রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪

পূর্ণযৌবনা মাল্টা

যখন ছোট ছিলাম, ড্রইং রুমে সাজিয়ে রাখার জন্য মেলা থেকে মাটির ফল কিনে নিয়ে আসা হল। কমলা, ডালিম, আম, কলা, আপেল।

মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যায় - মাটির ফলগুলির কোন চেঞ্জ হয় না। পচেও না, নষ্ট'ও হয় না, পোকায়ও ধরে না।

ওদিকে গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে নিয়ে আসলে একদিন পরই কচকচে সবুজ পেয়ারা প্যাতপ্যাতে হলুদ হয়ে যায়।

দেশের বাড়ি থেকে লিচু পাঠানোর ২/৩ দিনের মধ্যেই সব খেয়ে শেষ করে ফেলতে হয়; নাহলে লিচু পচে বিস্বাদ হয়ে যায়। বাজার থেকে আনা কাঁঠাল একদিন রেখে দিলেই বিচি থেকে গাছ গজানো শুরু করে। - কি অন্যায়! কি অন্যায়!

তখন শঙ্কু পড়ি, সেবা প্রকাশনীর সায়েন্স ফিকশন পড়ি। কত মজার মজার বিজ্ঞানের আবিষ্কারের গল্প পড়ি। আর মনে মনে লিস্ট করি, বড় হয়ে কি কি জিনিস আবিষ্কার করবো।

সেই লিস্টের প্রথম দিকেই ছিল, একদিন এমন সিস্টেম আবিষ্কার করবো, যাতে করে দিনের পর দিন ফল রেখে দেয়া যাবে। পচবে না, নষ্ট হবে না, পোকায় ধরবে না।

বড় তো হলাম। কিন্তু আমার কিছুই করা লাগল না।

আল্লাহ্‌র অশেষ "রহমতে" এবং "মানুষের" নিরন্তর অধ্যাবসায়ে কিছু বাঙ্গালী আজ আবিষ্কার করে ফেলেছে ফরমালিনের অবিশ্বাস্য ব্যবহার। ঈদের পরদিন আব্বার জন্য কিনে আনা মাল্টা (নাকি বলা উচিত "মাল"টা?) আজও তরতাজা, ফ্রেশ, টসটসে - পূর্ণযৌবনা!

পচেনি! নষ্ট হয়নি!! পোকায়ও ধরেনি!!!

ফরমালিন দীর্ঘজীবী হোক।

ফল-ফ্রুট দীর্ঘজীবী হোক।

ফরমালিন-যুক্ত ফল-ফ্রুট-মুক্ত থেকে আমরাও দীর্ঘজীবী হই। নাকি?

August 18, 2014

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন