বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

"বাবা, গাড়ির নাম্বারগুলা এমন হয় কেন?"

জয়ীকে নিয়ে ট্রাফিক সিগনালে বসে আছি।
"বাবা, গাড়ির নাম্বারগুলা এমন হয় কেন?"
"কেমন?"
"এই যে, ঢাকা গ ২৩-১৭৫৯ বা ঢাকা গ ১৯-৮৪৭৫"
"এটাই নিয়ম মা। তোদের যেমন স্কুলে রোল নাম্বার থাকে, এগুলাও তেমন গাড়ির রোল নাম্বার। প্রতিটা যানবাহন একটা নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে।"
"কিন্তু, আমাদের রোল নাম্বারে তো কোন বর্ণ থাকে না। যেমন আমার রোল ৯। গ-৯ তো না।"
"বর্ণগুলা কোড মামনি। গাড়ি যেহেতু গ দিয়ে শুরু, তাই দেখবি সব গাড়ির শুরুতে গ।"
------
আমার এই নিষ্পাপ ব্যাখ্যার রিঅ্যাকশন যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা কি আমি ঘুণাক্ষরেও টের পেয়েছিলাম?
-------
তারপর থেকে ... আমার মেয়ে ঠোঁটের কোণে ফিচেল হাসি নিয়ে যখন তখন আমাকে হাজারও প্রশ্নবাণে চুবিয়ে মারছে।
"বাবা, জানো, আমার একটা ফ্রেন্ড চাইক্রোবাসে করে স্কুলে আসে।"
"বাবা, আমি খেয়াল করে দেখলাম বড় গাড়িগুলির নাম্বার গ দিয়ে শুরু হয় না। ঘ দিয়ে হয়। কারণটা কি জানো? আমি জানি। কারণ হল ... এগুলা যেহেতু বড় গাড়ি, তাই এগুলাকে ঘাড়ি বলে। গ'এর থেকে ঘ বড় না? ছোট কুকুর গেউ গেউ করে ডাকে, বড় কুকুর ঘেউ ঘেউ করে। বাবা, আমরা একটা ঘাড়ি কিনতে পারি না?"
"বাবা, আমরা কিন্তু একটা জিনিসকে ভুলভাবে উচ্চারণ করি। জিনিসটা কিন্তু আসলে থিএনজি, নট সিএনজি। আমি খেয়াল করলাম সব থিএনজির নাম্বার থ দিয়ে শুরু।"
"বুঝলা বাবা, অনেক রিসার্চ করে দেখলাম, মটর সাইকেল কয়েক রকমের আছে। যেগুলা ছোট ওগুলাকে বলে হটরসাইকেল, ওগুলা হ দিয়ে শুরু। বড়গুলা লটরসাইকেল, কারণ, ওগুলা ল দিয়ে শুরু।"
-----
তার রিসার্চ এখনও চলছে। যেদিন বাংলাদেশের সব রকম যানবাহনের কোড'এর শানেনযুল উদ্ধার করা শেষ হবে, ইনশাল্লাহ সেদিন তার এই খেলা বন্ধ হবে।
ততদিনে আমার মাথার শেষ চুলটা অবশিষ্ট থাকলে হয়।


October 17, 2014

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন