শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৩

গোলকিপার


একজন গোলকিপারকে গালাগালি দিয়ে দল থেকে বের করে দেয়া হলো। তার অপরাধ, "ব্যাটা, ফুটবল হলো গোলের খেলা। তুই ব্যাটা দিনের পর দিন ধরে ফুটবল খেলোস, একটাও গোল দিতে পারস না। যা ভাগ, আমার টিমে তোর কোনো  জায়গা নাই।" গোলকিপার বেচারা কাকুতি-মিনতি করে বলল, "বস, আমাকে আরেকটা সুযোগ দেন, আমি গোল দিয়েই দেখাবো।" 

সুযোগ দেয়া হলো। ফলাফল: গোলকিপার স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে একটা গোলও দিতে  পারল না। এবং তার জায়গায় আরেকজন অনভিজ্ঞ প্লেয়ার  গোলকিপিং করায় তার দল ডজন-খানেক গোল খেল। 

ভাই রে, 
১। সবাই ভালো স্ট্রাইকার হতে পারে না; চাইলেও পারে না। ঠিক তেমনি, সবাই ভালো গোলকিপারও হতে পারে না। 
২। গোলকিপার তার দায়িত্ব ঠিকমত পালন না করলে, বাকিরা হালি-হালি গোল করলেও কোনো লাভ হবে না। দলের বাকিদের রোল সম্পর্কেও কিন্তু একই কথাই খাটে।
৩। গোলকিপারের কিন্তু তার দলের বাকিদের প্রতি অগাধ আস্থা - তার বাড়িয়ে দেয়া বল থেকেই, কাটিয়ে-কুটিয়ে তার স্ট্রাইকার বন্ধু ঠিকই গোল করবে। 
৪। স্ট্রাইকার বন্ধুও কিন্তু পুরাপুরি কনফিডেন্ট; নিজেদের গোলপোস্ট নিয়ে অন্তত তাকে চিন্তা করতে হবে না। গোলকিপার বন্ধু তো আছেই। 
৫। আর, কিছু দর্শকের কাজ হলো মজা নেয়া। গোলকিপারকে গোল দিতে না পারা নিয়ে খোঁচাবে, স্ট্রাইকারকে গোল খাওয়া নিয়ে খোঁচাবে - পিছন থেকে টেনে ধরার মধ্যে যে কি বিজাতীয় একটা সুখ তারা খুঁজে পায়, তা শুধু তারাই জানে। যাই হোক, ও নিয়ে প্লেয়ারদের চিন্তা করলে চলবে? 

যে যার কাজটা ঠিকমত করতে পারলেই কিন্তু দল জিতবে। কিছু লোক কটু কথা বলবেই। কিন্তু তা শুনে যদি গোলকিপার গোল দিতে দৌড় দেয়; তাহলে তো সর্বনাশ।

আশেপাশে ভালো কিছু ঘটার সুবাতাস পাচ্ছি। আমি সেই কতিপয় বোকা-দর্শকের মত গাবর নই যে উল্টাপাল্টা সমালোচনা করে সবার মনবল ভেঙ্গে দিব। 

শুরুটা তো হোক রে ভাই, দেখি না কি হয়। দেশটা তো আমাদেরই, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৩

"আমরাই বাংলাদেশ" - page desicription


যারা ঢালাও ভাবে বলে "দেশপ্রেম" একটা হারিয়ে যাওয়া শব্দ, আমরা সে'দলের মানুষ নই। যারা কথায় কথায় ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে "গোল্লায় গেছে এই দেশ। নাই রে ভাই, এই দেশের আর কোনো ভবিষ্যত নাই", আমরা তাদের সাথেও নেই। আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি, দেশ সেদিকেই যাবে, যেদিকে আমরা তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাব। খুশির ব্যাপার কি জানেন? দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অগুণতি মেধাবী মুখ প্রতিদিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের দেশটা একা না। বুদ্ধিদীপ্ত, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অগুণতি তরুণ যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিছু একটা করার। আমরা তাদের পাশে থেকে সাহস যোগাতে চাই, নিজেদের সাধ্যে যতটা কুলায়, ততটা দিয়ে ওদের এগিয়ে যাওয়ার পথটা মসৃন করতে চাই। একা হয়ত অনেককিছুই করতে পারব না, কিন্তু সবাই এক হলে, অনেক বড় স্বপ্নও সত্যি করে ফেলা সম্ভব। 

"আমরাই বাংলাদেশ" নিঃস্বার্থ এই দেশপ্রেমিকদের কথা বলবে - যেন তাদের দেখে আরো হাজার দেশপ্রেমিকের জন্ম হয়। "আমরাই বাংলাদেশ" শুধু সমস্যা নিয়েই কথা বলবে না, বরং সবাইকে সাথে নিয়ে সমস্যার সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়বে। যেখানেই কেউ দেশের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে, "আমরাই বাংলাদেশ" তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্ল্যাটফর্ম। আমরাই বাংলাদেশ নিছকই একটা টেলিভিশন প্রোগ্রাম না, বা শুধুই একটা ফেইসবুক পেইজ না। "আমরাই বাংলাদেশ" একটা পথচলার নাম, চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়ে কিছু করে দেখানোর বিশ্বাসের নাম। 

শুরুটা তো হোক। দেখি না কি হয়। দেশটা তো আমাদেরই, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

জাহান্নামের দেয়াল


জাহান্নামে একেক দেশের পাপীদের একেকটা দেয়াল-ঘেরা জায়গায় রাখা হয়। উঁচু-উঁচু সব দেয়াল। ৫০০ ফুট, হাজার ফুট, পাঁচ হাজার ফুট উঁচু দেয়াল। তারপরও পাপীদের পালানোর কত চেষ্টা। তাদের পালানো আটকাতে দেয়ালের নিচে পাহারা দেয় ইয়া-বিশাল মোঁচ-ওয়ালা জল্লাদ চেহারার সব প্রহরী; সারাক্ষণ তারা দৌড়ের উপর; এদিক থেকে এ পালানোর চেষ্টা করে, ওদিক থেকে ও। কোনো বিশ্রাম নাই তাদের। 

জাহান্নামের দেয়ালের বাইরে চা'এর টং দোকান। প্রতিদিন সেকাহনে বসে বসে চা খায় আর টুএন্টি নাইন খেলে ৪ প্রহরী। অলস জীবন কাটাতে কাটাতে ৪ জনের শরীরে চর্বির পাহাড়, নড়তে চড়তেও কষ্ট হয় তাদের। হঠাত একদিন জাহান্নামের সিকিউরিটি হেড সারপ্রাইজ ভিজিটে আসলেন; ৪ জনকে তাস খেলতে দেখে তব্দা খেয়ে গেলেন; "ওই, তদের কাজ-কম নাই? তোদের দেয়াল কয় হাজার ফুট উঁচু?" কনফিডেন্টলি জবাব দেয় একজন "বস, অনেক উঁচা, পেরায় ৫ ফুট।" হেড সাহেবের তো মাথা নষ্ট - "কস কি মমিন! পাপী আছে আর একটাও? নাকি সব পাখি ফুরুত?" "ধুরো বস, হুদাই টেনশন ন্যান ক্যান? এরা সব বাংলাদেশের পাপী। কেউ পলায় না এখান থেকে, একটা দেয়াল বায়া উঠতে গেলেই আরেকটা পিস থেইকা টাইন্না নামায়! ও মামা, বস'রে ভালো কইরা চিনি দিয়া এক কাপ চা দেও।" 

পুরানো জোক, সবার কমন পড়েছে, তাই না? আমাদের কথাই তো বলছে। আহ!!! কত বিখ্যাত আমরা!!! কি গর্ব লাগছে, তাই না? 

টাইম আউট। অনেক গর্বাগর্বি তো হলো, এইবার চলেন একটু কাজের কাজ করি। যারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে, তাদের একটু পিছন থেকে ঠেলা দেই, টেনে না ধরে।

দেখি না কি হয়। দেশটা তো আমাদেরই, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৩

দেশটা তো আমাদেরই, তাই না?

একটা ভীতিকর ট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি আশেপাশে; এবং বিষয়টা দেখে আমি বেশ শংকিত বোধ করছি।

কেউ যদি ভালো কিছু করতে চায়, ব্যাপারটাকে কেন যেন সবাই এক নিমিষেই পলিটিক্সের সাথে জড়িয়ে ফেলছে। একদল বলছে "সব শালারা সরকারী দলের দালাল, দুইটা ভালো কাজ করে দেখাতে চাইছে যে সরকার কত সফল।" আরেক দল সাথে সাথে বলছে "কি বুঝতে চাইছেন ভাই? সরকার কিছুই করে নাই? আপনারা তাই মাঠে নেমে সব ঠিকঠাক করে দেবেন? ভাই, সব বুঝি, কত টাকা দিসে আপনাদের বিরোধী দল?" ভাববেন না এখানেই শেষ, থার্ড গ্রুপ একটা বিশাল জ্ঞানী মুচকি হাসি দিয়ে বলছে, "লাভ নাই ভাই, ইউনুস সাহেবের সাথে যোগ দিয়ে কোনো লাভ নাই, তৃতীয় শক্তি আর ডোডো পাখি - সেইম কথা।"

একটা মানুষ যদি ভালো কাজ করতে চায়, কেন তার সাথে পলিটিক্সকে মিলাতে হবে? এমনকি কোনো কথা আছে যে ভালো কাজ শুধু পলিটিশিয়ানরাই করবে, আর কেউ করতে পারবে না? নাকি, যারা ভালো কিছু কাজ করতে চায়, তাদের সবারই কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে হবে?

১৬ কোটি মানুষ রে ভাই, ৩২ কোটি সমস্যা। পলিটিশিয়ানরা কয়টা সামলাবে? দুই দল যদি কোলাকুলি করে এক হয়েও যায়, তাও কি শুধু তারা মিলে সব সমস্যা দূর করতে পারবে? নিজেদের কিছু করতে হবে না? যদি সত্যি সত্যিই কিছু মানুষ, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়াই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে রাজি থাকে, কেন খামাখা তাদের পেছন থেকে টেনে ধরবেন? করি না সবাই মিলে কিছু। দেখি না কি হয়।

দেশটা তো আমাদেরই, তাই না?

আমরাই তো বাংলাদেশ 

রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৩

বলদটা বললো কারে?


ফেইসবুকে আওয়ামিলিগ আর বিএনপির কিছু ডাইহার্ড ফ্যান/কর্মী আছে যারা প্রাণপনে (মতান্তরে বলদের মত) "নিজের দলের বিপক্ষে" কাজ করে যায়। এবং অন্ধ সাপোর্টারগুলার মাথা এতটাই মোটা যে এরা কিছুতেই নিজেদের গাধামিটা বুঝতে পারেনা। 

এরা কিছুতেই মানতে পারেনা যে কিছু মানুষ এমন থাকতেই পারে যারা কোনো দলকেই অন্ধভাবে সমর্থন করে না। যারা যেকোনো দলের ভালো কাজকেই ভালো বলে, যেকোন দল খারাপ কাজ করলে তার সমালোচনা করে। যেটা বলছিলাম, ধরেন আমি বিএনপির সমালোচনা করে একটা পোস্ট দিলাম, বিএনপির ফ্যানরা ঝাপিয়ে পড়ল গালাগালির বহর নিয়ে; আমার গায়ে-মাথায়-কপালে-চামড়ায় আওয়ামীলীগের সিল-ছাপ্পর মেরে দিল। তারা বুঝলোও না যে আমার মাথায় তারা কোন জিনিষটা ঢুকিয়ে দিল - "ভাই, এই যদি হয় বিএনপির দলবলের অবস্থা, আর যারেই ভোট দেই - বিএনপিকে দিব না।" 

এতটুকু কথা পড়ে বিএনপি সম্প্রদায় কিন্তু ৫০০% শিওর হয়ে গেছে যে আমি মনেপ্রাণে একজন আওয়ামী সাপোর্টার। তাহলে শোনেন, সেইম টাইপ ইশটুপিট্  আপনার বিরোধী দলেও আছে। তারাও আওয়ামিলিগ নামে কিছু একটা বললেই ঘাউ করে ওঠে। আপনার কারণে আপনার বিএনপির যদি একটা ভোট কমে যাওয়ার পথ সুগম হয়ে থাকে, শিওর থাকেন, আপনার কাউন্টারপার্টের কারনে তার আওয়ামিলিগও একটা ভোট হারানোর পথে এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। 

ভাই, সোজা কথাটা ক্যান আপনাদের মাথায় ঢোকে না বলেন তো? দুই দলেরই ভালো দিক আছে, দুই দলেরই খারাপ দিক আছে। এবং এই সত্যটা আপনারা আমার মতই জানেন। আজাইরা কামে যতবার খ্যাক খ্যাক করে উঠবেন, আপনার বিপক্ষ দল ততটাই লাভবান হবে। জেগে থাকা মানুষের ঘুম ভাঙানো যায়না, এই কথাটা বহুবার শুনেছি, ইদানিং আপনারা যেন এটা প্রমানের জন্য প্র্যাকটিকাল ক্লাস খুলে বসেছেন! 

আমি নৌকাও করি না, ধানের শীষও করি না। নিরপেক্ষ নামক কোনকিছু  কিন্তু এক্সিস্ট করে না। যে ভালো কাজ করবে, আমি আসলে তার পক্ষে। বাংলাদেশের কন্টেক্স্ট'এ বললে, যে খারাপ কাজ কম করবে, আমি তার পক্ষে। বাংলাদেশে যে এখন পর্যন্ত তৃতীয় শক্তি রেডি হয় নাই, এটা বোঝার মত বুদ্ধি আমার মাথাতেও আছে। যার মানে হলো, ভোট এই দুই দলের একজনকেই দিতে হবে আমার। সো, সিম্পল ডিসিশন হলো - যেই দলে এই টাইপ অন্ধ-গাবর-মানুষ বেশি, আমি সেই দলের সাথে নাই।

দিলাম মনে হয় এনাদের মাথায় গিট্টু লাগিয়ে। মাথা চুলকাতে চুলকাতে নিশ্চয়ই এখন দুই দল'ই ভাবতে বসে গেসে - "এত দুনিয়া-দাড়ি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কি রাজীব চৌধুরী গালিটা দিল কারে?"

শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

বাংলাদেশের সবচাইতে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রফেশন





কোনো একটা কারণে আজকে মাথার মধ্যে একটা ইস্যু ঢুকে বসে আছে। ইস্যুটা খোঁচাচ্ছে খুব। তাই ভাবলাম শেয়ার করি। 

আমরা সবসময় আমাদের কাছের মানুষদের দোষ-ত্রুটি নিজেদের মাঝেই লুকিয়ে রাখি। আমাদের খারাপ অবস্থাটা দিনদিন আরো খারাপ হওয়ার পিছনে কি এটা একটা বড়সর ভূমিকা রাখছে না? একটু ভেঙ্গে বলব? 

ধরুন, আমার বন্ধু ড্রাগস্ নেয় - সেটা আমি কখনোই আমার বাবা-মা'কে জানাইনা। একদিন বন্ধুর দেখাদেখি আমিও নেশা করা শুরু করি। তখন আমার ফ্যামিলি চেষ্টা করে ব্যাপারটাকে গোপন করে রাখতে। কারণ লোকজন তো তখন নিজের ফ্যামিলি নিয়েই আজেবাজে কথা বলবে। 

এবার আরেকটু বড় এঙ্গেলে ভাবুন। বাংলাদেশের সব পেশাতেই এখন কম-বেশি খারাপ মানুষ ঢুকে পড়েছে, এবং এই পার্সেন্টেজ দিন দিন আরো বাড়ছে। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন কেউই কিন্তু নিজের পেশাটাকে সবচাইতে খারাপ পেশা বলে মেনে নিতে রাজি না। ঠিক সেই নেশাগ্রস্থ ছেলেটার বাবা-মা'র মত,  নিজের পেশার বা নিজের ইন্ডাস্ট্রি'র দোষ-ত্রুটিগুলি আমরাও চেষ্টা করি নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখতে। প্রেস্টিজ ইস্যু বলে কথা। আমাদের বক্তব্যগুলো এই টাইপ হয় সবসময় "কোন লাইন'এ দুই নম্বর লোক নাই বলেন? সব প্রফেশনই পঁচে গেছে; আমাদেরটা তো তাও এখনো কিছুটা ভালো আছে।" পুলিশরা বলে রাজনীতিবিদরা বেশি খারাপ, টিচাররা বলে ডাক্তাররা বেশি খারাপ, সরকারী চাকরিজীবিরা কিছুতেই মানবেন না যে তারাই সবচাইতে রটেন, আবার প্রাইভেট চাকরি যারা করেন তাদের বক্তব্য'ও ভিন্ন কিছু না। বিপদ হয় যারা লাইমলাইটে বেশি আসে, তাদের। সবার সহজ টার্গেট হয়ে যায় তারা। আশরাফুল জাতির কলংক হয়ে যায় এক নিমিষে, অনন্ত জলিলের গুষ্টি উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে যায় পুরা জাতি। আমার কি মনে হয় জানেন? আমরা জাস্ট নির্লজ্জের মত অভিযোগের তীরটা যেন নিজের গায়ে না লাগে, সেজন্য এভাবে আমরা তীরটা ডাইভার্ট করে দেই। 

আমি বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন ইন্ডাস্ট্রির একজন মানুষ; এবং আমিও মোটামুটি বেহায়ার মতই এই ইন্ডাস্ট্রির দিকে যেন কেউ আঙ্গুল না তোলে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকি। নিজের ফ্রেন্ড সার্কেলে অন্য এজেন্সির করা বিজ্ঞাপনের পিন্ডি চটকে লাল করে ফেললেও, পাবলিক ফোরামে কখনো সমালোচনা করি না। ভাবটা থাকে এমন -  "কোন লাইন'এ দুই নম্বর লোক নাই বলেন? সব প্রফেশনই পঁচে গেছে; আমাদেরটা তো তাও এখনো কিছুটা ভালো আছে।" 

মজার জিনিস কি জানেন? এই যুক্তিটা কিন্তু আমি অন্তর থেকেই বিশ্বাস করি। যেমন করে বাকি সব প্রফেশনের মানুষরা। 

ভালই তো? ভালো না? যতদিন না পর্যন্ত "বাংলাদেশের সবচাইতে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রফেশন"এর তকমাটা গায়ে না লাগছে, এভাবেই চালিয়ে যাই। কি বলেন? 



বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৩

মিড-লাইফ ক্রাইসিস

আমার অফিসে একটা আর্ট ডিরেক্টর নিব। ২/৩টা ক্যান্ডিডেটের ইন্টারভিউ করা হয়েছে। এখন আমার ক্রিয়েটিভ হেড ডিসিশন নিবে। গত এক মাস ধরে আমি প্রতিদিন আমার ক্রিয়েটিভ হেডকে গুতাই; "হাসিব, যেকোনো একটা ছেলেকে সিলেক্ট কর, ফাইনাল কর, জয়েন করতে বল।"

এটা নিয়ে আমার অফিসে কোনো উত্তেজনা নাই।

ক্লায়েন্ট সার্ভিসিং'এ একটা ইন্টার্ন নেয়া হবে। আমার ক্লায়েন্ট সার্ভিসিং হেড অনেকগুলা ইন্টারভিউ নেয়ার পর একটা মেয়েকে পছন্দ করেছেন। আমাকে দেখালেন, আমি গো অ্যাহেড দিলাম। পরশুদিন সার্ভিসিং হেডকে জিগ্গেস করলাম "তৌফিক ভাই, মেয়েটা জয়েন করবে কবে থেকে।"

অফিস ভর্তি উত্তেজনা আর উত্তেজনা। আমার নাকি মিড-লাইফ ক্রাইসিস শুরু হয়ে গেসে।

ভালো তো? ভালো না? 

অনেকে দিয়েছে সব। সবাই দিয়েছে অনেক।

অনেকে দিয়েছে সব। সবাই দিয়েছে অনেক।


বেশ কিছুদিন আগে একটা স্টেটাস দিয়েছিলাম, যেকোনো বিষয়ে আমাদের চূড়ান্ত নেগেটিভিটি দেখানো এবং ব্যক্তিগত আক্রমন করার স্বভাব নিয়ে। একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিরক্তির বহির্প্রকাশ ছিল সেখানে। খেয়াল করলাম, অনেকেই আমার কথাগুলোর সাথে সহমত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন এটা নিতান্তই একটা ইউজুয়াল এন্টাগনিস্টিক স্টেটাস, আবার কেউ কেউ একটু ব্যঙ্গ করে ক্রিটিসাইজও করেছেন। সবচাইতে ভালো লাগলো একদল মানুষকে দেখে যারা এই হতাশার শেষে একটা আলোর বিন্দু দেখতে পাচ্ছেন। যারা প্রত্যেকেই হয়ত আমার মতই হতাশ, তবু তারা কিছু একটা করার জন্য টগবগ করে ফুটছেন। আমার এই স্টেটাসটা তাদের জন্য। 

চলুন, একটা রিয়ালিটি চেক করি। বড়-বড় প্রমিসের বুলি না কপচে ঠান্ডা মাথায় ভেবে বলি, আসলেই কিছু ভালো কাজ করার জন্য কে কতখানি সময় দিতে পারবে। দেখেন ভাই, সবার'ই ফ্যামিলি আছে, পড়াশোনা-চাকরি-ব্যবসা আছে। সবকিছু সামলে বিশাল একটা সময় ব্যয় করা হয়ত আমাদের কারোর পক্ষেই সম্ভব না, কিন্তু অল্প কিছু সময় মনে হয় আমরা সবাইই দিতে পারি, তাই না? অনেক আগে একটা মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনের জন্যে একটা লাইন লিখেছিলাম "অনেকে দিয়েছে সব। সবাই দিয়েছে অনেক। আর তাই আজ আমরা মাথা উঁচু করে চলি।" (শেষ লাইনটা বোধহয় এমনই কিছু ছিল)

"অনেকে দিয়েছে সব"এর দলে যদি নাও থাকতে পারি, চলুন না "সবাই দিয়েছে অনেক"এর দলে যোগ দেই, দলে দলে। 

কি করতে হবে আপনাদের? হমমমম। ২/১টা উদাহরণ হয়ত দিতে পারব, কিন্তু বাকিগুলি আপনাদেরই খুঁজে বের করে নিতে হবে। একটা দিয়েই শুরু করি। মুমূর্ষু রোগীর জন্যে রক্ত চেয়ে ফেইসবুক'এ রিকোয়েস্ট পোস্ট নিশ্চয়ই আপনারা সবাই কখনো না কখনো দেখেছেন। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত রক্ত দিয়েছেন, কেউ হয়ত স্টেটাসটা শেয়ার করে অন্যদের জানিয়েছেন, আবার কেউ হয়ত ইগনোর করেছেন এই ভেবে যে যেহেতু কমন গ্রুপ, ব্লাড নিশ্চয়ই ম্যানেজ হয়ে যাবে। এবার একজনের কথা বলি যে কিনা "অনেকে দিয়েছে সব"এর দলের একজন যোগ্য দাবিদার। রোজার মধ্যে আমার এক বড়ভাইয়ের জন্য রক্ত প্রয়োজন। আমি ফেইসবুক'এ রক্ত চেয়ে স্টেটাস দিলাম। ৫ মিনিটের মধ্যে ৫ জন ইনবক্স করলো, "ভাইয়া, শুভ'কে চেনেন? ওকে বলেন, ও রক্ত ম্যানেজ করে দিবে। আমরাও বলছি ওকে।" শুভর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল আরিফ ভাই, ঘটনাটির ৫/৬ দিন আগে। ১০ মিনিটের মাথায় শুভ ইনবক্স করলো, "ভাইয়া, আমি শুভ, টেনশন করবেন না, রক্ত ম্যানেজ হয়ে যাবে।" তারপর ম্যাজিকের মত নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ৫ জন ডোনার যোগার হয়ে গেল। খেয়াল করবেন,  দিনটা ছিল রোজার মধ্যে, ইউজুয়ালি রোজার মধ্যে অনেকেই কিন্তু রক্ত দিতে চায় না। এরপর থেকে আমি আর আরিফ ভাই প্রায়ই শুভর সাথে যোগাযোগ করি, ওর রক্ত যোগার করার গল্প শুনি। পরিচয় হয় লিটা নামের একটা মেয়ের সাথে, এক যুগের বেশি সময় ধরে মেয়েটা চেনা-অচেনা মানুষের প্রয়োজনে রক্ত যোগার করে দিচ্ছে।  ভালো লাগে ওদের গল্পগুলি শুনতে। কত মানুষের দোআ পায় ওরা, আর কি লাগে, বলেন? 

শুভ আর লিটা কিছুদিন আগে আমাকে আর আরিফ ভাইকে বলল, "ভাইয়া, এভাবে আর পারছি না। প্রতিদিনই ১০টা, ১৫টা রিকোয়েস্ট আসে। এত ডোনার কোথায় পাব বলেন? কিছু একটা করেন।" আসলেই তো, ওরা কয়েকটা মাত্র ছেলেমেয়ে এত বড় দায়িত্ব কিভাবে পালন করবে। বাই দা ওয়ে, কেনই বা করবে? ঠ্যাকাটা কি ওদের একার নাকি? নাকি অভা টাকা পায় রক্ত ম্যানেজ করে দিয়ে?  

এবার আপনাদের কথায় আসি। কি কি উপায়ে আপনারা সবাই মিলে অনেক কিছু করতে পারেন। 
১। যদি আপনি রক্ত দেয়ার মত উপযুক্ত অবস্থায় থাকেন, তাহলে রক্ত দিতে পারেন। রক্ত দিলে মানুষের কোনো ক্ষতি হয় না। 
২। "রক্ত দিলে যে মানুষের কোনো ক্ষতি হয় না" - এই কথাটা আপনার পরিচিতদের বোঝাতে পারেন, যেন তারা রক্ত দিতে আগ্রহী হয়। 
৩। যদি আপনার গ্রুপ আর রোগীর গ্রুপ না মেলে, অথবা আপনি রক্ত দেয়ার মত অবস্থায় নাই, স্টেটাসটা শেয়ার করে অন্যদের জানাতে পারেন।
৪। আমরা যদি একটা সেন্ট্রাল ডোনার ডাটাবেস বানাচ্ছি, তাহলে তার জন্য বেশি বেশি ডোনার যোগার করে দিতে পারেন। 

অনেক বেশি সময় ব্যয় হবে এ কাজ গুলো করতে? কি মনে হয়? ফেইসবুক'এ নাকি এখন কয়েক লক্ষ বাংলাদেশী (নাকি কয়েক মিলিয়ন); রক্তের মত একটা জিনিস ম্যানেজ করা কি আসলেই কোনো বড় ব্যাপার? আমার তো মনে হয় না। কি পাবেন এই কাজটি করে? একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবেন হয়ত। ইঁদুর-বিড়াল না কিন্তু - আমি মানুষের কথাই বলছি। যে কিনা আরো বাবা কিংবা মা, ভাই কিংবা বোন, সন্তান কিংবা স্বামী বা স্ত্রী। কত বিশাল একটা কাজ করে ফেলতে পারবেন, ধারণা করতে পারছেন? আরেকটা জিনিস হবে তখন, শুভ-লিটা'রা তখন আর নিজেকে একা ভাববে না। অনেক সাহস পাবে ওরা তখন, আরো উত্সাহ নিয়ে ১০০/২০০ ব্যাগের প্রয়োজনেও ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করবে না। একবার ভাবুন তো, এমন কয়েক'শ শুভ-লিটা যদি কোমর বেঁধে নামে দিন বদলানোর প্রতিজ্ঞা নিয়ে, আর সাথে যদি পায় আপনাদের সবাইকে - কত শত সমস্যা তো এক তুড়িতেই উড়ে যাবে। 

ওদের মত অনেকেই রক্ত নিয়ে কাজ করছে। আরো অনেকে আরো হাজারটা ইস্যু নিয়ে নিজ নিজ ক্যাপাসিটিতে কিছু করার চেষ্টা করছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই ওরা হতাশ হয়ে যাচ্ছে, ডানে-বায়ে কাউকে না পেয়ে হাল ছেড়ে দিচ্ছে। কত বড় ক্ষতি হচ্ছে ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ায়, ভাবতে পারেন? একা একা কি মিছিল হয় রে ভাই? আর বিশাল মিছিল না হলে কে কবে পেরেছে নতুন দিন আনতে? 

রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,

"যদি সবাই ফিরে যায়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়—
তবে পথের কাঁটা
ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে॥"


শুভ'রা জেদ করেই একলা চলা শুরু করেছিল। ওদের ডাক আমরা শুনব কি শুনব না - সেই ডিসিশনটা আসলে আমাদেরই নিতে হবে। 

বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৩

সাধারণ মানুষের গল্প

সাধারণ কিছু মানুষের গল্প বলি।

একটা ছেলেকে চিনি। আমার-আপনার মতই সাধারণ একটা মানুষ। চাকরি করে, ফ্যামিলি-বন্ধু-বান্ধব মেইনটেইন করে, কিন্তু পাশাপাশি একটা অসাধারণ কাজও করে। চেনা-অচেনা কারোর যদি রক্তের প্রয়োজন হয়, ছেলেটা সব কাজ ফেলে রক্ত জোগাড়ে লেগে পরে। কত কত মানুষ যে তাদের চরম বিপদে এই ছেলের সাহায্য পেয়েছে, সেই হিসাব হয়ত এই ছেলের কাছেও নাই।

আরেকটা ছেলকে চিনি যে কিনা নিজ উদ্যোগে মাথার ঘাম পা'এ ফেলে পুরা ঢাকা শহর চষে ফেলে টাকা জোগাড় করেছে, কিছু গরীব বাচ্চাকে ঈদে নতুন জামা-কাপড় দেবে বলে। এবং দিয়েছেও, অনেকগুলো বাচ্চাকে, অনেকগুলো নতুন জামা।

আরেকজনকে চিনি, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করেছিল সে। আজকে পুরা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তার বাহিনী, কয়েক হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশু আজ পড়াশোনা করতে পারছে তার এই সুন্দর স্বপ্নটার কারণেই।

সাভারে যখন রানা প্লাজা ধ্বসে পড়ল, কিংবা রামুতে যখন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর জঘন্য আক্রমন হলো, কিছু তরুন-তরুনীকে দেখেছি নাওয়া-খাওয়া ভুলে ছুটে যেতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। কি সাহস, কি শক্তি তাদের! না দেখতে বিশ্বাস করা যায়না।

ফেলে দেয়া প্লাস্টিকের বোতল আর সামান্য পরিমান ব্লিচিং পাউডার দিয়ে একদল অসম্ভব মেধাবী তরুণ লাইট বানাচ্ছে, যা দিয়ে হয়ত একদিন সারা বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির জীবনে শিক্ষার আলো নিয়ে আসা সম্ভব।

এতটুকু পড়ে যারা ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন যে, এদেশে কোনো খারাপ মানুষ নাই, তাদের বলছি। রূপকথার গল্পে যেমন রাক্ষস-খোক্কস-ডাইনি বুড়ি থাকে, এখানেও আছে। "অনলাইন রেপ"এর নাম শুনেছেন? আমাদের মাঝেই কিছু মানুষ নামের কলঙ্ক আছে যারা আপনার বা আমার বোনের ব্যক্তিগত কোনো ছবি তাদের অজান্তেই কোনো অ্যাডাল্ট সাইটে আপলোড করে দেয়। ফলশ্রুতিতে, একসময় সামাজিক ভাবে হেয় হতে হতে অনেক মেয়ে এমনকি আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিয়েছে। মনগড়া গল্প না এটা, এমন ঘটনা আমরা অনেকেই ঘটতে দেখেছি।

কিন্তু গল্পের ভিলেন বধ করতে যেমন নায়ক থাকে, স্বস্তির কথা হলো, এসব ভিলেনদের মারতে নায়করাও কিন্তু পিছিয়ে নাই। একদল অসাধারণ ছেলে-মেয়ে'কে চিনি, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে এই ঘৃণ্য অপকর্মগুলো ঠেকানোর জন্য।

এদের কারো কোনো পলিটিকাল এজেন্ডা নাই। ক্ষমতা বা টাকা-পয়সার লোভ নাই এদের কারোর। এরা একে অন্যকে পিছন থেকে টেনে ধরার অশ্লীল প্রতিযোগিতায় মত্ত না। এরা একসাথে কাজ করতে জানে, কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে। এদের কাজের ক্ষেত্র ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু বিশ্বাস-মন্ত্র সবার একটাই - আমরা যদি না জাগি মা, ক্যামনে সকাল হবে?

এরা কেউ সুপারহিরো না, কেউ উড়তে পারে না, দেয়াল ফুঁড়ে ওপারের জিনিস দেখতে পারে না। কিন্তু ওরা আশ্চর্য সুন্দর সব স্বপ্ন দেখতে পারে, সবাই মিলে সেই স্বপ্ন গুলো যদি সত্যি করতে পারি, ছোট-বড় অনেক কষ্ট হয়ত একদিন সত্যি সত্যি'ই হাওয়ায় উড়ে যাবে।

কাকতালীয় ভাবেই আমার সাথে পরিচয় হয় আজব এক তরুনের; নাম আরিফ আর হোসাইন। অসাধারণ তার চিন্তাধারা, আশ্চর্য সহজ আর সুন্দর তার লেখা। তার পরিচয় জানে না এমন মানুষ ফেইসবুক'এ অন্তত খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা হঠাতই অনুধাবন করি, আমাদের দু'জনের স্বপ্নটা আসলে একই। এই স্বপ্ন নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে পরিচয় হয় কিছু দুর্দান্ত তরুনের সাথে, যাদের স্বপ্নগুলোও একই সুতায় বাঁধা; যাদের কথা দিয়েই এই লেখাটির শুরু। আমরা একমত হই, ওরা ছাড়াও আমাদের অজানা আরো অনেকেই আছেন যারা নিজ নিজ জায়গা থেকে ভালো কিছু করার চেষ্টা করছেন। আমরা তাদেরকেও একসাথে করতে চাই, সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে চাই। আমরা কিন্তু আপনাকেও চাই। কারনটা খুব সিম্পল আর সেটা হলো - আপনি একজন ভালো মানুষ এবং আপনি এই দেশটাকে ভালবাসেন। ভুল বলেছি? বলুন? আর তাছাড়া আপনি হয়ত কখনো বুঝতেও পারেন নি, আপনি কতখানি ক্ষমতার অধিকারী বা অধিকারিনী। মিছিল একটা অদ্ভূত সুন্দর জায়গা, একটা সাধারণ মানুষ যখন মিছিলে যায়, স্লোগানে গলা মেলায়, তখনি সে নিজেকে নতুন করে চিনতে পারে। মিছিলটা রেডি হচ্ছে, আপনারাও রেডি হতে থাকুন।

এবার একটু সিরিয়াস ভাবেই বলি। ইতিহাস তো বলে, দেয়ালে পীঠ থেকে গেলে নাকি সবাই একসাথে ফুঁসে ওঠে। দেয়ালে পীঠ ঠেকতে কি আর বাকি আছে আমাদের? ছেলে-ভোলানো বড় বড় কথা বলা আর শোনা বাদ দিয়ে সময় এসেছে কিছু একটা করার; সবাই মিলে একসাথে। ছোট করেই নাহয় হোক, শুরুটা তো করি।

দেখি না কি হয়? দেশটা তো আমাদেরই, তাই না?

আমরাই বাংলাদেশ।

বিশ্বাস


আমি বিরক্ত। তাই এটা হবে একটা বিরক্তিকর স্টেটাস। 

ডাক্তার দেখাতে সেদিন গেসিলাম মেডিনোভাতে। ওয়েটিং রুমে বসে বসে মানুষের কথা শুনছি; "এরা তো ভাই ডাক্তার না; কসাই। কসাইয়েরও নীতি থাকে, এদের ঐটাও নাই। চেম্বারে ঢুকবেন, কিসু দেখার আগেই বলবে ৫টা টেস্ট করায়ে আসেন। না বইলাও তো উপায় নাই, মেডিনোভা আসলে কি? টেস্ট করানোই তো ওদের আসল ব্যবসা, তাই না?" --- আচ্ছা বলুন তো,আমরা কতজন আছি যারা ডাক্তারদের বিশ্বাস করি? 

চুল কাটাতে গেলে যখন নাপিত বলে; "স্যার, মাথার স্কিনের অবস্থা তো ভালো না, বিলেড লাগাইলেই বেলাড বাইর হয়ে আসপে। একটা নতুন ট্রিটমেন্ট দিয়া দেই? মাত্র ৫৫০ টাকা" --- কয়জন বিশ্বাস করি যে নাপিত আসলেই আপনার ভালো চেয়ে  সত্যি কথা বলছে? আর কয়জন ভাবি যে নাপিত আসলে আপনাকে মুরগি বানানোর তালে আছে?

ছেলে-মেয়ের স্কুলকে বিশ্বাস করি আমরা? বাংলা মিডিয়ামে তো পড়াশোনাই হয় না। টিচাররা ক্লাসে পড়ায় না, কারণ তাহলে তো তাদের টিউশনির ব্যবসায় লালবাতি জ্বলবে। আর ইংলিশ মিডিয়াম আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তো পুরাই বানিজ্য, এইটার জন্য আজকে টাকা দাও, ঐটার জন্য কালকে। ------- তার মানে, যারা মানুষ গড়ার কারিগর, আমরা তাদেরও বিশ্বাস করি না। 

ড্রাইভারকে বিশ্বাস করেন কে কে? হাত তুলুন। ২০০০ টাকার তেল আনতে দিলে ঠিক ঠিক ২০০০ টাকার তেল'ই আনবে, এমন অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে কতজন তার ড্রাইভার কে ভরসা করেন? 

নির্জন রাস্তায়, অচেনা কেউ যদি একবারের বেশি দুইবার আপনার দিকে ফিরে তাকায়, কতজন আছি আমরা, যারা ভয় পেয়ে হাঁটার গতি বাড়িয়ে দেই না? নিজের ভাই-বন্ধুকেই যেখানে দিন-রাত সন্দেহের চোখে দেখি, আর সেখানে অচেনা মানুষকে বিশ্বাস করে সব খোয়াই তো! 

উকিল কে বিশ্বাস! লোল। ক্যামনে কি? 
মিডিয়া? সাংবাদিক? এর মত খারাপ জাত আর আছে নাকি? অনুভূতির টুউউউত। 
এজেন্সি? মদখোর, গাঞ্জাখোর আর ধান্দাবাজদের আড্ডাখানা। নষ্ট হয়ে যাওয়া মেয়েছেলেদের আখড়া।  
ক্লায়েন্ট? ফাঁকিবাজ, ঘুষখোর, কিলিকবাজ, আলুবাজ - কে বিশ্বাস করতে যাবে এদের? 
সরকারী চাকুরিজীবি? পুলিশ? হা হা হা হা। থামেন ভাই, একটু হেসে নেই। 
মসজিদের ইমাম? কিছু আর কইলাম না। 
শিল্পী? সেলিব্রিটি? সিম্প্যাথেটিক হিপোক্রেটস। একটা কথাও বিশ্বাস করি না এদের। 
গার্মেন্টস মালিক? মানুষ নাকি ওরা!
শ্রমিক? শ্রমটা কোথায়? সারাদিন তো আছে আন্দোলন আর ইউনিয়নবাজি নিয়ে। 

রাজনীতিবিদ? ফুল-ইশ-টপ। 

প্রগতিশীল মানে হলো নাস্তিক। ধার্মিক মানে মৌলবাদী, জঙ্গি। শুদ্ধ বাংলা বললে আঁতেল, ইংলিশ বললে ইয়াবাখোড়, বাংলিশ বললে "দেশী কুত্তার বিলাতি ঘাউ"। কথা বললে "শালা, এটেনশন-সিকার", চুপ থাকলে সুবিধাবাদী, এসকেপিস্ট। লেটেস্ট এডিশন- বাপ-মা মানে ব্যাকডেটেড, বোরিং; আর ড্রাগ এডিক্ট সন্তান মানে বাপ-মা'র খুনি। ঈশ্বর, তুমি এখনো চুপ কেন?

কি অদ্ভূত সব পারসেপশন আর যুক্তি নিয়ে আমরা বীরদর্পে এগিয়ে চলেছি সামনের দিকে? (নাকি পিছনের দিকে?)  বিশ্বাস জিনিষটা যেন কি? শেষ কবে, কোথায় যেন একে দেখা গেছিলো? একবিংশ শতাব্দিতে এসে একটি মাত্র বিশ্বাসের গর্বিত বিশ্বাসী এখন আমরা; এবং সেটা হলো:  সামনের-পিছনের-ডানের-বায়ের-উপরের-নিচের প্রতিটা মানুষ কোনো না কোনো উপায়ে আমাকে ধোঁকা দিতে রেডি হচ্ছে। 

ভালো তো। ভালো না? 

শুধু "আমি" আর "আমার" পথই সাচ্চা। বাকি সব শালা কুত্তার বাচ্চা। 


...............
(সরি ভাই, আমি এতটা নৈরাশ্ববাদী মানুষ না। কিন্তু আজকে আসলেই খুব অস্থির লাগছে)

পাষান-স্বামীর স্টেটাস



অনেক অনেক দিন আগের কথা। যখন কলাবাগানে ডাইনোসররা নির্ভয়ে কলাগাছ খেত, কাশ্মির আর কুমিল্লা একই রাজার আদেশ মেনে চলত। যখন একজন বেচারা ফেসবুকারের স্টেটাসে বা ছবিতে তার প্রানপ্রিয় স্ত্রী রেগুলার কমেন্ট দিত। (বিশাল দীর্ঘশ্বাস)

তারপর ... "এক ঝড় এসে ভেঙ্গে দিয়ে গেল, তাই এই জীবনটা এলোমেলো ...!" ঝড়ের গল্প বলি এবার: কোনো এক অলস দুপুরে প্রিয়-বিহনে (প্রিয় অফিসে ছিল) একাকী বধু ফেসবুকে এক আবেগঘন স্টেটাস দিল। (একজ্যাক্ট স্টেটাসটা মনে নাই, বাট "আই লাভ ইউ কুটুকুটু" টাইপ কিছু একটা হবে)। নিতান্তই কিউট একটা স্টেটাস, কিন্তু নিষ্ঠুর-পাষান প্রিয় এই স্টেটাস দেখে বিনা কারণে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো। সাথে সাথে ফোন টু স্ত্রী "আমারে কি জোকার পাইসো নাকি তুমি? নাকি আমি অমুক, নাকি তমুক, যে কথায়-কথায় "জাআআন", "বাবুউউউ" বা "বেবেএএ" বলে পিতলামি দেখাই? হুমমম??? প্রেমের কথা ইনবক্স'এ বলো, স্টেটাস'এ কেন? তোমার এই স্টেটাস তো আমার অ্যাংরি-ইয়াং-ম্যান স্টেটাস'এর বারোটা বাজায়ে দিস্সে। এক্ষুনি ডিলিট কর এই স্টেটাস। বুজছো??"

কোনো মানে হয় বলেন? এত কিউট একটা স্টেটাস'এর জন্য এতগুলা কড়া কড়া কথা কি বেচারী বউ'টা ডিজার্ভ করে?? কক্ষনো না। সো, সে যা করার তাই করলো; চিরতরে সে তার পাষান স্বামী'র স্টেটাস'এ কমেন্ট করা বন্ধ করে দিল। ডাইনোসররা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেল, নতুন নতুন দেশ জন্ম নিল, পাষান স্বামী "জাআআন", "বাবুউউউ" আর "বেবেএএ" ডেকে কত কান্নাই না কাঁদলো; পাথর বউ'এর মন গলাতে পারল না। (আরেকটা বিশাল দীর্ঘশাস)

পাষান-স্বামীর আজ জন্মদিন। শালার-পুত আমাকে পার্সোনালি বলসে যে ঐদিনের ঘটনার জন্য সে দুঃখিত ও অনুতপ্ত। 

কিউট বউ'এর মন কি আজও গলবে না? পাথর কি আজও সফট হবে না? পাষান-স্বামীর স্টেটাস'এ কি আজও একটা কমেন্ট পরবে না???

মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৩

বিলেড লাগাইলেই বেলাড বাইর হয়ে আসপে

যারা আমার মত অল্প-বিস্তর খুশকি-সমস্যায় সমস্যায়িত, তাদের কাছে ইস্যুটা অপরিচিত না। চুল কাটাতে সেলুনে গেলেই তারা নানারকম ভাবে বোঝাতে চেষ্টা করে যে তাদের নতুন আসা ট্রিটমেন্ট এপলাই না করলে এই খুশকি একসময় ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে। পারলে এটাও বলে যে একদিন এই খুশকি থেকে এইডস বা ক্যান্সারও হতে পারে।
ঈদের পরপর বলে আর হরতাল থাকায় আজ সেলুন একদম ফাঁকা; নাপিত সাহেব তার সেলস টার্গেট এচিভ করার জন্য সিরাম ডেসপারেট। তাই আজ তার ক্রিয়েটিভিটিও সেইইই লেভেলে। 

"বুঝলেন স্যার, রোজার মাসে মাথার তালু পুষ্টি পায় কম। তালু যায় শুকোয়ে। আপনের মাথায় তো চিরুনিই দেয়া জাস্সে না, চলটা উঠতেসে। নতুন ট্রিটমেন্টটা দিয়া দেই স্যার; ৯০০ টাকা মাত্র। দিপো স্যার?" 

"চুলও তো স্যার একমাসে ৫০% নাই হয়ে গেসে, এইটাও স্যার রমজানের এফেক্ট। একটা তেল মালিশ দিয়ে দিপো নাকি? ৪৫০ টাকা স্যার। দিপো?" 

এই পর্যন্ত ঠিকঠাক ছিল; কিন্তু মামা তারপর যা বললো, আমি ১০০% কনফার্ম হয়ে গেলাম যে, এই ব্যক্তি পূর্বজন্মে একজন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর কাম একাউন্ট ডিরেক্টর ছিল।

হাতে ক্ষুর নিয়ে ... জুলফি কাটতে গিয়ে ... হঠাত থেমে গিয়ে ... ড্রামাটিক স্টাইলে বললো: 

"ইইই আল্লাহ স্যার, চামড়ার অবস্থা তো পুরাই বরবাদ! বিলেড লাগাইলেই বেলাড বাইর হয়ে আসপে!!!" 

টু গালি অর নট টু গালি


"মনে মনে কই আমি, গাইলের আর হুন্ছোস কি, আমগো গাইল হুনলে পরে, খাইবো মুর্দা ভি ... আমি ফাইসস্যা গেসি মাইনকা চিপায়" 

ফেইসবুক'এ অনেকের ভাষার ব্যবহার নিয়ে আমি বেশ কনফিউসড। হায়দার ভাই, একটু হেল্প করবেন আমাকে? 

ইদানিং অনেককেই দেখছি ফেইসবুক'এ চরম অশ্লীল সব শব্দ ব্যবহার করে ফেলছে, অবলীলায়। হিসাবটা ঠিক মিলাতে পারছি না। যারা অকপটে এজাতীয় চ-বর্গীয় শব্দ ফেইসবুক'এ ইউজ করছে, তারা কি রিয়াল লাইফে, সবার সামনে এভাবেই কথা বলে? বন্ধু-মহলে আমরা কমবেশি সবাইই মুখ খারাপ করি, কিন্তু সেসব আড্ডায় আমরা যেসব কথা বলি তা নিশ্চয়ই আমরা সবার সাথে বলি না। ফেইসবুক তো এখন শুধু বন্ধু-মহলে সীমাবদ্ধ নাই, আমার ফেইসবুক আমার মুরুব্বিরা যেমন দেখেন, অনেক বছরের জুনিয়ররাও দেখে। যেকোন কিছু লিখতে গেলে তাই একটু হলেও ভাবতে হয় আমাকে। এটাই কি স্বাভাবিক না? নাকি আমি যাদের শব্দ-সিলেকশন নিয়ে চিন্তিত তাদের ফেইসবুক'এ এমন "ঝামেলাজনক" কেউ নাই? নাকি তাদের বন্ধুদের জন্য একটা একাউন্ট, মুরুব্বিদের জন্য আরেকটা? নাকি আমিই বেশি কনসারভেটিভ? আনস্মার্ট? মহা জ্বালা রে ভাই, কথায় কথায় চ-চর্চা করাই স্মার্টনেস হয়, তাহলে তো না পারব গিলতে, না পারব ফেলতে! 

এমনও হয়েছে কয়েকবার - মানুষটা হয়ত আমাকে ঠিকমত চেনেও না, আমিও তাকে চিনি না, কিন্তু কমেন্টে বা ইনবক্স'এ এমন একটা অশ্লীল ফান করে বসলো যেটা কিনা চরম কুরুচিপূর্ণ। নোটিফাই করলে খ্যাক খ্যাক করে হাসির একটা স্মাইলি মেরে দিল, "ধুর মিয়া, এগুলা ধরলে হয়, আপনে তো মিয়া একটা বিশাল টুউউউত, খ্যাক খ্যাক খ্যাক।" ভাবখানা এমন যে কুরুচিপূর্ণ শব্দ ছাড়া আবার ফান হয় নাকি? আমার অপারগতা, তাই গিলতে না পেরে তাদেরকে ফেলেই দিতে হলো :(

কুরুচিপূর্ণ কথা বলবোও না, শুনবোও না - এটা কি অনেক বড় চাওয়া নাকি? 

টু গালি অর নট টু গালি, দ্যাট হ্যাজ বিকাম এ বিগ প্রবলেম নাও। 

শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০১৩

"লাইটটা", "হোইক্কা" আর "জোইজ্জা"


"লাইটটা", "হোইক্কা" আর "জোইজ্জা"

গল্পটা ঈদের দিন শুনলাম, ফুপুশ্বাশুরির কাছ থেকে। মজা পেলাম, তাই ভাবলাম শেয়ার করি। গল্পের আগে একটু প্রেফেইস দিতে হবে। আমার শ্বশুরবাড়ির দিকে ভালবাসা প্রকাশের একটা মাধ্যম হলো মানুষকে বিকৃত নামে ডাকা। বুঝিয়ে বলছি। আমার তিন শালা - অমি, রুমী, জামী। কিন্তু তাদেরকে ডাকা হয় ওইম্মা, রুইম্মা, জাইম্মা বলে। পুরুষ-নারী-শিশু-বৃদ্ধ কেউ এই নিয়ম থেকে নিস্তার পাবে না। রুল ইজ রুল। প্রত্যেকেরই একটা করে "আদরের" নাম আছে, এবং এই বিকৃত নামটাই সময়ের সাথে হয়ে ওঠে বেশি পপুলার; আসল নামেটা ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যেতে থাকে। বলাই বাহুল্য, আমার বউ'এরও এমন একটা "আদরের নাম" আছে; যদিও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা ভেবে সেটা এখানে উল্লেখ না করাটাই সমীচীন বলে বোধ করছি। 

যাই হোক, এবার গল্পে আসি। শ্বশুর-সাহেবের গ্রামে এক বাড়িতে থাকে তিন ভাই। তাদের নাম "লাইটটা", "হোইক্কা" আর "জোইজ্জা"; এই নামেই সবাই তাদের চেনে এবং কারো মাথায় কখনই প্রশ্ন জাগে নাই যে তাদের অকিকাকৃত নামগুলো আসলে কি।  কি হতে পারে তাদের নাম, বলুন তো? এনি গেইস?

...........


পরবর্তিতে কোনভাবে জানা গেল, এই তিন ভাইয়ের বাবার শখ ছিল তার ছেলেদের যেন সবাই খুব সম্মানের চোখে দেখে। তাই তাদের নাম রেখেছিলেন "লাট", "হক" এবং "জজ"। যেদিন তারা বড় হবে সবাই তাদের "লাট সাহেব", "হক সাহেব" আর "জজ সাহেব" বলে ডাকবে। গর্বে বাবার বুক ভরে উঠবে।

কিন্তু বিধি বাম। হি শুড নট হ্যাভ আন্ডারএসটিমেটেড দা লোকাল সেন্টিমেন্ট। 

"লাইটটার বাপ", "হোইক্কার বাপ", "জোইজ্জার বাপ" ---- ভদ্রলোকের অবস্থা কিন্তু পুরাই লোল। 

বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০১৩

কম-মিষ্টি সেমাই


জয়িতা-জীয়নের ভবিষ্যতের জন্য কি একটা জিনিস চাইতে পারি আপনাদের দু'জনের কাছে? শুধু আমার জয়িতা-জীয়ন না, বাংলাদেশের সব বাবা-মা'র জয়িতা-জীয়নের ভবিষ্যতের জন্য। আমি জানি আপনারা দু'জন'ই অনেক ধার্মিক মানুষ; আপনারা রোজা রাখেন, যাকাত দেন, খুব অসুস্থ না হলে নামাজ ক্বাযা করেন না। হজ্জ, ওমরাহ'ও করেছেন বেশ কয়েকবার। ধর্মকে জীবনের প্রতিটা ধাপে আপনারা মেনে চলেন, অক্ষরে-অক্ষরে। 

ঈদের প্রকৃত সৌন্দর্যটাও তাহলে একটু উপভোগ করুন না প্লিজ। কোলাকুলিটা করেই ফেলুন না এবার সব ভুলে। ঈদ মানে তো সাম্য, সৌহার্দ, বন্ধুত্ব, ভ্রাত্তিত্ব; জাত-বর্ণ-বিভেদ ভুলে শত্রুকেও বুকে টেনে নেয়া। ঈদের দিন কোলাকুলির উসিলায় আমরা যখন কাছে আসি, হাজার মতভেদের দুরত্বও ঘুঁচে যায়। বিশ্বাস করুন, আপনাদের দূরত্বও কমে যাবে, শত্রুতা বদলে যাবে বন্ধুতায়। আপনারা শুধু কোলাকুলির ব্যবস্থাটা করেন, বাকিটার জন্য  আল্লাহ-তা'আলার উপর আস্থা রাখেন। যারা আল্লাহ'তে বিশ্বাস রাখেন, তারা আল্লাহ'র চমত্কারিত্তেও আস্থা রাখেন। আমি সে দলেরই একজন।

যেকোন একজন ইনিসিয়েটিভটা নিয়ে ফেলুন প্লিজ। ফরমালিটির গুষ্টি কিলিয়ে, আজ রাতেই একটা ফোন করে ফেলুন: "আপা, আমি বলছি। (নাম বলার প্রয়োজনই নাই, আপনাদের কন্ঠ চেনে না, এমন মানুষ এই দেশে নাই) কালকে সকালে বাসায় থাকবেন তো? আমি বেড়াতে আসব, ঈদের সেমাই খেতে। আপনার বাবুর্চিকে চিনি কম দিয়ে সেমাই রাঁধতে বলে রেখেন, এই বয়সে আপনার-আমার দু'জনেরই তো মিষ্টিতে প্রবলেম।" 

বাজি ধরতে পারেন আমার সাথে; কেউ খারাপ বলবে না আপনাদের, কেউ সমালোচনা করবে না। আপনাদের কম-মিষ্টি সেমাই'এর সুইটনেসে পুরা দেশের মুখ মিষ্টি হয়ে যাবে। কত্তো সমস্যার যে এক ঝটকায় সমাধান হয়ে যাবে, আপনরা হয়ত ভাবতেও পারছেন না। 

[পুরা লেখার কোথাও আপনাদের নাম উল্লেখ করিনি; তবু কারোর এতটুকুও সমস্যা হচ্ছে না আপনাদের চিনতে। ভেবে দেখুন তাহলে কি আকুল হয়ে আমরা আপনাদের কোলাকুলির জন্য অপেক্ষা করছি।]

ফুলের নাম


বউ বলল মেয়েকে স্পেলিং-ডিকটেশন পড়াতে। বাংলায় ফুলের নাম। বানান শেখাতে গিয়ে ভাবলাম বিভিন্ন ফুলের নামের অর্থগুলাও একটু বুঝাই। মেয়েও বুঝুক যে বাপের জ্ঞানের ভান্ডার বেশ সমৃদ্ধ। 

"বল তো মা, সূর্যমুখীর নাম সূর্যমুখী কেন? কারণ ... এই ফুলের স্পেশালিটি হলো সুর্য যেদিকে থাকে এই ফুলটাও সেদিক ফিরে থাকে।" 
"রজনী মানে হলো রাত, এই ফুলটা রাতের বেলা ফোটে আর সুন্দর গন্ধ ছড়ায়, তাই এর নাম রজনীগন্ধা"
"ছোটো একটা গাছের মধ্যে অনেকগুলা সাদা ফুল ফোটে; এত কড়া গন্ধ যে চারপাশ মৌ-মৌ করে ওঠে। গন্ধের রাজা হলো এই ফুল, তাই এর নাম গন্ধরাজ।" 

পিতৃপ্রতিভায় মুগ্ধ কন্যা জ্ঞানের পিপাসায় উন্মুখ; আগ্রহভরে প্রশ্ন ছোড়ে:
"বাবা, কামিনী ফুলের নাম কামিনী কেন?" 

মাননীয় স্পিকার, আমি এখন কি করব? 

সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৩

একটি দর্জিময় স্টেটাস


একটি দর্জিময় স্টেটাস: 

১। আমরা একটা বউ নিয়েই হিমশিম খাই, তাহলে বুঝেন ঈদের সময় লেডিস টেইলার'দের অবস্থা কি হয়? একেকটা দর্জিকে আমাদের কত্তগুলা বউ'কে হ্যান্ডেল করতে হয়!!!
২। আমি ১২ বছর ধরে এক ছাদের নিচে থেকেও বুঝতে পারি নাই, যে আমার বউ'এর পছন্দ কোনটা আর অপছন্দ কোনটা। সেখানে আমার বউ কেমনে আশা করে, একটা দর্জি ১০ মিনিট কথা বলেই তার চয়েস বুঝে যাবে!!!
৩। বাই দা ওয়ে, বাংলাদেশে এমন কোনো নারী কি আছে, যে কখনোই তার দর্জির সাথে খ্যাচ-ম্যাচ করে নাই?
৪। ঈদের দিনটাতে মনে হয় দর্জিদের মত এত শান্তিতে আর কেউ ঘুমায় না।

আমার পুরুষ বন্ধুরা কি একমতাচ্ছেন? মেয়ে বন্ধুরা কি দ্বিমতানোর কোনো অপচেষ্টা করবেন? 

রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৩

বিলবোর্ড-তত্বের ব্যাকগ্রাউন্ড-তথ্য


বিলবোর্ড-তত্বের ব্যাকগ্রাউন্ড-তথ্য [কল্পনাপ্রসূত]

একদিন, জায়গামত।

- "বস, বিম্পির রাজপুত্ররা যা যা ধরসে, সবকিছুকে আমাদের বরবাদ করে ফেলতে হবে।"
~ "ঠিক কইসস, ফার্স্ট'এ তাইলে আমরা কি বরবাদ করবো?"
- "বস, ছোট রাজপুত্র বিলবোর্ড'এর ব্যবসা করতো" 
~ "ঠিক কইসস, লেট্স ফুক অল দা বিলবোর্ডস"

[অতঃপর সব বিলবোর্ডকে রেপ করা হলো]

~ "তারপর?"
_ "বস, বড় রাজপুত্র খাম্বার ব্যবসা করতো "
~ "ঠিক কইসস। লেট্স ফুক দা খাম্বা'স নেক্সট" 

[অপেক্ষায় থাকুন ... নিরীহ খাম্বাগুলোর কি দশা হয় দেখার জন্য]

শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৩

এইচএসসি'র রেসাল্ট আর বন্ধু-দিবস


এইচএসসি'র রেসাল্ট আর বন্ধু-দিবস:

আমাদের সময়ে ল্যাবরেটরি স্কুলে "এ" সেকশন ভার্সেস "বি" সেকশনের গ্যান্জাম খুব কমন একটা ব্যাপার ছিল। (আমরা অনেক খারাপ ছিলাম; "সি" সেকশন আর মর্নিং শিফটের পোলাপানদের আমরা মানুষ বলেই মনে করতাম না।)  স্কুলের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত আমরা "এ" সেকশনের ছেলেদের জাত-শত্রু ভাবতাম। এখন ব্যাপারটা যতই সিলি লাগুক তখন এটাই জীবন-মরণ ইসু ছিল। আমাদের "বি" সেকশনের ইফতেখার "এ" সেকশনের পোলাপানের সাথে বেশি মিশত দেখে ওকে মোটামুটি জাতীয় বেইমান টাইপ উপাধিতেও ভূষিত করা হয়েছিল। অবশ্য আমার এই লেখার মূল চরিত্র ইফতেখার না। 

যাই হোক, আমরা ল্যাবরেটরি স্কুলের সবাই দল বেঁধে ঢাকা কলেজে ভর্তি হলাম; এবং কলেজের ২ বছর'ও আমরা সগৌরবে "এ-বি" বিরোধ চালিয়ে গেলাম। কলেজে পড়াশোনা ছাড়া যা যা করা যায়, ২ বছর জুড়ে আমরা মন দিয়ে সবই করলাম। আচমকাই এইচএসসি পরীক্ষা চলে আসল। সীট পড়ল সরকারী বিজ্ঞান কলেজে। হাজার দোআ-মানতের পর'ও লাভ হলো না, আমার সীট পড়ল শত্রু সেকশনের জিয়ার পাশে। মোটামুটি কনফার্ম হলাম, এই শালার কাছ থেকে কোনো হেল্প আশা করাটা পুরাপুরি বোকামি। জিয়া অল-থ্রু ভালো স্টুডেন্ট, এসএসসি'তে স্ট্যান্ড করা ভালো ছেলে; শত্রু সেকশনের ছেলে বলে স্কুলের ৮ বছর প্লাস কলেজের ২ বছরেও আমাদের তেমন বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে নি। 

পরীক্ষা শুরু হলো। বিস্ময়ের পর বিস্ময় উপহার দিতে থাকলো জিয়া। প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়ে, খাতা দেখিয়ে, পারলে আমার খাতায় লিখে দিয়ে হেল্প করতে থাকলো আমাকে। বিজ্ঞান কলেজের অডিটরিয়ামের একটা মোটা পিলারের পিছনে সীট পড়ায় আমি বেহেশতী সুখে পরীক্ষা দিতে লাগলাম। যেখানে ফার্স্ট ডিভিশন নিয়ে সন্দেহ ছিল, পরীক্ষা শেষে ষ্টার মার্কস পাওয়ার স্বপ্ন'ও দেখতে শুরু করলাম - সব'ই জিয়ার কল্যানে। রেসাল্ট দিল, ভয়ে ভয়ে কলেজে গেলাম। সব বন্ধুরা ভরাডুবির শিকার; আর আমি পাপী জঘন্য রকম ভালো রেসাল্ট করে ফেলেছি। ৯০৭ মার্কস, একটুর জন্য স্ট্যান্ড মিস। লজ্জার মাথা খেয়ে দেখি  ....  জিয়ার নাম্বার আমার থেকে কম। (আমি চোর হতে পারি, কিন্তু আমার হাতের লেখা সুন্দর। তাই মনে হয় যেই স্যার খাতা দেখেছে, সে মনে করেছে, আমি অরিজিনাল, আর জিয়া কপি। হি হি।)

বেহায়ারও লজ্জা থাকে। জিয়া'কে খুঁজতে লাগলাম সরি আর থাঙ্কস দুইটাই বলার জন্যে। শালা আবারও আমাকে অবাক করলো; আমার রেসাল্ট নিয়ে ও এতই বেশি উচ্ছাস দেখাতে লাগলো (ট্রাস্ট মি, উচ্ছাসটা ১০০% জেনুইন ছিল), যে আমার মত নির্লজ্জ'ও বিব্রত ফীল করতে শুরু করলো। সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, জিয়া আসলে মানুষ না, সাক্ষাত ফেরেশতা। 

উপসংহার:
১। "এ" সেকশন থেকেও ভালো বন্ধু হওয়া পসিবল 
২। আমার "বি" সেকশনের বন্ধুরা, আল্লাহর কসম লাগে, তোরা বিশ্বাস কর, জিয়া না থাকলে আমিও তোদের মত ধরা খাইতাম। আমি চোর হতে পারি কিন্তু বেইমান না। তোরা যখন আড্ডা শেষে বাসায় গিয়া ঘুমাইসোস, আমিও ঘুমাইসি। লুকায়া লুকায়া পড়ি নাই; বিশ্বাস কর। 
৩। সবাইকে উপদেশ, পড়াশোনায় ফাঁকি দিও না; সবার কপালে ফেরেশতা জোটে না। 
৪। জিয়ার নম্বর আমার মোবাইলে "জিয়া ফেরেশতা" নামেই সেভ করা। 

জিয়া দোস্ত, ভালো থাকিস। আমার বউ-বাচ্চার সাথে তোর এখনো দেখা না হলেও, এই গল্প ওরা কয়েকশো বার শুনে মুখস্থ করে ফেলেছে। একদিন তোর বউ-বাচ্চাকেও এই গল্পগুলা শুনাবো। ইনশা-আল্লাহ। 

সবাই'কে বন্ধু-দিবসের শুভেচ্ছা। 

কোপ


কোপ:

বেশ কিছুদিন আগে ধর্ম নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠির বাড়াবাড়ি দেখে আমরা কয়কজন মিলে একটা গান করেছিলাম, নাম "ধর্ম"; যারা আমার কাছের মানুষ, তারা বললো, কাজটা উচিত হয় নাই; আমাকে নাকি জামাত-শিবিররা এসে কোপাবে। 

রাজাকারদের ফাঁসি দেয়ার ব্যাপারে বিএনপির বেশরম অবস্থান নিয়ে একবার কিছু বললাম, একদল সিদ্ধান্তে পৌছে গেল যে আমি আসলে আওয়ামীলীগের ছুপা সাপোর্টার। যারা আমার কাছের মানুষ, তারা এবার বললো, এ কাজটাও নাকি ঠিক হয় নাই, এবার নাকি বিএনপি আমাকে কোপাবে। 

কালকে স্টেটাস দিলাম, টিভির খবরে বলেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়'এর ফেইসবুক স্টেটাস'এ নাকি ২ ঘন্টায় ২ হাজারের বেশি লাইক পড়েছে - এটা নিয়ে। কাছের মানুষরা আবার চিন্তিত - এই কাজটাও নাকি ঠিক হয় নাই; আমি নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে কটাক্ষ করেছি।  মর জ্বালা। এবার নাকি আওয়ামিলিগ এসে আমাকে কোপাবে। একটু আগে গ্রীন রোড থেকে বনানী আসতে আসতে ৫০টারও বেশি (১০০টাও হতে পারে) নতুন বিলবোর্ড দেখলাম; এই সরকারের গুনগান-সম্বলিত "তথ্যে" ভরপুর, এবং"সারপ্রাইজিংলি"  বিলবোর্ডগুলো মালিক বড় বড় কর্পোরেট হাউজগুলি। ওরা নিশ্চয়ই "ভালোবেসে" এগুলো সরকারকে ধার দিয়েছে। এখন এটা নিয়ে স্টেটাস দিলেও হয়ত আমার কপালে কোপ কনফার্ম; কি বলেন কাছের মানুষরা? 

তাও ভালো ছিলো, বড় বড় সব দলবল আমাকে কোপাবে, নিজেকে বেশ কেউকেটা মনে হচ্ছিল। পরশু একটা "নিষ্পাপ" স্টেটাস দিলাম, বারিধারায় একটা গাড়ি রাত দুপুরে ভো-ভো করে আওয়াজ করে সবার ঘুম হারাম করে - তা নিয়ে। আমেরিকা থেকে এক বড় বোন ইনবক্স করলো "বেশি বাড়িস না ভাইয়া, এসব গাড়ি-ওয়ালাদের বিশ্বাস নাই, কি দরকার এদের পিছনে লাগার?" অন্তর্নিহিত অর্থ হলো - এই রাম-ছাগল ভো-ভো গাড়িওয়ালাও নাকি আমাকে কোপাতে আসতে পারে। 

কাছের মানুষদের ভালবাসা আর কনসার্ন'এর ঝোলে পুরা জাতির মেরুদন্ড যে পুতুপুতু হয়ে যাচ্ছে, সে খেয়াল কি কেউ করছেন? 

(এমনিতেই ফেইসবুকে ভয়ে ভয়ে থাকি, সুন্দর মেয়েদের ছবিতে লাইক বা কমেন্ট করতে গেলেই মগজে গায়েবী আওয়াজ শুনি, "মামা, বেশি বাড়িস না, বউ আসতেসে দাও নিয়া ... কোপাইতে।")

*** রাম-ছাগলটাকে কিন্তু এখনো পাওয়া যায়নি। ভূত-থেকে-ভূতে চলতে থাকুক, কি বলেন? 

শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৩

রামছাগলের ভো-ভো গাড়ি


ইদানিং বারিধারায়, একটা রাম-ছাগল, রাতের বেলা ভয়ংকর আওয়াজ করতে করতে গাড়ি চালায়। রাম-ছাগলটাকে কি কেউ চেনেন?

কাল রাত ১১টার দিকে বারিধারায় বন্ধুর বাসায় আড্ডা দিচ্ছি। কিছুক্ষণ পরপরই চমকে উঠছিলাম রাস্তা থেকে আসা একটা গাড়ির স্কীড করার প্রচন্ড শব্দে। বুঝলাম বুদ্ধি-শুদ্ধি লোপ পাওয়া বড়লোক বাপের একটা রাম-ছাগল সন্তান রাত দুপুরে গাড়ির শো-ডাউন করতে বের হয়েছে। ১২টার দিকে যখন বাসায় ফেরার জন্য বের হলাম, তখনও বালকটা ভো-ভো করে বারিধারা চক্কর কাটছিল।  একবার ভাবলাম কিছুক্ষণ ওয়েইট করি, সামনে দিয়ে গেলে গাড়ি থামিয়ে দুইটা রাম-থাবর লাগাই। বেশি রাত হয়ে যাচ্ছিল দেখে ওয়েইট করাও হলো না, থাবরটাও দেয়া হলো না। 

ফেইসবুক খুব সুন্দর একটা "ভূত-থেকে-ভুতে" মিডিয়াম। ছড়াতে ছড়াতে এই লেখাটা হয়ত ওই রাম-ছাগল বা তার পরিচিত কারো চোখে পরেও যেতে পারে। তার কাছে আমার কিছু কথা পৌছাবার আছে:
১। রমজান মাসে রাত ১২টা মানে অনেক রাত। ধর্মপ্রাণ মানুষ সারাদিনের রোজা আর রাতের তারাবি শেষ করে বিছানায় যায় একটু তাড়াতাড়ি, কারণ সেহরী করতে ভোর রাতে উঠতে হয়। এই ঘুমটা তাদের জন্য খুব জরুরি। 
২। যেকোনো বাসাতেই অসুস্থ, বৃদ্ধ আর শিশু থাকতে পারে।
৩। যে বিকট আওয়াজ তুমি তোমার গাড়ির পশ্চাদ্দেশ দিয়ে ছাড়ছো, তাতে যে কারোরই রাতের ঘুম হারাম হতে বাধ্য। দুর্বল্চিত্ত্ব মানুষের হার্ট এটাক হওয়াটাও অস্বাভাবিক না। 
৪। দয়া করে এই ছাগলামি'টা বন্ধ করো, রাম-থাবর যেদিন চোপায় পড়বে, গাড়ি থেকে না - অন্য কোথাও থেকে ভো-ভো আওয়াজ বের হবে। 

শেষ কথা: 
আব্বুর নিশ্চয়ই অনেক টাকা আছে, তাকে গিয়ে বল গাড়িটা ঠিক করে বা বদলে দিতে। ৩০ মাইল স্পীডের ধোয়া ছাড়তে থাকা ভো-ভো গাড়ির ড্রাইভার'কে স্মার্ট বলে না রে - রামছাগল বলে। 

(রামছাগল খুঁজতে কেউ যদি এই স্টেটাসটি শেয়ার করতে চান, অনুমতির প্রয়োজন নাই) 

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৩

ঈদের পাঞ্জাবি

বউ: তোমার ঈদের পাঞ্জাবি হয়ে গেছে। দর্জির দোকান থেকে তুলে আইনো।
আমি: বাহ্, জোশ। যাক, নতুন ২/৩টা ভালো পাঞ্জাবী হয়ে গেছে আমার। পুরানোগুলা বের করে দিব নে, গরীব মানুষদের দিয়ে দিও। 
বউ: (উইথ এ ঝামটা) তোমার মত মোটা-তাজা গরীব মানুষ পাব কোই আমি, যে পাঞ্জাবী দান করব? 
.
.
মাননীয় স্পিকার, আমার এই লেখাতে কেউ যদি শ্রেনিবিভেদের গন্ধ পেয়ে "গরীব" শব্দটি এক্সপাঞ্জ করতে চান, আমার আপত্তি নাই। কিন্তু মাননীয় স্পিকার, "মোটা-তাজা" বলে এভাবে কটাক্ষ করে কিন্তু আমার বউ'ও একই ভাবে শ্রেণীবিভাজন-দোষে-দুষ্ট। সুতরাং, আমারটা এক্সপাঞ্জ করা হলে তারটাও করতে হবে। 

গরীবের কষ্ট গরীব তো বোঝেই, বড়লোকরাও মাঝে মাঝে বোঝে। কিন্তু মোটার দুঃখ কে বোঝে বলেন? কে কে কে?