শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

বুড়িগঙ্গা

বাসায় রঙের কাজ হচ্ছে, কিচেন-বাথরুমে ফিটিংস'এর কাজ চলছে। পুরা বাসা ধুলার রাজত্ব; ঠুক-ঠাক-ঢ্যাং-ঢ্যাং শব্দে অস্থির অবস্থা। এর মধ্যে আবার মাঝে মাঝে কারেন্ট থাকে না। জলবায়ু যতটা না গরম, বৌএর মেজাজ তার চাইতে মিনিমাম ১০ ডিগ্রী বেশি হট। এই ঘোর বিপর্যয়ের সময় যখন ম্যাডামকে জানালাম যে বাসার ময়লা সাফ করার কাজে আমাকে পাবা না, আমি যাচ্ছি বুড়িগঙ্গা সাফ করতে - ..... বাকিটা বুঝিয়া লন।
...
...
...
...
...

ঘোড়ার আন্ডা বুঝছেন। আমার বউ ইস্পেশাল; এইসব কাজে কখনো আজাইরা টেনশন দেয়না। বরং আফসোস করে, সে নিজেও কেন যেতে পারল না। যাই হোক, গতকাল দিনের শুরুটা খুব সুন্দর হলো, স্মাইল ফাউন্ডেশন'এর অসাধারণ ছেলেমেয়েগুলোর উসিলায়। খুব অবাক এবং খুশি হয়েছি যখন দেখলাম আমরাই বাংলাদেশের পেইজ'এর অনেক মেম্বার নদীর পারে হাজির হয়েছে - এই পাগলামিতে অংশ নিতে। দুই সপ্তাহ বয়সের একটা প্রোগ্রামের প্রতি মানুষের এমন বিশ্বাস দেখে আসলেই অভিভূত হয়েছি। আসলেই।

শ'খানেক ছেলেমেয়ে আজকে একটা ছোট নমুনা দেখালো। আমি অন্তত এটা থেকে এই শিক্ষাটাই নিতে চাই - এক হতে পারলে শুধু বুড়িগঙ্গা কেন; গোটা দেশটাকেই আবর্জনামুক্ত করে ফেলতে পারব আমরা।

দেশটা তো আমাদেরই, তাই না?

আমরাই তো বাংলাদেশ।

[স্মাইল ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ অন্য কারোর অপেক্ষায় না থেকে নিজেরাই বুড়িগঙ্গা পরিষ্কারে নেমে পরার জন্য। বউ'কে ধন্যবাদ, আমার অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজে নিজেই ধুলাবালিময় ঘরটাকে পরিষ্কার করে বেহেশত বানিয়ে রাখার জন্য।]

রামু

গতবছর এই সময়টাতে সোশাল মিডিয়ার সাথে আমার নতুন করে পরিচয় হয়। সত্যি কথা বলতে, ফেইসবুক'এর ক্ষমতা তখনি আমি প্রথমবার অনুধাবন করি। গত বছরের ঠিক এই দিনে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা আমাদের ভীষণভাবে নাড়া দেয়। রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর যে বর্বরচিত হামলাটা হয়, মানুষ হিসেবে অসম্ভব লজ্জিত বোধ করতে থাকি। আমরা ছোট একটা বিজ্ঞাপনী সংস্থার মানুষ, কতটুকুই বা ক্ষমতা আমাদের! ঝোঁকের বসেই হঠাত করেই সিদ্ধান্ত ফেলি, যতটুকু ক্ষমতা আছে ততটুকু দিয়েই কিছু একটা করে ফেলার। একদিনের মধ্যে তৈরী হয় একটা ভিডিও। অফিসের ক্যামেরা দিয়ে অফিসেই শুটিং, আমরাই মডেল, আমরাই কামেরাম্যান, আমরাই এডিটর। ক্লায়েন্ট মিটিং শেষ করে তৌফিক ভাই হয়ে গেলেন মিউজিক ডিরেক্টর। ছোট একটা আপিল ছিল সবার কাছে, ৮ অক্টোবর আমরা এই হামলার প্রতি নিন্দা জানাতে আমাদের ফেইসবুক প্রোফাইল ফটো কালো করে ফেলবো। 

ভিডিওটা ফেইসবুক'এ আপলোড হয়; অন্যরকম সাড়া পেতে থাকি। যাদের চিনি না, জানি না, তারাও ভিডিও শেয়ার করতে থাকে। হাজারের উপর শেয়ার হয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে। নতুন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়, আবার চেনা কিছু মানুষেরও নতুন রূপ দেখতে পাই। রিন্তু আর তার দলবল মিলে রামুর জন্য তখন ত্রাণ যোগার করছে। সাথে জাভেদ কায়সার, রাতুল, রুশো আরো অনেকে। সে কি এনার্জি তাদের! বিশ্বজিত বড়ুয়ার সাথে পরিচয় হয় - বিশাল বড় একটা মন তার; আমাদের কাছে টেনে নিতে তার সময় লাগেনি এতটুকুও। পরিচয় হয় আরিফ আর হোসাইন, কামরুন্নাহার সুমি, ওয়াইল্ডচাইল্ড রেমাইনস'এর সাথে। ছোট একটা ইনিশিয়েটিভ'কে বিশাল আকার দিতে এগিয়ে আসে এবিসি রেডিও, রেডিও ফুর্তি। আসে মেকানিক্স, দৃক'এর মত কিছু রক ব্যান্ড। হাজার বিশেক মানুষ ৮ অক্টোবর তাদের প্রোফাইল পিকচার কালো করে ফেলে। অনেকেই নতুন করে ভাবতে শুরু করে রামু'কে নিয়ে। প্রচুর ত্রাণ আসতে থাকে, অফিসের একটা ঘর ছেড়ে দেয়া হয়, মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত শুধু মনুষ্যত্বের জয়গান। আমাদের বস্তা বস্তা লজ্জা আর অপরাধবোধ নিয়ে রিনতুর দল রওনা দেয় রামুর উদ্দেশ্যে। ফিরে আসে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে, ভালবাসায় সিক্ত হয়ে। 

বছর পেরিয়ে গেল, কিন্তু সেই সময়টা এখনো অনেক জীবন্ত। রামুতে যা ঘটেছিল, তা যেন আর কখনো না ঘটে। ফেইসবুক অনেক কাজের একটা জায়গা। আমাদের দেশে যত সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধানেই যেন ফেইসবুকের ব্যবহার হয়। নতুন কোনো রামুর লজ্জা কাটাতে নয়। 

বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের ডোনার প্রয়োজন। আরো অনেক।

নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের ডোনার প্রয়োজন। আরো অনেক।

প্রতিদিনই রক্তের চাহিদা বাড়ছে। চেষ্টার ত্রুটি করছে না কেউ। তারপরও কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। বিশেষ করে নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের ডোনার লিস্ট শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্লিজ আপনারা এগিয়ে আসুন। 

আমরাই বাংলাদেশ পেইজে অনেকে মেসেজ করে জানতে চাইছেন, কিভাবে আপনারা আমাদের কাজে যোগ দিতে পারেন। বেশ কয়েকটা উপায় বলে দিচ্ছি, যেগুলো শুধুই রক্ত সম্পর্কিত। 

১। আপনি নিজে প্রথমে ডোনার হিসেবে রেজিস্টার করুন। অন্যদেরও উত্সাহিত করুন।  পেইজে এখন মেম্বার ৩৭,০০০, ডাটাবেসে ৪/৫ হাজারের বেশি না। হিসাব মিলছে না। 

২। পোস্টটি শুধুমাত্র দেখে বা শুধু লাইক দিয়ে দায়িত্ব শেষ মনে করবেন না। আর কিছু না করতে পারলে অন্তত শেয়ার করুন।

৩।  আপনার আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব-পাড়া-প্রতিবেশীদের রক্তের গ্রুপ নিয়ে একটা ডাটাবেস তৈরী করুন। সেই ডাটাবেস আমাদের দেয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। শুধু আপনার নাম, আপনার কন্টাক্ট নম্বর, আপনার ডাটাবেসটি কোন এলাকার এবং সে ডাটাবেস'এ কোন গ্রুপের কতজন আছে, আমাদের জানিয়ে রাখুন। আপনার এলাকার কাছাকাছি কোনো রক্তের প্রয়োজনে যেন আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি। ভেবে দেখুন ১,০০০ জন মানুষ যদি ৫০ জন মানুষকে নিয়েও একটা ডাটাবেস তৈরী করতে পারেন, ৫০,০০০ ডোনার কিন্তু রেডি করে ফেলতে পারি আমরা!

৪। শুধু নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত খুঁজছি বলে ভাববেন না, পসিটিভ গ্রুপের রক্ত আমাদের অনেক যোগার হয়ে গেছে। পসিটিভ গ্রুপের রক্তের ডোনার'ও অনেক প্রয়োজন। অনেকে ভাবে কমন গ্রুপের রক্ত লাগলে কেউ না কেউ নিশ্চয়ই ডোনেট করবে, সবাই যদি "কেউ না কেউ"এর কথা ভাবে, তাহলে রুগী রক্ত পাবে কিভাবে। 

৫। ফেসবুক এপ্লিকেশন'এর লিংকটা আবার দিয়ে দিলাম। যদি ওখানে ডাটা এন্ট্রি করতে সমস্যা হয়, প্লিজ হাল ছেড়ে দেবেন না। আমরাই বাংলাদেশ পেইজে আপনার তথ্যগুলো ইনবক্স করে দিন, আমরা ডাটা এন্ট্রি করে নিব। দয়া করে কমেন্টের মাধ্যমে তথ্য দেবেন না। নিম্নলিখিত তথ্যগুলো পেলেই আমরা আপনাকে ডোনার হিসেবে রেজিস্টার করে নিতে পারব। 

- নাম 
- রক্তের গ্রুপ 
- জেলা 
- এলাকা/থানা 
- ঠিকানা 
- ফোন/মোবাইল নম্বর 
- শেষ কবে রক্ত দিয়েছেন সেই তারিখ (যদি আগে না দিয়ে থাকেন, তাহলে কিছু না লিখলেও চলবে) 

অনুরোধ করছি, পোস্টটি শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আজকে অনেকে ডোনার হিসেবে রেজিস্টার করতে এগিয়ে আসবেন। দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ট্রিপল প্লে

<...> ট্রিপল প্লে। পরপর ৩টি দারুন গান! একটা বাংলা, একটা ইংলিশ, একটা হিন্দি! কি চমত্কার। প্রশ্ন না করেও যেন রেডিও-ওয়ালা/স্পন্সরদের উত্তর শুনতে পাই কানে কানে, "লোল ভাইয়া, কি যে বলেন না আপনি! সার্ভে করে দেখা গেছে বাংলাদেশীরা হিন্দি গানই বেশি প্রেফার করে, ইউ নো হাউ বাংলাদেশীস আর।"

জ্বি ভাইয়া, সার্ভে করে এটাও দেখা গেছে বেশির ভাগ পুরুষের কাছেই নিজের বউ'এর থেকে অন্যের বৌকেই বেশি সুন্দর লাগে। দুঃখের কথা হলো আমাদের বৌগুলা আপনাদের মত এত উদার না! মাঝে মাঝে এদিক-ওদিক তাকাতে দিলেও ট্রিপল প্লে'র গন্ধ পেলে এক থাবড়ায় ঘাড় থেকে ভূত নামিয়ে আনতে তারা ভীষণ সিদ্ধহস্ত। ইউ নো হাউ বাংলাদেশী বউ'স আর 

অল্প-স্বল্প বাজা না বাবা, এক্কেরে মাইক্ষা ফেলানোর দরকারটা কি?
 

প্রমানসহ সব কিছু আপলোড করে দিব

কিক-অফ গ্রুপের সাথে কাজ করতে গিয়ে অনিচ্ছা-সত্বেও ফাসেবুকের কিছু অশ্লীল পেইজ ঘেঁটে দেখতে হয়। সত্যি বলছি ভীষণ লজ্জা পেয়েছি মানুষের এত নোংরা একটা রূপ দেখতে পেয়ে। বিকৃত মানসিকতার একটা সীমা থাকে, কখনো কখনো কিছু কমেন্ট পরে রাতে ঘুমাতে কষ্ট হয়েচ্ছে আমার। আরো অবাক হয়েছি, এবং ব্যাপারটা এখনো আমার কাছে একটা প্রশ্ন যে, মানুষ কিভাবে সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে এই কমেন্টগুলো করতে পারে? একজন যখন এসব কমেন্ট করে, তার ফেইসবুক ফ্রেন্ডরা তো নিশ্চয়ই তা দেখতে পায়! সব ফ্রেন্ডরাই কি তবে একই রকম? নাকি সব আইডি'ই ফেইক? জবাবটা কারো জানা থাকলে জানাবেন। 

একটু গভীরে গিয়ে জানতে পারি, এই পেইজগুলো খোলার মূল উদ্দেশ্যটা আসলে কি। আমার মনে হয় সবার এটা জানা উচিত। এই পেইজগুলি নিয়মিত অশ্লীল ছবি, গল্প ইত্যাদি পোস্ট করতে থাকে "লাইক" বাড়ানোর জন্য। সবসময় যে অশ্লীল ছবিই তারা পোস্ট করে তা কিন্তু না, যে কারোর ফেইসবুক থেকে পাবলিক করে রাখা ছবি থেকে যে কোনো ছবি কপি করে সেটাও আপলোড করে দিতে হাত কাঁপে না তাদের; সাথে দিয়ে দেয় মনগড়া একটা গল্প - যা কিনা একদমই মিথ্যা। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে বিকৃত মানসিকতার মানুষের অভাব নাই। দ্রুত এদের পেইজে লাইক-সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারপর শুরু হয় ব্যবসা। কি ব্যবসা শুনবেন? ধরুন কোনো একটা কোম্পানি তাদের ফেইসবুক পেইজে ভিজিটর বাড়াতে চায়। তখন তারা ব্যবহার করে এইসব অশ্লীল পেইজ্গুলিকে। এরা টাকার বিনিময়ে তাদের পেইজে একটা অশ্লীল পোস্ট দেয়; কিন্তু সম্পূর্ণ পোস্ট'তা দেয় না। অর্ধেক পোস্ট পরার পর একটা লিংক আসে যেখানে লেখা থাকে "সি মোর"; কৌতুহল নিবারণ করতে না পেরে সেখানে ক্লিক করলেই আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে সেই কোম্পানির ফেইসবুক পেইজে বা তাদের ওয়েবসাইটে। তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর বারে, টাকা পেয়ে যায় অশ্লীল পেইজের অ্যাডমিন। শুরুমাত্র কৌতুহল সামলাতে না পারার কারণে আপনি নিজের অজান্তেই জড়িয়ে যান একটা অপরাধের সাথে। যেন তেন অপরাধ কিন্তু না, আপনার এই "নিষ্পাপ" কর্মের ফলে হয়ত একজন নিরপরাধ মেয়ে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করছে। 

যদি ধরে নেই এইসব অশ্লীল পেইজের অ্যাডমিনরা খুব খারাপ; তাহলে আমরা কি? এবার আরো দু'টি তথ্য দেই। 

১। ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে নামকরা কয়েকটি ব্র্যান্ডকে উল্লিখিত উপায়ে ফেইসবুক পেইজ এবং ওয়েবসাইটে লাইক বাড়াতে দেখেছি আমরা। নাম প্রকাশ করতে পারতাম, কিন্তু অনেক ভেবে দেখলাম, ব্র্যান্ডের যারা মাথা তারা হয়ত ব্যাপারটা জানেনই না। জুনিয়র কোনো এক্সিকিউটিভ কে হয়ত দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফাসেবুকে লাইক বাড়াতে, সে সোজা উপায়ে না পেরে, বাঁকা উপায় বেছে নিয়েছে। আমার লিস্টে দুই কোম্পানির মাথারাই আছেন। একটু খবর নিন, আপনার পেইজের লাইকগুলি অরিজিনাল নাকি ফেইক। যদি লাইক গুলি টাকা দিয়ে কেনা হয়ে থাকে, যে কিনেছে তাকে সাবধান করে দিন।। কিক-অফ গ্রুপ'কে বলেছি নজর রাখতে। পরেও যদি একই কাজ হতে দেখি, প্রমানসহ সব কিছু আপলোড করে দিব। 

২। এইটা আরো মজার। প্রতিটা পেইজে গিয়েই দেখেছি, আমার ফ্রেন্ডলিস্টের কেউ না কেউ অলরেডি সেই পেইজে লাইক দিয়ে বসে আছে। কি ভেবে দিয়েছে তা তো জানি না, আমি কিন্তু সবক'টার স্ক্রীনশট নিয়ে রেখেছি। আবারও বেনিফিট অফ ডাউট দিলাম - হয়ত জানতেন না যে খারাপ কাজ করছেন, তাই লাইক দিয়েছেন। এতবড় একটা লেখা লিখলাম, এখন তো জানলেন কত বড় খারাপ একটা কাজের সাথে জড়িয়ে গেছেন সামান্য একটা লাইক দিয়ে। ৫ মিনিট লাগবে, আপনার লাইক দেয়া পেইজগুলো একটু চেক দেখুন। যদি আপত্তিকর কিছু খুঁজে পান, আনলাইক করে দিন অথবা রিপোর্ট করুন। আর স্ক্রীনশটের কপি পেতে চাইলে আমাকে ইনবক্স করতে পারেন। 

দেখেন ভাই, ভুল মানুষই করে। ভুল শুধরে নেয়ার মধ্যে লজ্জার কিছু নাই। কিন্তু সবকিছু জানার পরও যদি আমরা তা গায়ে না মাখি, ভুলটা তখন আর ভুল থাকে না; অপরাধ হয়ে যায়। জানি, লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেছে। একটা নিরপরাধ মেয়ের আত্মহত্যার চিন্তা করাটাও কিন্তু অনেক বড় ব্যাপার। সবাই জানলে হয়ত এই খারাপ কাজটা বন্ধ হবে। তাই অন্যদেরও জানতে সাহায্য করুন। 

আপনি-আমি মিলেই তো এই দেশ, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ।
- রাজীব হাসান চৌধুরী

শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ডোনার ডাটাবেস'এ কতজন হলো সেই সংখ্যা গুনি।

আমরাই বাংলাদেশ'এর প্রথম এপিসোডের পর থেকে আমরা অদ্ভূত সুন্দর একটা সময় পার করছি। অসাধারণ কিছু ছেলে-মেয়ে অক্লান্ত চেষ্টা করছে চেনা-অচেনা মানুষের জন্য রক্ত যোগার করতে। তাদের সাথে একে একে এসে যোগ দিচ্ছে আরো কত-কত গ্রুপ। কারো মধ্যে কোনো হিংসামী নাই, দলাদলি নাই, ঝগড়া-বিবাদ নাই। "ভাইয়া, রক্ত লাগলে আমাদের জানাবেন, আমাদের কাছে ১,০০০ ডোনারের ডাটাবেস আছে। আমাদের লাগলেও আপনাদের জানাবো।" কি অসাধারণ সুন্দর একটা বাংলাদেশ। যদিও জানি, বহুদূর যেতে হবে, এখনো পথের অনেক রয়েছে বাকি। তবে আশেপাশের সবুজ ছেলেমেয়েগুলির সাহস দেখে ভরসা পাচ্ছি; ওরা ভয় পাবার বা থেমে যাবার বান্দা না। একদমই না।

আমি আর Arif ভাই এখন আর ফেইসবুক'এ স্টেটাস'এর লাইক গুনি না। এখন আমরা ডোনার ডাটাবেস'এ কতজন হলো সেই সংখ্যা গুনি। ডানে-বা'এ তাকালে রক্ত নিয়ে ক'জন কাজ করছে - সেই সংখ্যা গুনি। আপনারা যখনি কেউ ডোনার হিসেবে রেজিস্টার করেন, ডাটবেস'এর কাউন্টার'টায় একটা ডিজিট বেড়ে যায়; অদ্ভূত এক তৃপ্তি লাগে, যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।

ছোট করেই নাহয় হলো, কিন্তু শুরুটাতো হলো। দেশটা তো আমাদের'ই, তাই না?

আমরাই তো বাংলাদেশ।

এখনো অনেক ডোনার প্রয়োজন। লিংকটা তাই আবার শেয়ার করলাম।

বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

জং'টা তো ছাড়াই আগে

আমরাই বাংলাদেশ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা-লেখালেখি-মাতামাতি দেখতে পাচ্ছি। একটা অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই তার ফেইসবুক পেইজে ২০ হাজারের বেশি লাইক ঠিক কি ইঙ্গিত দিচ্ছে, সেটা নিয়ে আমি একটু চিন্তিত। কিছুদিন আগে একটা স্টেটাস দিয়েছিলাম, কিং সলোমন'এর একটা বিখ্যাত উক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে। কোনকিছু চাওয়ার আগে যেন আমরা বুঝে নিতে পারি, যা চাইছি তা কি আসলে সম্ভব? নাকি অসম্ভব। আমি যতটুকু বুঝি, আমাদের ইচ্ছেশক্তির নানা জায়গায় জং ধরে আছে; একদিন-দু'দিনের জং না - মোটামুটি মোক্ষম জং। কাজের কথা শুনলে তাই আমরা এদিক-ওদিক থেকে অন্য ইস্যু ধরে এনে ফোকাস সরিয়ে দিতে চাই; অথবা সমালোচনার ঝড় তুলে কাজটাই বন্ধ করে দেই। আমার ভয়টা সেই জায়গাতেই। শুরুতেই কঠিন কঠিন কাজ হাতে নিলে না মুখ থুবড়ে পড়তে হয়। ভাই, আমরাই বাংলাদেশ কোনো টক্ শো না; এখানে আমরা অ-সমাধান-যোগ্য বিষয়াদি নিয়ে চা'এর টেবিলে ঝড় তুলব না। আমরা শুধুমাত্র সেই সমস্যাগুলো নিয়েই কথা বলব, যেগুলোর সমাধান আমরা আমরাই করতে পারি; কখনো হয়ত ১,০০০ জনকে একসাথে হতে হবে, আবার কখনো হয়ত ১০,০০,০০০ জনকে। আর এই সমস্যাগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের সমস্যা না, বা এই সমস্যাগুলি দূর করতে গিয়ে আপনি কোনো দলের ট্যাগ'ও খাবেন না। এমনও না, কোনো মাস্তান-বাহিনী আপনাকে চিপায় নিয়ে উত্তম-মধ্যম দিয়ে দিবে। 

"আমরাই বাংলাদেশ" নামটা কিন্তু খুবই রিস্কি একটা নাম। নামটা চরম তাচ্ছিল্য নিয়ে যেমন বলা যায়, বুক-ভর্তি গর্ব নিয়েও বলা যায়। যেসব সমস্যা বা উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পরিকল্পনা আমরা করছি, আমরাই বাংলাদেশ'এর একজন হিসেবে এটুকুই বলতে পারি, সবাইকে যদি পাশে না পাই, এই আমিই একসময় পরাজয় মেনে নিয়ে তাচ্ছিল্য নিয়ে বলব - হ্যা, এই হলাম আমরা। আর আমরাই বাংলাদেশ। 

আমাদের লক্ষ্য একটাই - ছোটো করেই নাহয় হোক, শুরুটা তো হোক। জং'টা তো ছাড়াই আগে। দেশটা তো আমাদেরই, তাইনা? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

কিং সলোমন


কাল রাতে আড্ডা দিচ্ছিলাম ইফতেখারের বাসায়। খুব সুন্দর একটা কথা বলল ও। মাথায় ঢুকে গেছে। তাই শেয়ার করছি।

আমাদের নবী সোলায়মান (আঃ) (কিং সলোমন)-এর একটা বিখ্যাত উক্তি আছে। মানুষের জন্য আল্লাহ'র কাছে তিনি ৩টা ক্ষমতা চাইতেন। 

১। "যা বদলানোর ক্ষমতা আমার আছে, আমাকে যেন তা বদলানোর শক্তি ও সাহস দেয়া হয়।" 
২। "যা বদলানোর ক্ষমতা আমার নাই, তা মেনে নেয়ার মত ধৈর্য আর সহনশীলতা যেন আমাকে দেয়া হয়।"
৩। "সবশেষে, কোনটা আমি বদলাতে পারব আর কোনটা পারব না, সেটা বোঝার মত বুদ্ধি যেন আমাকে দেয়া হয়।" 

কোনো কিছু চাওয়ার আগে এতটুকু বুঝে নিতে পারলে হয়ত এত চিত্কার, অসন্তোষ, ভুল-বোঝাবুঝি আর সমালোচনার ফুলঝুরি বন্ধ হয়ে যেত। 

[ইফতেখার, কোথাও ভুল হলে ঠিক করে দিস]

রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

সরি ভাই


বললাম: সরি ভাই 
ভাই বলল: আর সরাইয়েন না, অনেক সরাইসেন। সরাইতে সরাইতে তো দৈর্ঘে-প্রস্থে সমান হইয়া গেসেন। 

["স"-এর উচ্চারণ এখানে "সাইকেল"এর "স"এর মত হবে]

শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

বিশ্বাস - সৃষ্টিকর্তার অসাধারণ এক সৃষ্টি।


আমার কখনো একটা নায়ক-ওয়ালা সিনেমা ভালো লাগত না। এক অমিতাভ বচ্চন ইয়া ভিশুম ইয়া ঢিসুম করে একশো গুন্ডাকে মেরে কাইত করে ফেলছে, সেটা দেখে আমি কখনই সেরকম এক্সাইটেড হতাম না। আমার ভালো লাগতো ২/৩টা নায়ক'ওয়ালা সিনেমা, যেখানে বন্ধুত্ব থাকবে বিশ্বাস থাকবে। বইয়ের বেলাতেও তাই। কিশোর পাশার বুদ্ধি, রবিন মিলফোর্ড'এর বই'এর প্রতি প্রেম আর মুসা আমানের শক্তি - তিন জন মিলে তিন গোয়েন্দা। সে কি মজা! উইন্ড-ওয়াটার-আর্থ-ফায়ার মিলে ক্যাপ্টেন প্লানেট - কি অসাধারণ কার্টুন। থান্ডারক্যাটস'ই বা বাদ  দিব ক্যানো? লায়েনো, টাইগ্রা, প্যানথ্রা, চিতারা - সবাই মিলেই তো মামরা'কে মারত। বুড়া হওয়ার পর এখন দেখি এভেঞ্জার্স, ফ্যান্টাস্টিক ফোর, এক্স-ম্যান; সেইম ওল্ড ফর্মুলা। কিন্তু আগের মতই এনজয় করি। একেকজনের একেকরকম ক্ষমতা, সব একসাথে হলে বিশাল কিছু হবে - এমনি তো আসলে হওয়া উচিত, তাই না? 

একটু বড় হলাম। সোলো সিঙ্গার'দের গান ভালো লাগলেও ব্যান্ড ফিলোসফির প্রেমে পরে গেলাম। আমি একা হয়ত কিছুই না, কিন্তু ৪ জন মিলে কি পারফরমেন্সটাই না দেখাতাম আমরা! শান্তনু যদি লিড না বাজাত, ঠাকুর আর ফাহিম যদি ব্যাস আর ড্রামস না বাজাত, আমি একা একা কি ঘোড়ার ডিম পারতাম? ডিপার্টমেন্ট'এর ক্রিকেট টিমের কথা বলি এবার। ঐপারে তারেক-আরজু-জাকি-সরোজরা ধরে খেলত বলেই তো আমি হাতখুলে মারতে পারতাম! কোনো ম্যাচে অল্প রানে অলআউট হয়ে গেলেও জানতাম, শাকিল-মাহী'দের বোলিং তো এখনো বাকি আছেই। বিশ্বাস - সৃষ্টিকর্তার অসাধারণ এক সৃষ্টি।  

একা কিছু হয় না রে ভাই। ডাইনে-বামে মানুষ লাগে; হোচট খেলে যেন কেউ হাতটা বাড়িয়ে দিতে পারে। দুর্বল হয়ে পড়লে কেউ যেন কাঁধে হাত রেখে শক্তি দিতে পারে। বিশ্বাসই সব, বন্ধুত্বেই সব সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে। একসাথে কিছু করার মজাই আলাদা। আপনি-আমি একা একা কিচ্ছু করতে পারব না এই দুখিনী দেশটার জন্যে; কিন্তু একসাথে হলে?... দেখেন না কি হয়!

দেখবেন নাকি ট্রাই করে একবার? দেশটা তো আমাদেরই, তাই না? 

আমরাই তো বাংলাদেশ। 

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

তুমি কি জয়নুল আবেদিন?


তুমি আর তোমার স্ত্রী, অনেক খুঁজে, বাছ-বিচার করে, পছন্দ করে, একমত হয়ে - তোমাদের সন্তানের নাম রাখলা "কিছু একটা"! সেই নাম আমার পছন্দ হলেই কি, না হলেই কি? আমার অপছন্দ হলে কি তোমরা নাম পাল্টায়া ফেলবা? 

আমার আইডিয়া, আমি লোগো বানানোর মাস্টার, ১০ বছর ধরে গ্রামার মেনে লোগো বানিয়ে আসছি; ক্যামনে তুমি চান্দু এক্সপেক্ট কর যে তোমার পাকনামির কথা শুনে আমি আমার বানানো লোগো চেঞ্জ করে ফেলবো? তুমি কি জয়নুল আবেদিন? নাকি মাইকেল এঞ্জেলো? 

নানুর কবর

এই পৃথিবীটাতে আমার দুইটা প্রিয় জায়গা আছে।

একটা আমার নানুর কবর, বনানী কবরস্থানে। নানু চলে যাওয়ার পর থেকে যখনি মন খারাপ হয়েছে, কবরের পাশে গিয়ে একা বসে থেকেছি। একগাদা কান্না এসে বুকের সব কষ্ট আর খারাপ লাগা ধুয়ে নিয়ে চলে গেছে প্রতিবার। এখন আমি শীত আসার জন্য অপেক্ষা করছি। গত শীতে নানুর কবরে ঘাস জন্মেনি। এবার সুন্দর সবুজ ঘাস হয়েছে। শীতের রাতে ঘন কুয়াশার মধ্যে নানুর পাশে বসে শিশিরমাখা ঘাসে হাত বুলানোর জন্য আমি অস্থির হয়ে অপেক্ষা করছি।

পরের জায়গাটার কথা কালকে বলব।