পাশের পাড়ার ছালমান ভাই প্রতিদিন বিকালে দলবল নিয়ে মাঞ্জা মেরে আমাদের পাড়ায় আসতো। আর তাদের দেখতে আমাদের মেয়েদের সে কী বেহায়াপনা!
যে মেয়েগুলিকে সেই ছোটবেলা থেকে গার্ড দিয়ে দিয়ে বড় করলাম, আজ তাদের এ কী অধঃপতন! ছি ছি! পাশের পাড়ার হিজু হিজু ছেলেগুলিকে দেখে তাদের এ কি আদেখলামি! ছাদে উঠে, জানালার শিকের ফাঁক দিয়ে - কেন এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মুচকি হাসি??? সিরিয়াসলি, ইজন'ট ইট টু মাচ টু টলারেট?
ওদের বুঝাতে বসলাম। "শুনো আপু'রা। তোমরা ভুল করছ। আমরাই কিন্তু তোমাদের আপন। ছালমান ভাই হল উড়ে আসা ভ্রমর, ফুলে ফুলে মধু খাবে, তারপর ফুড়ুৎ করে হাওয়া হয়ে যাবে। তোমাদের প্রতি তার কোন ফিলিংস নাই। সো, ওদের নিয়ে লাফালাফি বন্ধ কর। তোমাদের প্লিজ লাগে।"
পাষাণ আপু'রা ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল - "এহ, তোমরা তো দেখতে ভাল না। কেমন যেন গরীব-গরীব। আহ, ওরা কি হ্যান্ডসাম। এততোগুলা কিউট। অঅঅঅঅ!"
আমাদের বেলুন ফুটা হয়ে গেল।
বুঝলাম, ছালমান অর তার দলকে শিক্ষা দিতে হবে। পাড়ায় ঢুকলেই একদম ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব। তক্কে তক্কে থাকলাম - একবার পাড়ায় ঢুকে নিক, তারপর মজা বুঝাব।
ওরা পাড়ায় ঢুকল। তারপর ...
ইয়ে মানে ... থাক না ... বাকিটা নাহয় না'ই শুনলেন। মিষ্টি করে কানমলা দিয়ে, আর হাতে দুইটা ললিপপ ধরিয়ে দিয়ে ছালমান ভাই আমাদের চোখের সামনেই আমাদের মেয়েদের সাথে টুকুরটুকুর করতে থাকল।
আমরা কিউট কিউট মুখ করে আঙ্গুল চুষতে থাকলাম।
কিছুদিন গেল। তারপর ভাবলাম, প্রতিশোধ নিব। ওদের পাড়ায় গিয়ে ওদের পাড়াতো সুন্দরি "পাখি"র সাথে টাঙ্কি মেরে আসব।
হায়! সে চেষ্টাও করেছিলাম। লাভ হয়নি। ওদের গলিতে ঢোকার মুখে বড় বড় অ্যালসেশিয়ান কুকুর - ঘেউ ঘেউ করে তাড়িয়ে দিল। আমার মিউমিউ করে দূর থেকে পাখি'কে দেখে নিজ পাড়ায় ফিরে এলুম।
এদিকে আমাদের পাড়ার মেয়েদের আদেখলামি চলতেই থাকল। আমরাও দূর থেকে ওদের পাখি'কে ভালবাসতে থাকলাম। আমাদের চেহারাও ধীরে ধীরে গরীব থেকে গরিবতর হতে থাকল।
বুঝলাম, পুরুষত্বের বেইল নাই। "নাই বলস" এর চেয়ে "মামার বলস" ভাল।
লজ্জার মাথা খেয়ে মুরুব্বী'দের পা ধরলাম। "মামা, আমাদের বাঁচান। কিছু একটা করেন যেন ওরা আর আমাদের পাড়ায় ঢুকতে না পারে। আমাদের মেয়েদের বাঁচান। আমরাও নাহয় পাখিকে ভুলে যাব।"
মামা'রা খেপে গিয়ে বলল - "নালায়েক। লজ্জা করে না তোদের? ইন্দুরের মত চু-চু করতেসোস? নিজেরা কিছু করতে পারোস না?"
আমরা চুপ। জায়গা-বেজায়গায় অনেক ফাঁপরবাজি ঠিকই করতে পারি। তাই বলে ছালমান ভাই'এর সাথে পাঙ্গা? পাগল নাকি? আসলে তো আমরা একটা কিউট জাতি। তাই না? "মামাআআআ, কিছু একটা করেন। আপনাদের পিলিজ লাগে।"
যাই হোক, ফাইনালি মামারা তাদের ভাগিনাদের বীরত্বের দৌড় বুঝতে পেরে এবং ভাগ্নিদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিয়ম জারি করলেন, ছালমান ভাইরা আর এ'পাড়ায় ঢুকতে পারবে না।
ধীরে ধীরে পাড়ায় শান্তি ফিরে এলো।
আমরা অনেক খুশি হলাম। পটকা ফুটালাম, হালুয়া খেলাম, ফেইসবুকে হ্যাপি-হ্যাপি স্ট্যাটাস দিলাম।
দি এন্ড।
-------
জি বাংলা, স্টার জলসা ইত্যাদি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণাতে (অফিশিয়াল কোন নিউজ অবশ্য আমার কাছে নাই) কেন যেন ঠিক খুশি হতে পারছি না। এই সিধান্ত'কে সাধুবাদ জানিয়ে অনেকের "ওহ ইয়াহ, উই ডিড ইট" টাইপ স্ট্যাটাস দেখেও কেন যেন গা জ্বলছে।
এখনো বিশ্বাস করি, আমরা ভাল প্রোগ্রাম দিতে পারলে আমাদের দর্শকরা ও-পাড়ার অনুষ্ঠান গোগ্রাসে গিলত না।
বেশি ভাল লাগত যদি নিয়ম করে এসব চ্যানেল বন্ধ করতে না হত। অনেক বেশি শান্তি লাগত, যদি, বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমিয়ে, চ্যানেলগুলির পলিসি নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে আর বেটার প্রোগ্রাম দিয়ে আমাদের দর্শকদের আমাদের চ্যানেলে আটকে রাখতে পারতাম।
পাড়া-মহল্লা কালচারে বড় হওয়া ছেলে তো, মামা-চাচার লুঙ্গির পিছে লুকিয়ে বীরত্ব দেখাতে লজ্জা লাগে।
সরি।
যে মেয়েগুলিকে সেই ছোটবেলা থেকে গার্ড দিয়ে দিয়ে বড় করলাম, আজ তাদের এ কী অধঃপতন! ছি ছি! পাশের পাড়ার হিজু হিজু ছেলেগুলিকে দেখে তাদের এ কি আদেখলামি! ছাদে উঠে, জানালার শিকের ফাঁক দিয়ে - কেন এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মুচকি হাসি??? সিরিয়াসলি, ইজন'ট ইট টু মাচ টু টলারেট?
ওদের বুঝাতে বসলাম। "শুনো আপু'রা। তোমরা ভুল করছ। আমরাই কিন্তু তোমাদের আপন। ছালমান ভাই হল উড়ে আসা ভ্রমর, ফুলে ফুলে মধু খাবে, তারপর ফুড়ুৎ করে হাওয়া হয়ে যাবে। তোমাদের প্রতি তার কোন ফিলিংস নাই। সো, ওদের নিয়ে লাফালাফি বন্ধ কর। তোমাদের প্লিজ লাগে।"
পাষাণ আপু'রা ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল - "এহ, তোমরা তো দেখতে ভাল না। কেমন যেন গরীব-গরীব। আহ, ওরা কি হ্যান্ডসাম। এততোগুলা কিউট। অঅঅঅঅ!"
আমাদের বেলুন ফুটা হয়ে গেল।
বুঝলাম, ছালমান অর তার দলকে শিক্ষা দিতে হবে। পাড়ায় ঢুকলেই একদম ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব। তক্কে তক্কে থাকলাম - একবার পাড়ায় ঢুকে নিক, তারপর মজা বুঝাব।
ওরা পাড়ায় ঢুকল। তারপর ...
ইয়ে মানে ... থাক না ... বাকিটা নাহয় না'ই শুনলেন। মিষ্টি করে কানমলা দিয়ে, আর হাতে দুইটা ললিপপ ধরিয়ে দিয়ে ছালমান ভাই আমাদের চোখের সামনেই আমাদের মেয়েদের সাথে টুকুরটুকুর করতে থাকল।
আমরা কিউট কিউট মুখ করে আঙ্গুল চুষতে থাকলাম।
কিছুদিন গেল। তারপর ভাবলাম, প্রতিশোধ নিব। ওদের পাড়ায় গিয়ে ওদের পাড়াতো সুন্দরি "পাখি"র সাথে টাঙ্কি মেরে আসব।
হায়! সে চেষ্টাও করেছিলাম। লাভ হয়নি। ওদের গলিতে ঢোকার মুখে বড় বড় অ্যালসেশিয়ান কুকুর - ঘেউ ঘেউ করে তাড়িয়ে দিল। আমার মিউমিউ করে দূর থেকে পাখি'কে দেখে নিজ পাড়ায় ফিরে এলুম।
এদিকে আমাদের পাড়ার মেয়েদের আদেখলামি চলতেই থাকল। আমরাও দূর থেকে ওদের পাখি'কে ভালবাসতে থাকলাম। আমাদের চেহারাও ধীরে ধীরে গরীব থেকে গরিবতর হতে থাকল।
বুঝলাম, পুরুষত্বের বেইল নাই। "নাই বলস" এর চেয়ে "মামার বলস" ভাল।
লজ্জার মাথা খেয়ে মুরুব্বী'দের পা ধরলাম। "মামা, আমাদের বাঁচান। কিছু একটা করেন যেন ওরা আর আমাদের পাড়ায় ঢুকতে না পারে। আমাদের মেয়েদের বাঁচান। আমরাও নাহয় পাখিকে ভুলে যাব।"
মামা'রা খেপে গিয়ে বলল - "নালায়েক। লজ্জা করে না তোদের? ইন্দুরের মত চু-চু করতেসোস? নিজেরা কিছু করতে পারোস না?"
আমরা চুপ। জায়গা-বেজায়গায় অনেক ফাঁপরবাজি ঠিকই করতে পারি। তাই বলে ছালমান ভাই'এর সাথে পাঙ্গা? পাগল নাকি? আসলে তো আমরা একটা কিউট জাতি। তাই না? "মামাআআআ, কিছু একটা করেন। আপনাদের পিলিজ লাগে।"
যাই হোক, ফাইনালি মামারা তাদের ভাগিনাদের বীরত্বের দৌড় বুঝতে পেরে এবং ভাগ্নিদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিয়ম জারি করলেন, ছালমান ভাইরা আর এ'পাড়ায় ঢুকতে পারবে না।
ধীরে ধীরে পাড়ায় শান্তি ফিরে এলো।
আমরা অনেক খুশি হলাম। পটকা ফুটালাম, হালুয়া খেলাম, ফেইসবুকে হ্যাপি-হ্যাপি স্ট্যাটাস দিলাম।
দি এন্ড।
-------
জি বাংলা, স্টার জলসা ইত্যাদি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণাতে (অফিশিয়াল কোন নিউজ অবশ্য আমার কাছে নাই) কেন যেন ঠিক খুশি হতে পারছি না। এই সিধান্ত'কে সাধুবাদ জানিয়ে অনেকের "ওহ ইয়াহ, উই ডিড ইট" টাইপ স্ট্যাটাস দেখেও কেন যেন গা জ্বলছে।
এখনো বিশ্বাস করি, আমরা ভাল প্রোগ্রাম দিতে পারলে আমাদের দর্শকরা ও-পাড়ার অনুষ্ঠান গোগ্রাসে গিলত না।
বেশি ভাল লাগত যদি নিয়ম করে এসব চ্যানেল বন্ধ করতে না হত। অনেক বেশি শান্তি লাগত, যদি, বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমিয়ে, চ্যানেলগুলির পলিসি নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে আর বেটার প্রোগ্রাম দিয়ে আমাদের দর্শকদের আমাদের চ্যানেলে আটকে রাখতে পারতাম।
পাড়া-মহল্লা কালচারে বড় হওয়া ছেলে তো, মামা-চাচার লুঙ্গির পিছে লুকিয়ে বীরত্ব দেখাতে লজ্জা লাগে।
সরি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন