সুখ দিয়ে কখনো কষ্টকে চাপা দেয়া যায় না।
কষ্ট ঠিকই চুইয়ে চুইয়ে বের হয়ে আসে।
-----------
আমার বয়স যখন মাত্র ৪০ দিন, আমার নানা আমাকে কোলবালিশের মত প্যাকেট করে আম্মার বাসা থেকে নিয়ে এসেছিলেন।
ওই যে নিয়ে আসলেন, আর কখনো আমাকে যেতে দিলেন না। আমি নানা-নানু-খালাদের আদরে বড় হতে লাগলাম।
আমার দুই বছর বয়সে নানাভাই মারা যান। নানুই হয়ে ওঠে আমার সব।
৯৬ সালে আমাদের ক্রিসেন্ট রোডের টিনশেড বাসাটা ভেঙ্গে যখন ৬ তলা বিল্ডিং বানানো হচ্ছিল, সে সময় ২ বছরের জন্যে আমি একটা ভাড়া বাসায় আম্মা-আব্বার সাথে ছিলাম। জীবনে ওই দুই বছরই আমার নানুর কাছ থেকে দূরে থাকা। এবং আব্বা-আম্মা'র সাথে প্রথম একসাথে থাকা।
কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও, সত্যি কথাটা হলো, আমার ভালবাসার নিক্তিতে আম্মা কখনই নানুকে পিছনে ফেলতে পারেন নাই।
----------
২০১২'র ২৫শে ডিসেম্বর নানু মারা যান।
আমি প্রচন্ড ধাক্কা খাই, যদিও আমরা প্রস্তুত ছিলাম নানুর মৃত্যুর জন্য। সবাই বলছিল ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই ঠিক হচ্ছিল না।
আমার ছেলে জীয়নের বয়স তখন ৬ মাস। প্রতিটা দিন সে নতুন নতুন জিনিস শিখছে। প্রতিটা নতুন জিনিস সাথে করে নিয়ে আসছে নতুন স্বাদের সুখ। সবাই বললো, সেই সুখের নিচে নানুর চলে যাওয়ার কষ্টটা চাপা দিয়ে দিতে।
আমি অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। জীয়নের হাসিমুখ আমাকে কিছুক্ষণের জন্য সুখ দিলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছিল না।
আমি জীয়নের কাছ থেকে পালিয়ে নানুর কবরের পাশে গিয়ে বসে থাকতাম।
.... সুখ দিয়ে কষ্টকে চাপা দেয়া যায় না।
----------
২০১৪'র জানুয়ারি'তে আম্মা চলে গেলেন।
এই মৃত্যুর জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। আম্মা ছাড়া পৃথিবীটা পুরাপুরি অর্থহীন হয়ে গেল। একা এবং অসহায় আব্বাকে নিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে গেলাম।
এক সময় যে কষ্টকে মনে হচ্ছিল চিরস্থায়ী একটা ক্ষত, সেই নানুকে হারানোর কষ্টটা নিজের অজান্তেই কর্পুরের মত উবে গেল।
নানুর চেহারা মনে করতে গেলে এখন শুধুই আম্মার চেহারা ভেসে ওঠে। নানুর কবরে বসে এখন আমি নানুর সাথে আম্মাকে নিয়েই কথা বলি। অথচ আম্মার কবরে গিয়ে কখনই নানুর কথা হয় না।
----------
আমি আম্মাকে হারানোর কষ্টটা ভুলতে চাই না।
আমি অন্য কোনো সুখ খুঁজে তার নিচে এই কষ্টকে চাপা দিতে চাই না।
কারণ, আমি জেনে গেছি ...
সুখ দিয়ে কখনো কষ্টকে চাপা দেয়া যায় না।
শুধুমাত্র কষ্টের নিচেই কষ্ট চাপা পরে।
কষ্ট ঠিকই চুইয়ে চুইয়ে বের হয়ে আসে।
-----------
আমার বয়স যখন মাত্র ৪০ দিন, আমার নানা আমাকে কোলবালিশের মত প্যাকেট করে আম্মার বাসা থেকে নিয়ে এসেছিলেন।
ওই যে নিয়ে আসলেন, আর কখনো আমাকে যেতে দিলেন না। আমি নানা-নানু-খালাদের আদরে বড় হতে লাগলাম।
আমার দুই বছর বয়সে নানাভাই মারা যান। নানুই হয়ে ওঠে আমার সব।
৯৬ সালে আমাদের ক্রিসেন্ট রোডের টিনশেড বাসাটা ভেঙ্গে যখন ৬ তলা বিল্ডিং বানানো হচ্ছিল, সে সময় ২ বছরের জন্যে আমি একটা ভাড়া বাসায় আম্মা-আব্বার সাথে ছিলাম। জীবনে ওই দুই বছরই আমার নানুর কাছ থেকে দূরে থাকা। এবং আব্বা-আম্মা'র সাথে প্রথম একসাথে থাকা।
কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও, সত্যি কথাটা হলো, আমার ভালবাসার নিক্তিতে আম্মা কখনই নানুকে পিছনে ফেলতে পারেন নাই।
----------
২০১২'র ২৫শে ডিসেম্বর নানু মারা যান।
আমি প্রচন্ড ধাক্কা খাই, যদিও আমরা প্রস্তুত ছিলাম নানুর মৃত্যুর জন্য। সবাই বলছিল ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই ঠিক হচ্ছিল না।
আমার ছেলে জীয়নের বয়স তখন ৬ মাস। প্রতিটা দিন সে নতুন নতুন জিনিস শিখছে। প্রতিটা নতুন জিনিস সাথে করে নিয়ে আসছে নতুন স্বাদের সুখ। সবাই বললো, সেই সুখের নিচে নানুর চলে যাওয়ার কষ্টটা চাপা দিয়ে দিতে।
আমি অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। জীয়নের হাসিমুখ আমাকে কিছুক্ষণের জন্য সুখ দিলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছিল না।
আমি জীয়নের কাছ থেকে পালিয়ে নানুর কবরের পাশে গিয়ে বসে থাকতাম।
.... সুখ দিয়ে কষ্টকে চাপা দেয়া যায় না।
----------
২০১৪'র জানুয়ারি'তে আম্মা চলে গেলেন।
এই মৃত্যুর জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। আম্মা ছাড়া পৃথিবীটা পুরাপুরি অর্থহীন হয়ে গেল। একা এবং অসহায় আব্বাকে নিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে গেলাম।
এক সময় যে কষ্টকে মনে হচ্ছিল চিরস্থায়ী একটা ক্ষত, সেই নানুকে হারানোর কষ্টটা নিজের অজান্তেই কর্পুরের মত উবে গেল।
নানুর চেহারা মনে করতে গেলে এখন শুধুই আম্মার চেহারা ভেসে ওঠে। নানুর কবরে বসে এখন আমি নানুর সাথে আম্মাকে নিয়েই কথা বলি। অথচ আম্মার কবরে গিয়ে কখনই নানুর কথা হয় না।
----------
আমি আম্মাকে হারানোর কষ্টটা ভুলতে চাই না।
আমি অন্য কোনো সুখ খুঁজে তার নিচে এই কষ্টকে চাপা দিতে চাই না।
কারণ, আমি জেনে গেছি ...
সুখ দিয়ে কখনো কষ্টকে চাপা দেয়া যায় না।
শুধুমাত্র কষ্টের নিচেই কষ্ট চাপা পরে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন