস্টর্মিংই হোক ---অ্যাকশন আমার চাই, নইলে জিন্দাপুইত্তালাইমু!

এই পর্যন্ত ঠিকঠাক ছিল। গত পরশু থেকে তো দেখি আমার ফেইসবুক স্টেটাসের মধ্যেও অ্যাকশন। দুলাভাই ডাকের মাধুর্য নিয়ে একটা স্টেটাস দেয়ার পর থেকে যে হারে কমেন্ট এবং ইনবক্স'এ আগ্রহী শালা-শালী'দের মেসেজ পাচ্ছি, আমি তো পুরাই আবেগে কাইন্দালাইতেসি :'( 

শালা-সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। (ইউ নো, আই অলরেডি হ্যাভ থ্রি) ;) 

অতি শীঘ্রই আমি শালীদের ডাটাবেস বানানোর কাজে হাত দিব। তারপর ইন্শাল্লাহ, এলফাবেটিক অর্ডারে সবার মেসেজ রিপ্লাই করব। 

কথা দিলাম। 



বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৩

দুলাভাই

আমার মা তার বংশের সবচাইতে বড় মেয়ে। বাই ডিফল্ট আমার বাবা হলেন সবচেয়ে বড় দুলাভাই। 

আম্মারা ৬ বোন। সেই সুবাদে আমার বাবার আপন শালির সংখ্যা ৫; আর আম্মার বিশাল কাজিন-বাহিনী ক্যালকুলেট করলে শালির সংখ্যা "অগুন্তি"।

ছোটবেলা থেকে আর কিছু না বুঝলেও এইটা বুঝতাম যে আশেপাশে শালিদের কিচিরমিচির আমার পিতৃদেব বেশ উপভোগ করেন। তাদের খোঁচাখুচি, মস্করা ইত্যাদি আমার দৃশ্যতঃ গম্ভীর শিক্ষক বাবার মুখে একটা পরিতৃপ্তির হাসি নিয়ে আস্ত। 

তখনই ডিসিশন নিয়ে নেই, বিবাহ যখন করিবো, অবশ্যই শালির সংখ্যা গুনিয়াই করিবো। এবং তাহাদের বাধ্য করিব, যেন তাহারা আমাকে অবশ্যই "দুলাভাই" বলিয়া সম্বোধন করে। 

আমার বিবাহ হলো। যৌতুক হিসেবে পেলাম তিন-তিনটি হাট্টা-গোট্টা শালা। শালিসংখ্যা - শুন্য। 

বৌএর কাজিন-বাহিনী'তে কিছু প্রসপেক্ট থাকলেও নিষ্ঠুরের মত তারা সে আশার গুড়েও বালি ঢেলে দিল। সুরে-সুরে "ভাইয়া", "রাজীব ভাইয়া" ইত্যাদি সম্বোধনে আমাকে জর্জরিত করে ফেললো। ধর্মে থাকলে রাখিও পরিয়ে ফেলতে পারত। আমি তাদের এমনি এক "ভাইয়া" হয়ে গেলাম, পারলে আমার বউকেই (মানে তাদের বোনকেই) তারা "ভাবী" বলে ডাকে। ইনফ্যাক্ট আমার এক শালি আমার পুত্র হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছে - "জীয়ন কিন্তু আমাকে খালা ডাকতে পারবে না, আমার ফুপু ডাকতে হবে। আদর করে ফুপস।" 

মনের কষ্ট মনেই রয়ে গেল। চোখের পানি চোখেই যে শুকালো। 

উদ্ধার করতে আবির্ভূত হলেন আমার ডাক্তার ফুপুশাশুড়ি, তিনি তার দুই কন্যাকে শিখালেন আমাকে "দুলাভাই" বলে ডাকতে। আহা, কি মধুর সেই ডাক। একেকবার তারা "দুলাভাই" বলে ডাকে, আমি মনে মনে বলি - "ড্যাড, ইউ হ্যাভ শালী! আই হ্যাভ টু। ইউ আর দুলাভাই, মি দুলাভাই টু। হুহ!" 

পার্থক্য শুধু এক জায়গাতেই। আমার বাবা'র শালিগুলি ছিল কলেজ-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া। আর আমার একটার বয়স ৫, আরেকটার ৩। ইয়ে, মানে ... জ্বি, দু'জনই আমার মেয়ে জয়ীর চাইতেও ছোট। 

যাই হোক, লেটেস্ট আপডেট দেই।

আজকে খেয়াল করলাম আরো ৮/১০ জন ইদানিং আমাকে বেশ পেয়ার-মহব্বতের সাথে দেখা হলেই হাসিমুখে "দুলাভাই" ডাকা শুরু করেছে। আবেগে কাইন্দানালাইলেও ব্যাপারটা আমি বেশ এনজয় করছি। 

এই ৮/১০ জন হলো আমার শ্বশুরবাড়ির দারওয়ান, কেয়ারটেকার, শ্বশুরের এবং অন্যান্য ফ্ল্যাটের ড্রাইভারবৃন্দ। 

আমি কিন্তু ব্যাপারটাকে পসিটিভ ভাবেই দেখছি। 

ছোট করেই নাহয় হোক, তবু শুরুটা তো হোক ... 

প্রিন্সিপাল আপা

উত্তেজনার বশে আজকে সকালে একটা আকাম করে ফেলসি।

সাত-সকালে মেয়ের স্কুল থেকে এসএমএস আসল - "Dear Parents, school will remain open on Saturday, Nov 23, 2013. Wednesday's routine will be followed. Principal."

হরতাল নিয়ে আমার মাথা মেজাজ এমনিতেই চরম খিচড়ে থাকে। এর মধ্যে শনিবারও সকাল সাড়ে ৬টায় ঘুম থেকে ওঠার এই বেত্তমিস আবদার দেখে মাথায় রক্ত উঠে গেল। সাথে সাথে রিপ্লাই করলাম "আহা, কি আনন্দ। চলেন আমরা সবাই মিলে হরতালকে স্বাগত জানিয়ে শুক্রবার ভোরেও ধানমন্ডি লেকের ধারে নৃত্য করি। প্রিন্সিপাল আপা কোরিয়গ্রাফার, আমরা সবাই নৃত্যশিল্পী। ভালো তো! ভালো না?"

এখন চরম টেনশন লাগছে রে ভাই। এই এসএমএস যদি আসলেই প্রিন্সিপাল আপা পর্যন্ত পৌঁছায় !!! বাপের পাপে মেয়ে না আবার চাপে পড়ে যায়!!!

ধুর, এইসব আকাম যে ক্যান করতে যাই আমি??? 

সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৩

আমি যা করি, ১০০% ডেডিকেশনের সাথে করি।

আমি যা করি, ১০০% ডেডিকেশনের সাথে করি। বুজছেন?

এই নেন ব্রেকডাউন:  

-----------------------------------------------------
অ্যাডভার্টাইজিং ২৫%
বউ-বাচ্চা-ফ্যামিলি'র সাথে সময় কাটানো ১৫%
বন্ধুদের সাথে আড্ডা ১৫%
গানবাজনা ৫%
ক্রিকেট খেলা দেখা ৫%
ফটোগ্রাফি ১০%
সাইকেল চালানো (রিসেন্ট হুজুগ) ৫%
ফেইসবুকে স্টেটাসবাজি ৫%
টেলিভিশনে উপস্থাপনা ৫% 
ব্যাডমিন্টন (যেহেতু শীত চলে এসেছে) ৫% 
এদিক-ওদিক ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করা ৫%
-------------------------------------------------------
হইসে না সব মিলিয়ে ১০০%? হুমমমমমম? 

ফলাফল:

এজন্যই আমি সাকিব-আল-হাসানের ফ্যান। সাকিব-আল-হাসান আমার ফ্যান না। 


তানিয়ার মা

হে পরম করুনাময়, 

তুমি তানিয়ার মা'র দিকে একটু মুখ তুলে চাও। তোমার এই অসহায় বান্দি তোমার কাছে সোনা-রুপা-মনি-মুক্তা-হীরা-জহরতের জন্য হাত পাতেনি। বাড়ি-গাড়ি-ধন-সম্পত্তিও তার চাওয়া নয় খোদা।

হে পরওয়ারদেগার,

তানিয়ার মা তোমার দরবারে হাত তুলেছে শুধু একজন মনের মত, সুইটেবল, অ্যাজ-পার-রিকোয়ারমেন্ট কাজের বুয়া প্রাপ্তির আশায়, যে কিনা তোমার আরেক বেবাস-নাচার বান্দি, জয়িতা-জীয়নের মা'র জীবনে সুখ-শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে। 

তুমি তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না আল্লাহ, পিলিজ লাগে ... 

[উল্লেখ্য, তানিয়ার মা একজন কাজের বুয়া ম্যানেজ করার এজেন্ট। সুদীর্ঘ ১ মাস ধরে আমার স্ত্রী ৩-বেলা নিয়ম করে এই ভদ্রমহিলাকে ফোন করে যাচ্ছে একটি কাজের বুয়া পাওয়ার আশায়। প্রতিবার ফোন করার আগে সে আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে মোনাজাত করে। খোদার কসম, আমি সাক্ষী।

আল্লাহতা'আলা অতি শীঘ্র তানিয়ার মা'কে একটা ভালো বুয়ার সন্ধান দিক, আমাদের জীবনে আবার সুখ-শান্তি ফিরে আসুক।

আমিন।]

শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৩

সত্যিকারের দেশপ্রেম

এই ব্যাপারটা নিয়ে ঠিক এভাবে আর কেউ ভেবেছে কিনা আমি জানি না। সেদিন আরিফ ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ব্যপারটা মাথায় আসে। দেখেন তো এভাবে ভাবতে পারলে "দেশপ্রেম" ব্যাপারটা আরেকটু ক্লিয়ারলি বোঝা যায় কিনা। 

মনে করে দেখুন তো বছর ১৫ আগে, সারা বছরে শরীরে লাল-সবুজ পতাকা জড়িয়ে রাস্তায় ছুটে বের হয়ে গলা ফাটিয়ে "বাংলাদেশ, বাংলাদেশ" বলে চিত্কার করার মত অকেশন আমরা কয়বার পেতাম? ২৬সে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বরে বাড়ির ছাদে পতাকা উড়াতাম। সাফ ফুটবলে একবার চ্যাম্পিয়ন হলাম, মনে আছে বড়দের পিছে পিছে সেবার পতাকা নিয়ে মেইন রোড পর্যন্ত গিয়েছিলাম। টেনেটুনে আরো কিছু বাড়ালেও বছরে ৪/৫ বারের বেশি আমাদের সাথে পতাকার দেখা হত না। 

বাকি ৩৬০ দিন পতাকা থাকত ভাঁজ করা অবস্থায়। আলমারির ভেতর। 

আর এখন? দু'দিন পরপরই এখন আমাদের পতাকা জড়াতে হয়। দু'দিন পরপরই "বাংলাদেশ, বাংলাদেশ" বলে চিত্কার করে আমাদের গলা ভাঙ্গে। চোখের পানি, নাকের পানি এক করে আমরা "দেশপ্রেম"এর জোয়ারে ভাসি। 

১৬ কোটি মানুষের জীবনে যারা বারবার লাল-সবুজ পতাকা ফিরিয়ে এনেছে, "দেশপ্রেম" যদি শিখতে হয়, চলুন তাদের কাছ থেকেই শিখি। পিচ্চি-পিচ্চি এই ছেলেগুলি ক্যামনে পারে বারবার, আমাদের এভাবে হাসাতে? এভাবে কাঁদাতে? 

আজকে রাতে আমরাই বাংলাদেশে আমার সাথে থাকছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর নাসির হোসেন।

কথা হবে ওদের সাথে, "সত্যিকারের দেশপ্রেম" নিয়ে। রাত ১১টায়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে। 

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৩

ব্যাখ্যাহীন গল্প

এই স্টেটাসটি হয়ত আমি লিখে শেষ করতে পারব। কিন্তু কেউ যদি এই স্টেটাসের সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আমার কাছে জানতে চান, আমি সেটা দিতে পারব না। 

কিছুদিন আগের কথা। বাসায় শুধু আমর বউ পূনম আর আমার দেড় বছরের ছেলে জীয়ন। জীয়ন সারাক্ষনই ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে, সেদিনও করছিল। হঠাত করেই এক দৌড়ে সে আমাদের বেডরুমে ঢুকে যায়। এবং পূনম দৌড়ে আসতে আসতেই জীয়ন এক ধাক্কায় ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়। দরজার লকটা বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা করছিল; মাঝে মাঝেই অটো-লক হয়ে যাচ্ছিল। এবং ... তখনও তাই হলো। ভয়ংকর ব্যাপারটা হলো, বেডরুমের একটা চাবি তখন বেডরুমের ভিতরে, আরেকটা আমার কাছে। আমি অফিসে, তখন খবর দিলেও আসতে মিনিমাম ১ ঘন্টা লাগবে!

বেডরুমের ভিতরে ছেলে একা, মা বাইরে। ছেলে এতই ছোট যে তার হাত দরজার নব পর্যন্ত পৌছবে না, প্লাস ওকে নব ঘুরিয়ে দরজা খোলা ব্যাপারটা বোঝানোও তো পসিবল না। বুঝতেই পারছেন আমার বউ'এর তখনকার অবস্থা। ছোট একটা মানুষ, রুমের মধ্যে টিভি, শোকেস - ভারী ভারী সব জিনিস, যে কোনটা ধরে টান দিলেই তো ভর্তা হয়ে যাবে।

আমাদের বাসার অন্যান্য সব ঘরের দরজার চাবি (শুধুমাত্র বেডরুমেরটা বাদে) আরেকটা জায়গায় রাখা থাকে, সেসব চাবি বের করা হলো। বাকিটা বউ'এর কথাতেই বলি ...

"আমি জানি যে এসব চাবি দিয়ে বেডরুমের দরজা খোলা যাবে না। তারপরও মনে হচ্ছিল একবার ট্রাই করে দেখি। প্রথম ৬/৭টা চাবি লাগলো না। শেষ চাবিটা হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ আল্লাহকে ডাকলাম। তারপর চাবিটা ঢুকলাম। আর ... চাবিটা দিয়ে দরজা খুলে গেল! আমি এক দৌড়ে ভিতরে ঢুকলাম, দেখি জীয়ন বিছানার পাশে বসে বসে একা একা খেলছে। এত স্বস্তি মনে হয় আমি জীবনে কোনদিন ফিল করি নাই। দরজাটা আজকে আল্লাহ খুলে দিসে রাজীব, নাহলে এই চাবি দিয়ে বেডরুমের দরজা খোলার কথা না।"

যে জিনিষটার কোনো সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আমি দিতে পারব না, এবার সেটা বলি।

ওই চাবির গোছার প্রত্যেকটা চাবি দিয়ে আমি আর পূনম মিলে মিনিমাম ৫০০ বার আমাদের বেডরুমের দরজা খোলার চেষ্টা করেছি।

একবারও খোলেনি!!!

বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৩

টেন্ডুলকার

সাংবাদিকতা সম্পর্কে আমার জ্ঞান মোটামুটি শুন্যের কোঠায়। তাই এই ব্যাপারে কোনো জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় যেতে আমি নারাজ। সকাল সকাল একটি বিখাউজ আর্টিকেল আমার মেজাজটা খিচড়ে দিয়েছে বলেই মনের ঝালটা এখানে ঝারছি। দয়া করে এই স্টেটাসটিকে সমগ্র সাংবাদিক মহলের প্রতি কটাক্ষ হিসেবে দেখবেন না। 

প্রথম আলোর খেলার পাতার লীড আর্টিকেলটা কেউ পড়েছেন? গোটা ক্রিকেট-বিশ্ব আজ যেখানে মহানায়কের বিদায় নিয়ে ব্যথিত, শুধু ক্রিকেট-টেন্ডুলকার নয়, বরং সবাই যেখানে মানুষ-টেন্ডুলকারের স্তুতিতেও ব্যস্ত; সেখানে "টেন্ডুলকার অবসর নিতে এত দেরী কেন করলেন?", "আরো ৩ বছর আগেই তার রিটায়ার কথা উচিত ছিল", "স্টিভ ওয়াহ ক্যামনে রিটায়ার করসিলো, লারা ক্যামনে করসিলো?" - ইত্যাদি ত্যানা-প্যাঁচানি টাইপ পকপকানিটা কি না করলেই হত না?

যে টেন্ডুলকারকে নিয়ে তার ঘোর শত্রুও কোনদিন একটা বাজে কথা বলতে পারে নাই (ইন ফ্যাক্ট তার কোনো শত্রু ছিল বলেও কোনদিন শুনি নাই, ওয়াসিম আকরাম বা শেন ওয়ার্ন পর্যন্ত তার প্রশংসায় মুখে ফ্যানা তুলে ফেলছে), সেখানে তার এই বিদায়লগ্নে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার কাছ থেকে আরো সেন্সিবল এবং রেসপেক্টফুল আর্টিকল আশা করেছিলাম!

পিপড়ার কামড়ে সিংহের কিছু হয় না। আমি নিশ্চিত, অর্বাচিনের মুর্খতাও ক্রিকেট ঈশ্বরকে স্পর্শ করবে না।
টেন্ডুলকার ভাই, আমি সামান্য একজন ক্রিকেট ভক্ত। আপনার দলের প্রতি আমার চরম এলার্জি থাকলেও, জানবেন, তার কারণ আপনি নন। আপনাকে আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই শ্রদ্ধা করি। ভালো থাকবেন।

মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

সাইকেল চালানোর সুফল

ভুড়ি কমেছে কি কমে নাই, সেটা এখনো মাপি নাই। 
মানিব্যাগের কয় টাকা বাঁচলো, সেটা এখনো হিসাব করি নাই। 
গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের না হয়ে ট্রাফিক জ্যাম কমাতে কতটুকু হেল্প করলাম, সেসব নিয়ে এখনো ভাবতে বসি নাই। (হরতালে আবার ট্রাফিক জ্যাম কি?) 

তবে ... 
৭/৮ দিনের সাইকেল চালানোর একটা সুফল নিয়ে আমি চরম আনন্দিত এবং বিমোহিত। 

রাতে যে একটা সলিড ঘুম হয় রে ভাই, বলার মত না। কানের পাশে ককটেল ফাটলেও এখন আমার ঘুম ভাঙ্গে না।  যাদের ঘুম আমার মত পাতলা এবং যারা আমার মত মোটামুটি লেভেলের ইনসমনিক, সাইকেল চালানো শুরু করেন ভাই।

আল্লাহর কসম কেটে বলছি, এমন শান্তির ঘুম আমি বহুদিন ঘুমাই নাই। স্বপ্ন পর্যন্ত দরজা নক করে করে টায়ার্ড হয়ে ফিরে যাচ্ছে; ঘুমের মধ্যে ঢুকতে পারছে না। 

আহা, কি যে সুখ! 

"আপনার কাছে দেশপ্রেম মানে কি?"

স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবসে শরীরে লাল-সবুজ পতাকা জড়িয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর নাম'ই কি দেশপ্রেম?

চিত্কার করে দেশাত্মবোধক গান গাওয়া, ক্রিকেট দল কে সাপোর্ট দিতে "বাংলাদেশ বাংলাদেশ" বলে গলা ফাটানোর নাম'ই কি দেশপ্রেম?

...এটুকুতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলে তো দেশ এগুবে না সামনের দিকে।

লিখে জানাবেন কি আমাদের - "আপনার কাছে দেশপ্রেম মানে কি?"

একটা এপিসোড করতে চাই যেখানে শুধুই দেশপ্রেম আর দেশের প্রতি আমাদের তরুণ সমাজের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে কথা বলব।

আপনাদের প্রতিটি মতামত আমাদের জন্য খুব জরুরি।

কতকিছুই তো লেখেন প্রতিদিন ফেইসবুকে। দেশটাকে নিয়ে এবার একটু লিখে দেখুন না।

দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা?

আমরাই তো বাংলাদেশ

তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ

ম্যাথমেটিক্যাল উপায়ে একটু দেশপ্রেমের কথা বলি। 

মনে করি, কোনো একটা ভালো উদ্যোগকে সাকসেসফুল করার জন্য ১০এর মধ্যে মিনিমাম ৬ পয়েন্ট পেতে হবে। যদি সেইরকম সাকসেসফুল হতে হয়, তাহলে লাগবে ৮; আর যদি এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালাআআ টাইপ কিছু চাই তাহলে ১০'এ ১০'এর বিকল্প নাই। 

এবার মনে করি, কেউ একটা বুদ্ধি করলো - আর সেই বুদ্ধিটা যদি কাজে লেগে যায় তাহলে দেশের একটা সমস্যার সমাধান হয়ত হয়েও যেতে পারে। ধরে নেই, সেই বুদ্ধির মেরিট হলো ১০'এর মধ্যে ৩। 

এই অবস্থায় আমাদের সামনে খোলা থাকে দুইটা পথ।

১। (যেটাকে আমরা অনেকেই তাচ্ছিল্যভরে "বাংলাদেশী পথ" বলে থাকি): "এইটা কোনো বুদ্ধি হইলো?", "এইসব করে কোনো লাভ আছে?", "সব দুই নাম্বারী বুদ্ধি, নিজের মার্কেটিং'এর ধান্দা" ইত্যাদি বলে ১০'এ ৩ প্রাপ্ত বুদ্ধিটাকে ক্রিটিসাইজ করা। এতে করে অনেক সময় রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে বুদ্ধিকারী ডিসাইড করে "ভালো কাজের খ্যাতা-পুরি, করলাম না কাজ।" অথবা ঠিক করে "কাউরে লাগবো না আমার, আমি একাই কাজ কৈরালামু। যদি তর ডাক শুনে কেউ নাআসে , তবে একলা চল রে।"

দুই ক্ষেত্রেই লসটা আমাদের। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে "৩" মেরিট ওয়ালা কাজটা "৩"এই থেকে যায়, আলটিমেট রেসাল্ট পাওয়া যায় না। আর প্রথম ক্ষেত্রে তো উদ্দ্যোগটা ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই তাকে ধ্বংস করা হয়। 

২। এটা হলো সেই পথ যেটা বেছে নিলে আমাদের দেশটা শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। "৩" পাওয়া বুদ্ধিটা যদি আপনার মনে ধরে, তাহলে একটু ভেবে দেখুন, ওটাতে আপনি কোনভাবে কনট্রিবিউট করতে পারেন কিনা। ধরুন, আপনার পার্টিসিপেসনে যদি ১ পয়েন্টও যোগ হয়, বুদ্ধির মেরিট কিন্তু ৩ থেকে ৪'এ পৌছে যাবে। এভাবে করে মাত্র ৪/৫ জন একসাথে হলেই কিন্তু ওই "৩" পাওয়া বুদ্ধিটা দিয়েই দেশের একটা ঝামেলাকে এক্কেরে  জিন্দাপুইত্তালানো সম্ভব। 

রক্তসৈনিক'এর নজরুল আর কল ফর ব্লাড'এর রুবাইয়াত একটা সুপার প্ল্যান করেছে। রক্তদাতাদের উত্সাহিত করতে এবং সেচ্ছায় রক্তদানের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ওরা দু'জন তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ যাবে সাইকেল চালিয়ে। মাঝে মাঝে থামবে আর মানুষকে রক্ত দেয়ার গল্প বলবে। আমাদের কাছে বুদ্ধিটা খুব ভালো লেগেছে। তাই আমরাই বাংলাদেশ ওদের সাথে আছে। আমরা আমার সীমিত ক্ষমতা আর বুদ্ধি দিয়ে ওদের বুদ্ধি'তে কিছুটা হলেও কনট্রিবিউট করতে চাই। "আধা পয়েন্ট" বা "এক পয়েন্ট"ই হোক, কিছু তো যোগ হবে। বাই দা ওয়ে, এই বুদ্ধি কিন্তু "৩" পাওয়া বুদ্ধি না, উইথ অর উইথআউট আমাদের বুদ্ধি, এই উদ্যোগ কিন্তু সফল হবেই। (ক্রেডিট কিন্তু ওদের'ই, এটা আবারও ক্লিয়ার করে নিলাম:) 

নজরুল-রুবাইয়াত যা করছে, সেটা দেশপ্রেম'এর একটা আদর্শ উদাহরণ। আপনি যদি বুদ্ধি দিয়ে বা সাহস দিয়ে ওদের সাথে থাকেন, সেটাও কিন্তু দেশপ্রেম'ই। 

এখন, গালি দিবেন না তালি দিবেন, নাকি বুদ্ধি দিবেন - তা আপনার ডিসিশন। 

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

এই দুইজন মহিলা

"কি করিয়া তুমি রহিলা??? 
চুপচাপ সবই সহিলা!!!"

সজল নয়নে কহিলা -
"ভাই রে ...
জান কালা-কালা করে দিল শালা  
এই দুইজন মহিলা"
.
.
.
.
.
.
[আমার এক বন্ধুর দুই বউ। এই কবিতা শুধুই তাকে নিয়ে লেখা।]

"ভ্যাম্পায়ার্স মিট"

আমরাই বাংলাদেশের প্রথম এপিসোডটি ছিল অনলাইন বা সোশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কিভাবে জরুরি সময়ে রক্তের যোগান দেয়া যায়। এপিসোডটি করতে গিয়ে আমাদের সাথে পরিচিত একঝাঁক টগবগে তরুণ-তরুনীর যারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে রক্তদানে মানুষকে উত্সাহিত করতে। আমরা ওদের ডাকি "ভ্যাম্পায়ার" বলে  

আমরা এখন ফিল করতে পারছি যে রক্ত নিয়ে আবার একটা এপিসোড করা উচিত। তার আগে যেটা আমাদের প্রয়োজন, তা হলো আপনাদের সবার কাছ থেকে নানা ধরনের আইডিয়া। আমরা একটা "ভ্যাম্পায়ার্স মিট" করতে চাইছি, যেখানে আপনাদের পাঠানো আইডিয়াগুলো নিয়ে ভ্যাম্পায়ারদের সাথে আলাপ-আলোচনা হবে। এবং যেসব আইডিয়াকে প্রাকটিক্যাল মনে হবে, সেগুলো সবাইকে জানাতে আমরা একটা এপিসোড করব।

ভ্যাম্পায়ার'রা একটা কথা রেগুলার বলে "রক্তের অভাবে একটা মানুষকেও মরতে দিব না, ইনশাআল্লাহ"! আমরা ওদের সাথে আছি। ভালো ভালো আইডিয়া পাঠাতে থাকুন। দেখি না কতটুকু কি করতে পারি।

দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা?

আমরাই তো বাংলাদেশ।

শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৩

টেন্স

আসুন, আপনাদের সহজ পদ্ধতিতে "টেন্স" শিখাই?

প্রেজেন্ট টেন্স : মনির 
পাস্ট টেন্স : বিশ্বজিত 
ফিউচার টেন্স : আপনি অথবা আমি 

হরতাল মোবারক হো। 

শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৩

পুলিশ ভাইয়ারা, এদের ধরা কি এতই কঠিন?

ছোটবেলায় যখন টিফিন টাইমে স্কুল পালিয়ে ঢাকা কলেজের পুকুরে ঝাপাঝাপি করতে যেতাম, কতরকম বুদ্ধি'ই না করতাম চেহারা ঢেকে রাখার। একবারের কথা মনে আছে, ঝুম বৃষ্টির মধ্যে আমরা ৬/৭ জন স্কুল পালালাম; ঢাকা কলেজের মাঠ থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি - স্কুলের দোতলার বারান্দা থেকে আনোয়ারুল করিম স্যার আমাদের চেনার চেষ্টা করছেন। স্যার এবং আমাদের মাঝখানের দূরত্ব মিনিমাম কয়েকশ গজ তো হবেই, তার উপর ঝুম বৃষ্টি। নিজেকে যতই আশ্বস্ত করি যে স্যার নিশ্চই এতদূর থেকে আমাদের চিনবেন না, তবু কোনো লাভ হয় না। সারারাত ঘুমাতে পারি নাই ভয়ে, টেনশনে। 

এবং, পরদিন, ক্লাসে এসে করিম স্যার নাম ধরে ধরে আমাদের ওই কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে যান অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড স্যারের রুমে (আমাদের সময়ে স্কুলের সবচেয়ে ভয়ংকর জায়গা ছিল অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড স্যারের রুম)। বাকি গল্প নাহয় আর না'ই বললাম। 

একটু আগে টিভিতে দেখলাম দুইজন লোক একটা বাসে আগুন দিচ্ছে। ক্যামেরা তাদের দিকে তাক করে আছে দেখেও তারা বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়। ধীরে-সুস্থে প্লাস্টিকের ক্যান থেকে পেট্রল (বা কেরোসিন) ঢাললো, চেক করে দেখল ফুয়েল ঠিকমত ছড়ানো হয়েছে কিনা, বাস থেকে বের হলো, তারপর ম্যাচের কাঠি ছুরে দিল। পুরোটা সময় ক্যামেরায় তাদের প্রাউড চেহারাগুলো দেখা গেল? একটু পর দেখলাম বাস'টা পুরাপুরি জ্বলে পুড়ে গেছে। 

বাংলাদেশ পুলিশে আনোয়ারুল করিম স্যারের মত কেউ নাই? আর যদি এদের পরবর্তিতে ধরা হয়েই থাকে, সেই কাহিনী মিডিয়াতে কেন কখনই দেখি না আমরা? 

পুলিশ ভাইয়ারা, এদের ধরা কি এতই কঠিন? 

বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৩

জয় রাজনীতি, রাজনীতি জিন্দাবাদ

মনির তুমি রেডি হও। আবার ৩ দিনের হরতাল দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা কিছু মনিরকে পুড়িয়ে মারতে পারবো; তোমাকে আর একা থাকতে হবেনা। স্পেসিফিক কাউকে তোমার পছন্দ হলে জানাতে পারো, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তোমার প্রেফারেন্স'এর কথা জানিয়ে দিব। তবে, ব্যাপারটা কি জানো? এখন যে চেহারা দেখে তুমি তোমার বন্ধু সিলেক্ট করবা, তোমার ওখানে যেতে যেতে কিন্তু এই চেহারা আর থাকবে না। 

আমরা যখন পুড়িয়ে মারি, ভালো করেই মারি। চেহারা-ছবি সব পুড়িয়ে-ঝলসে কালো করেই মারি। 

চলুন আমরা সবাই মিলে মনের সুখে মনির'দের পুরাই।

হরতাল মোবারক সবাইকে।

জয় রাজনীতি, রাজনীতি জিন্দাবাদ। 

নাম বিভ্রাট

আমাদের ক্রিয়েটিভ হেড'এর নাম হাসিব। 

কিছুদিন আগে ক্লায়েন্ট সার্ভিসিং'এ একজন জয়েন করলো। তার নামও হাসিব।

পুরনো হাসিব কিছুতেই মানবে না যে এই অফিসে আরেকটা হাসিব থাকতে পারে। নতুন হাসিবের ভালো নাম হলো "ওমর হাসিব"। সুতরাং এই অফিসে তার নাম হলো "ওমর"। যদিও, প্রথম কিছুদিন হাসিব বলে ডাকই দিলে দুই বান্দা হাজির হয়ে যেত। 

কিছুদিন পর "আসিফ" নামে আরেকজন জয়েন করলো। সমস্যা আরো বাড়লো। আমি আমার রুমে বসে হাসিব বলে ডাক দিলে ৩ বান্দা এসে হাজির হয়। পুরনো হাসিব, অমর হাসিব এবং আসিফ। সমস্যার সমাধানে আবার এগিয়ে এলো ভালো নাম। আসিফের ভালো নাম "কাজী আসিফ"। সুতরাং এই অফিসে আসিফের নতুন নাম হলো "কাজী"। এবং ওমর হাসিবকে আবারও সাবধান করা হলো, যেন সে হাসিব ডাক শুনলেই দৌড় দিয়ে চলে না আসে। 

লেকিন ... পিকচার তো আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত ... 

ওমর হাসিব ফোটোগ্রাফি করে। ওদের একটা গ্রুপ আছে যারা বিভিন্ন ইভেন্টে ছবি তোলে। আমাদের একটা ইভেন্টের জন্য ওকে বলে হলো যেন ও আরেকজনকে সাথে নিয়ে এসে ফোটোগ্রাফিটা করে ফেলে। 

পরদিন ওমর একটা ছেলেকে নিয়ে আসলো। জিগ্গেস করলাম, কি নাম ভাই তোমার? 

হাসিমুখে সে জবাব দিল - "ভাইয়া, আমার নাম ওমর।" 

... ওরে রে ... কেউ আমারে পুইত্তালারে ... এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালা ... 

[... ওমরের আজকে বৌভাত (নতুন ওমরের); কাজের ভেজালে যেতে পারছি না। দোওয়া থাকলো তদের দুইজনের জন্য। ভালো থাকিস।]

সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৩

কোঁত দাও বাবা, আরেকটু জোরে কোঁত দাও

রবিবার সকাল। নাস্তার টেবিলে আমরা। হঠাত ফোন বাজলো; অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্লায়েন্ট'এর ফোন। বউ'কে বললাম পুত্রকে নিয়ে পাশের রুমে যাও এন্ড প্লিজ   মেইক শিওর যেন ফোনে কথা বলার সময় কোনো ডিস্টার্ব না হয়। 

বউ রিলিজিয়াসলি কথা শুনলো, পুত্রকে পাশের রুমে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। আমি শান্তিমত ফোনালাপ চালিয়ে যেতে থাকলাম। 

ফোনালাপের শেষ পর্যায়। খোদাহাফেজ বলার ঠিক পূর্ব মুহূর্ত। দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম, দেখি বউ ব্যস্ত ভঙ্গিতে কোনদিকে না তাকিয়ে ডাইনিং রুমের দিকে আসছে। আর বেশ উচ্চ-স্বরে পটি'তে বসা পুত্রকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলছে। 

খোদাহাফেজ বলতে বলতে আমার মহা গুরুত্বপূর্ণ ক্লায়েন্ট সাহেব যে ক'টি শব্দ শুনেছেন তা হলো:

"কোঁত দাও বাবা, আরেকটু জোরে কোঁত দাও ... " 

আরিফ আর হোসেন

আরিফ আর হোসাইন - একটি (মতান্তরে দু'টি) সমস্যার নাম: 

বেশ কড়াকড়ি সিকিউরিটি-ওয়ালা এক জায়গায় মিটিঙে গেছি আমি আর আরিফ ভাই। কথা ছিল মেইন গেটের বাইরে আমাদের নামে সিকিউরিটি পাস ইস্যু করা থাকবে, আমাদের শুধু কালেক্ট করে নিতে হবে। আরিফ ভাই গাড়ি ড্রাইভ করছিল, তাই তাকে গাড়িতে বসিয়ে আমি গেছি পাস কালেক্ট করতে। 

৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলাম লাইনে। তারপর আরো ৫ মিনিট বিভিন্ন খাতা/রেজিস্টার খুঁজে বিরক্ত অফিসার জানালো যে আমাদের নামে কোনো পাস ইস্যু করা নাই, আমরা যেন ভিতরে যোগাযোগ করি। যার সাথে মিটিং, তাকে ফোন দিলাম। বেশ বিব্রত হয়ে তিনি বললেন - "একটু ওয়েইট করেন রাজীব ভাই, আমি এখনি ইন্টারকমে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিচ্ছি।"

আমার সামনেই ইন্টারকমে ফোন আসল। ব্যাটা ফোন রাখতেই আমি বেশ কনফিডেন্টলি এগিয়ে গিয়ে বললাম "ভাই, ফোনটা মনে হয় আমাদের জন্যে এসেছে তাই না?" চোক্ষা মুখ করে ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন - "ভাই, আপনার নাম বলেন।" বললাম "রাজীব হাসান চৌধুরী"। ফিচেল একটা হাসি হেসে ব্যাটা বললো "জ্বি না ভাই, আপনার নামে কোনো ফোন আসে নাই।" 

"কি বলেন? এইমাত্র আপনাকে মানিক সাহেব ফোন দেই নাই?"
"জ্বি, মানিক সাহেবই ফোন দিসেন। কিন্তু আপনার নাম বলে নাই।"
"আপনি ঠিক শুনেছেন ভাই? দুইজনের কথা বলেন নাই মানিক সাহেব?"
"জ্বি বলসেন, কিন্তু তাদের মধ্যে আপনার নাম নাই।"

আমার বিরক্তি তখন চরমে। 

"দুইজনের নাম কি কি বলেছেন একটু কষ্ট করে বলবেন?"
"জ্বি। আরিফ আর হোসেন।"
"ঠিক আছে, বুঝলাম। আরেকজনের নাম কি বলেছে?"
"আরে ভাই, কথা বুঝেন না নাকি? বললামই তো মানিক সাহেব 'আরিফ' আর 'হোসেন' নামে দুইটা পাস ইস্যু করতে বলসে।" 

কেউ আমারে পুইত্তালা রে, এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালা। 

আমার ডেসপারেট চেষ্টা - "ভাই আমার আরিফ আর হোসেন দুই'জন মানুষ না রে ভাই, ওনারা একজন মানুষ। ওনার নামই হইলো আরিফ আর হোসেন। আমি আরেকজন। দয়া করে কি আমার নামে একটা পাস ইস্যু করা যায়?"

ব্ল্যাঙ্ক লুক দিয়ে উনি প্রশ্ন করলেন, 
"তাহলে আপনে কে?" 

আমারে কেউ পুইত্তালা রে, এক্কেরে জিন্দাপুইত্তালা। 



রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৩

আমি একটা মহা-কুফা


আমি মাঠে গিয়ে কোনদিন বাংলাদেশকে জিতাতে পারি নাই। শেষবার মাঠে গেসিলাম বড় ভাইদের আশ্বাসে "ধুর ব্যাটা, সব কুসংস্কার। আমাদের সাথে চল, দেখবা আজকে ঠিকই জিতে ফিরবা।" 

সেটা ছিল ওয়ার্ল্ড কাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৬৭ রানে অল আউট হওয়ার খেলাটা। 

এরপর থেকে আর বাংলাদেশের খেলা দেখতে মাঠে  যাই নাই। ফ্রি টিকেট পেয়েছি, এরে-তারে গিফট করে দিয়েছি। আমার কাছের মহলে এ ব্যাপারটা গোপন কিছু না। এমনও অনেকবার হয়েছে, আমি অফিসে বসে খেলা দেখছি, বাংলাদেশ খারাপ খেলছে; আমার মেয়ে ফোন করে রীতিমত চার্জ করেছে "বাবা, তুমি স্টেডিয়ামে যাও নাই তো? খবরদার, স্টেডিয়ামের আশেপাশেও যেন তোমাকে দেখা না যায়। সাবধান।" 

এবার প্রথম ওয়ান ডে টিভিতে দেখেছি। সেকেন্ড'টার সময় মাঝে মাঝে টিভিতে উঁকি দিয়ে খবর নিয়েছি। আমার বদ্ধমূল ধারণা, আমি একটা মহা-কুফা। সবাইকে নিয়ে মজা করে খেলা দেখলেই আমরা হারবো; তাই আমি গোপনে খেলা দেখি। আজকের খেলায় ওরা ৩০৭ করার পরও মন বলছিল আমরাই জিতব। অফিসে ফাটিয়ে সবাই খেলা দেখেছে, আমি বাইরে বাইরে থেকেছি, মাঝে মাঝে রেডিওতে চুপিচুপি কমেন্ট্রি শুনেছি। শেষ দুই ওভারের আগে টিভির সামনেই যাই নাই। (ততক্ষণে মোটামুটি আমরা জিতেই গেছি) :) 

দরকার নাই ভাই আমার মাঠে যাওয়ার, দরকার নাই সবার সাথে মজা করে খেলা দেখার। আমার কুসংস্কার'এরই জয় হোক। আমি একা একা আঙ্গুলের অদৃশ্য নখ কামরাতে কামরাতে বাংলাদেশকে জিতাতে থাকি। জিতে যাওয়ার পর চিল্লাইতে পারলেই আমি খুশি।