কিছুদিন আগে আমার অফিসের "ওয়ার্ল্ড কাপ ফিভার" নিয়ে একটা ভিডিও আপলোড করেছিলাম, মনে আছে?
আজকে ওই ভিডিওটা করার পিছনের একটা সুন্দর গল্প বলি।
আমরা হঠাৎ করেই ঠিক করি অফিসের ফুটবল নিয়ে পাগলামি নিয়ে একটা ভিডিও করে ফেলার। ভিডিওটা কেমন হবে, কি কি থাকবে এসব নিয়ে যখন প্ল্যান করতে বসেছি, আমার কলিগ রাজীব একটা জোশ আইডিয়া দিল।
"ভাই, পাগলামিটা শুধু অফিসের মধ্যে আটকে রাখতে ইচ্ছা করছে না। আমরা কি এই উসিলায় কিছু মানুষের মধ্যে খুশি ছড়িয়ে দিতে পারি না?"
---------
যেই ভাবা, সেই কাজ।
ভিডিওটা করার সময় শুরু হল অফিসের ভিতর চাঁদাবাজি। কোন নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট নাই, যে যা পারে তাই দিবে। আমাদের এক্সপেকটেশন খুব বেশি কিছু না। রাজীবের প্ল্যান হল, যা টাকা উঠবে তা দিয়ে কিছু বল আর জার্সি কিনে এমন কিছু বাচ্চাদের দিব, যারা এটুকু পেয়েই অনেক খুশি হবে।
--------
ঢাকা শহরে ফাসেরটেক বলে একটা জায়গা আছে, জানেন? আমিও আগে জানতাম না।
এই ফাসেরটেকে ডিনো হালদার নামে এক ভদ্রলোক সুবিধাবঞ্চিত বাচ্চাদের জন্যে একটা স্কুল চালান। ডিনো পেশায় একজন দর্জি। খুব ছোট করে শুরু হলেও স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১৮০ জন। ছাত্রছাত্রীরা এখানে বিনা পয়সাতে পড়ে। ডিনো তার পরিচিত মানুষজনের কাছ থেকে টুকটাক সাহায্য নিয়ে আর নিজের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে স্কুলটাকে চালিয়ে যাচ্ছে।
--------
আমরা সিদ্ধান্ত নেই এই স্কুলের বাচ্চাদের একটু হলেও খুশি করবো। ওদের সাথে যোগাযোগ হল, ওরা রাজি হল। পুরা আরেঞ্জমেনটের দায়িত্ব দেয়া হল আমার আরেক কলিগ রাব্বি'কে।
রাব্বি আর তার দল কিভাবে কিভাবে যেন ম্যাজিক দেখিয়ে দিল। আমাকে ওদের প্ল্যান শেয়ার করল।
"ভাইয়া, প্ল্যান ইজ, আমরা ওদের স্কুলে যাব। বাচ্চাদের মধ্যে একটা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ হবে। আমরা বল, জার্সি, খাবারদাবার নিয়ে যাব। স্কুলের পাশে একটা মাঠ আছে। ওইটা সাজাব। খেলা শেষে বল, জার্সি সব ওদের দিয়ে আসব।"
তারপর একটা হাসি দিয়ে বলল -
"আরও একটা সারপ্রাইজ আছে। ওদের জন্য একটা টিভি আর একটা ডিভিডি প্লেয়ার কিনে ফেলছি। ওগুলাও ওদের স্কুলে গিফট করে আসবো। ওরাও তাহলে ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে পারবে।"
আমি তো পুরাই হব্দ।
"এতো টাকা পাইলা কই?"
"ভাই, চিন্তা কইরেন না। চুরি-ডাকাতি করি নাই। অফিসের পোলাপান'রে হালকা ছিল দিসি। ওতেই টাকা উঠে গেসে। আর এতে কেউ রাগও করে নাই।"
----------
গত ২৮ জুন, শনিবার, অফিস ছুটির দিনে, আমাদের ১৫/২০ জনের একটা গ্রুপ মাল-সামান নিয়ে হাজির হয় "ফ্রেন্ডস ফর দা পুওর পিপল" স্কুলের পাশের মাঠে। সকালের বৃষ্টিতে ভিজে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জার্সি পরা কালো-কালো ছেলেগুলি ফাসেরটেকের মাঠ কাঁপিয়ে ফেলে মুহুর্মুহু চিৎকারে।
কখনো জার্সি পাওয়ার আনন্দে, কখনো গোল করার উত্তেজনায়, কখনো বা টিভি-ডিভিডি প্লেয়ারের র্যাপিং পেপার খোলার খুশিতে।
---------
উপসংহারঃ
১। দুইজনের ক্যামেরায় ওইদিনের প্রায় ১২ গিগাবাইট ভিডিও ফুটেজ আছে। যেগুলা নিয়ে একটা ছোট ভিডিও রেডি করার কথা। দায়িত্ব যাকে দেয়া হয়েছে, সে মহা ফাঁকিবাজ, এখনো কিছুই করে নাই। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম রাজীব হাসান চৌধুরী। উনি কথা দিয়েছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভিডিওটা কমপ্লিট হবে। এবং সেটা Ogilvy Bangladeshএর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে আপলোড করা হবে।
২। কিছু ছবি অফিসের ফেইসবুক পেইজ থেকে দু'এক দিনের মধ্যেই আপলোড করা হবে। ওখান থেকে বাচ্চাদের খুশির ছবি দেখে নিতে পারেন।
৩। আমার অফিসটা আর অফিসের মানুষগুলা আসলেই অনেক জোশ। এত তাড়াতাড়ি জায়গাটাকে ভাল লাগতে শুরু করবো, এক্সপেক্ট করি নাই।
আজকে ওই ভিডিওটা করার পিছনের একটা সুন্দর গল্প বলি।
আমরা হঠাৎ করেই ঠিক করি অফিসের ফুটবল নিয়ে পাগলামি নিয়ে একটা ভিডিও করে ফেলার। ভিডিওটা কেমন হবে, কি কি থাকবে এসব নিয়ে যখন প্ল্যান করতে বসেছি, আমার কলিগ রাজীব একটা জোশ আইডিয়া দিল।
"ভাই, পাগলামিটা শুধু অফিসের মধ্যে আটকে রাখতে ইচ্ছা করছে না। আমরা কি এই উসিলায় কিছু মানুষের মধ্যে খুশি ছড়িয়ে দিতে পারি না?"
---------
যেই ভাবা, সেই কাজ।
ভিডিওটা করার সময় শুরু হল অফিসের ভিতর চাঁদাবাজি। কোন নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট নাই, যে যা পারে তাই দিবে। আমাদের এক্সপেকটেশন খুব বেশি কিছু না। রাজীবের প্ল্যান হল, যা টাকা উঠবে তা দিয়ে কিছু বল আর জার্সি কিনে এমন কিছু বাচ্চাদের দিব, যারা এটুকু পেয়েই অনেক খুশি হবে।
--------
ঢাকা শহরে ফাসেরটেক বলে একটা জায়গা আছে, জানেন? আমিও আগে জানতাম না।
এই ফাসেরটেকে ডিনো হালদার নামে এক ভদ্রলোক সুবিধাবঞ্চিত বাচ্চাদের জন্যে একটা স্কুল চালান। ডিনো পেশায় একজন দর্জি। খুব ছোট করে শুরু হলেও স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১৮০ জন। ছাত্রছাত্রীরা এখানে বিনা পয়সাতে পড়ে। ডিনো তার পরিচিত মানুষজনের কাছ থেকে টুকটাক সাহায্য নিয়ে আর নিজের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে স্কুলটাকে চালিয়ে যাচ্ছে।
--------
আমরা সিদ্ধান্ত নেই এই স্কুলের বাচ্চাদের একটু হলেও খুশি করবো। ওদের সাথে যোগাযোগ হল, ওরা রাজি হল। পুরা আরেঞ্জমেনটের দায়িত্ব দেয়া হল আমার আরেক কলিগ রাব্বি'কে।
রাব্বি আর তার দল কিভাবে কিভাবে যেন ম্যাজিক দেখিয়ে দিল। আমাকে ওদের প্ল্যান শেয়ার করল।
"ভাইয়া, প্ল্যান ইজ, আমরা ওদের স্কুলে যাব। বাচ্চাদের মধ্যে একটা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ হবে। আমরা বল, জার্সি, খাবারদাবার নিয়ে যাব। স্কুলের পাশে একটা মাঠ আছে। ওইটা সাজাব। খেলা শেষে বল, জার্সি সব ওদের দিয়ে আসব।"
তারপর একটা হাসি দিয়ে বলল -
"আরও একটা সারপ্রাইজ আছে। ওদের জন্য একটা টিভি আর একটা ডিভিডি প্লেয়ার কিনে ফেলছি। ওগুলাও ওদের স্কুলে গিফট করে আসবো। ওরাও তাহলে ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে পারবে।"
আমি তো পুরাই হব্দ।
"এতো টাকা পাইলা কই?"
"ভাই, চিন্তা কইরেন না। চুরি-ডাকাতি করি নাই। অফিসের পোলাপান'রে হালকা ছিল দিসি। ওতেই টাকা উঠে গেসে। আর এতে কেউ রাগও করে নাই।"
----------
গত ২৮ জুন, শনিবার, অফিস ছুটির দিনে, আমাদের ১৫/২০ জনের একটা গ্রুপ মাল-সামান নিয়ে হাজির হয় "ফ্রেন্ডস ফর দা পুওর পিপল" স্কুলের পাশের মাঠে। সকালের বৃষ্টিতে ভিজে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জার্সি পরা কালো-কালো ছেলেগুলি ফাসেরটেকের মাঠ কাঁপিয়ে ফেলে মুহুর্মুহু চিৎকারে।
কখনো জার্সি পাওয়ার আনন্দে, কখনো গোল করার উত্তেজনায়, কখনো বা টিভি-ডিভিডি প্লেয়ারের র্যাপিং পেপার খোলার খুশিতে।
---------
উপসংহারঃ
১। দুইজনের ক্যামেরায় ওইদিনের প্রায় ১২ গিগাবাইট ভিডিও ফুটেজ আছে। যেগুলা নিয়ে একটা ছোট ভিডিও রেডি করার কথা। দায়িত্ব যাকে দেয়া হয়েছে, সে মহা ফাঁকিবাজ, এখনো কিছুই করে নাই। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম রাজীব হাসান চৌধুরী। উনি কথা দিয়েছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভিডিওটা কমপ্লিট হবে। এবং সেটা Ogilvy Bangladeshএর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে আপলোড করা হবে।
২। কিছু ছবি অফিসের ফেইসবুক পেইজ থেকে দু'এক দিনের মধ্যেই আপলোড করা হবে। ওখান থেকে বাচ্চাদের খুশির ছবি দেখে নিতে পারেন।
৩। আমার অফিসটা আর অফিসের মানুষগুলা আসলেই অনেক জোশ। এত তাড়াতাড়ি জায়গাটাকে ভাল লাগতে শুরু করবো, এক্সপেক্ট করি নাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন