ক্রিকেট!
অনেক দিন আগের কথা। বাংলাদেশের ক্রিকেট তখন এত গরম হয় নাই। আমি একটু বেশি মাত্রায় ক্রিকেট পাগল দেখে এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষজনের সাথে বন্ধুত্ব পাতাতাম। এবং আমার সৌভাগ্য বাংলাদেশের ক্রিকেট'এর বেশ কয়েকজন লিজেন্ডএর সাথে আমার অনেক ভালো বন্ধুত্ব হয়, যে বন্ধুত্ব এখনো অটুট। তাদের সাথে নানান সময়ে অনেক আড্ডা দেয়া হয়েছে, খুটিয়ে খুটিয়ে অনেক কিছু জানতাম আমি তাদের কাছ থেকে, কে কেমনে স্লেজিং করে, কার মেয়ে-বিষয়ক দুর্বলতা বেশি, শেন ওয়ার্ন কে খেলা বেশি কঠিন নাকি মুরালি কে - ইত্যাদি ইত্যাদি। নিচের গল্পগুলো হয়ত সত্যি, নয়তো কল্পনা-প্রসূত, কে কিভাবে নেবেন, তার উপর আমার কোনো কন্ট্রোল নাই। দেশের বড়-বড় সাংবাদিকরাই যদি যা-মন-চায় তা লিখতে পারে, আমি তো "জাস্ট আ ফেইসবুকার".
১। জাতীয় দলে মোটামুটি নতুন একজন, গোটা পাঁচেক ওয়ান ডে মাত্র খেলেছে তখন। গভীর প্রেম চলছে তার একজনের সাথে। ট্রু প্রেম, নো হাঙ্কি-পাঙ্কি। টিমের সবাই এটা জানে, এবং এটা নিয়ে বেশ হাসাহাসি চলে সব সময়, ছোটা-টাইগার খালি লাজুক লাজুক হাসে। ইংল্যান্ড-এ প্রথম টুর, ভেবেছিল ফেরার সময় গার্লফ্রেন্ডের জন্যে দামী একটা গিফট নিয়ে আসবে। কিন্তু খেলা চলাকালীন সময়ে বেশ নামজাদা এক ক্রীড়া-সাংবাদিক ভাই তার কাছে একটা দামী ঘড়ির আবদার করে। দামী মানে টুকটাক দামী না, বেশ দামী। তিনি বোঝান যে এতে করে অনেক "ফায়দা" হবে। ম্যাচ ফির প্রায় পুরোটাই চলে যায় তার ঘড়ি কিনতে। দেশের একটি পত্রিকায় তার গুনগানে ভর্তি একটা বড় আর্টিকেল ছাপা হয়। বাই দা ওয়ে, বান্ধবীর কপালে জুটেছিল একটা সস্তা পারফিউম।
২। আরেকবার শ্রীলংকা সফরে আমাদের একজন স্পিনার অসাধারণ পারফর্ম করেন। কমেন্টেটর'দের মুখে ফেনা। দেশের মোটামুটি সব মিডিয়া তার প্রসংশায় পঞ্চমুখ- শুধু একটি পত্রিকা ছাড়া। আবদার'টা নাকি ছোটো ছিল, মাত্র একটা ৪২" এলসিডি টিভি। স্পিনার ভদ্রলোক একটু ঘাড়-ত্যাড়া টাইপ; সে নাকি বলসিলো - "টিভি তুমার **** দিয়ে ভইরা দিবু নে"
৩। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় পেস বোলার। শেষ ওভার'টা কপাল দোষে খারাপ করে ফেলেন, দল হেরে যায়। হতেই পারে এমন, যে কারো সাথেই হতে পারে। কিন্তু সেই সাংবাদিক ভাই'এর অসামান্য কলমের গাথুনিতে আরেকটু হলে আমার বোলার ভাই'এর কেরিয়ার শেষ হয়ে যাচ্ছিল। হর্সে'স মাউথ থেকে জেনেছি, খেলা শেষে আরেকজন প্লেয়ার'কে দিয়ে বোলার ভাই'কে জানানো হইসিলো, নতুন মডেলের একটা মোবাইল হ্যান্ডসেট নাকি আমাদের সাংবাদিক ভাই'এর খুব লাইক হইসে। পেস বোলার ভাই কি বলসিলো জানেন? "অ'রে কয়া দিস, মোবাইল ফোন অ'র **** দিয়া ভইরা দিমু". (আমাদের টাইগার' ভোকাবুলারি আর ক্রিয়েটিভিটি - দুই জায়গাতেই বড় দুর্বল)
৪। এটি সাংবাদিক ভাইয়ের সফলতার কাহিনী; জাতীয় দলের ৩ জন দুষ্টু প্লেয়ার একবার ৩ মডেল-কন্যার সাথে দুষ্টামি করতে গেল। কিন্তু মডেল কন্যা-গুলি যে ওদের থেকেও বেশি দুষ্টু, এটা ওরা বোঝে নাই। দুষ্টু মেয়েগুলি ভয় দেখালো ওরা মিডিয়া'কে অনেক কিছু বলে দিবে। বীর-বাহাদুর টাইগার ভাই'রা তো পুরাই বিলাই। কি মুশকিলেই না পড়া গেল! কিন্তু মুশকিল আসান হ্যায় না। সেই সাংবাদিক ভাই তার অসীম ক্ষমতাবলে ব্যাপারটা সুরাহা করে দিলেন। বিনিময়ে একটা ৪২" এলসিডি টিভি, আইফোন আর সপরিবারে থাইল্যান্ড যাবার টিকেট উপহার পেয়েছিলেন।
শেষ কথা: কেউ যদি কোনো ভুল করে, সেটার বিচার হোক। কিন্তু কতগুলা নর্দমার কীট সাংবাদিক যখন বেহায়ার মত অতীত ভুলে লুঙ্গি-তুলে উথাল-পাথাল নাচে, মন চায় শালাদের পাছায় কইষা লাত্থি মারি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন